×

অর্থনীতি

পোশাক খাতের উদ্যোক্তারা চান ৫ শতাংশ প্রণোদনা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৮ মে ২০১৯, ১০:৪৩ এএম

পোশাক খাতের উদ্যোক্তারা চান ৫ শতাংশ প্রণোদনা
শুধু নতুন বাজার তৈরিতে নয়, সব ধরনের বাজারেই ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে ৫ শতাংশ নগদ সহায়তা দেয়ার দাবি জানিয়েছে তৈরি পোশাক খাত মালিকরা। টাকার অঙ্কে যার পরিমাণ দাঁড়ায় ১১ হাজার ৭২৪ কোটি টাকা। গতকাল সোমবার রাজধানীর গুলশানে হোটেল আমারিতে তিনটি সংগঠন আয়োজিত প্রাক-বাজেট আলোচনা শীর্ষক সংবাদ সম্মেলন এ দাবি জানানো হয়। বিজিএমইএ, বিকেএমইএ ও বিটিএমএ যৌথভাবে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। বিজিএমইএর সভাপতি রুবানা হকের সভাপতিত্বে এ সময় বিজিএমইএর সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ফয়সাল সামাদ, প্রথম সহসভাপতি আব্দুস সালাম, বিকেএমইএ প্রথম সহসভাপতি মনসুর আহমেদ, বিটিএমইএ সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন, এক্সপোর্টাস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সিনিয়র সহসভাপতি মো. হাতেমসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে অন্তর্ভুক্তির জন্য বিজিএমইএ, বিটিএমইএ, বিকেএমই যৌথভাবে দাবি দাওয়া তুলে ধরে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে। বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, তৈরি পোশাক খাত এখন সঙ্কটাপন্ন অবস্থায় রয়েছে। গত এক মাসে ২২টি কারখানা বন্ধ হয়েছে। যেখানে প্রায় সাড়ে ১০ হাজার শ্রমিক চাকরি হারিয়েছে। আমরা ভর্তুকি দাবি করি, প্রণোদনা দাবি করি, তার একটি যৌক্তিক কারণ আছে। পোশাক শিল্প একটি ক্রান্তিকালে এসে পৌঁছে গেছে। অন্তত আগামী ৫ বছরের জন্য যদি এই প্রণোদনা দেয়া হয় তাহলে পোশাক শিল্প ঘুরে দাঁড়াতে পারবে। সব মার্কেটের জন্য যদি শতকরা ৫ ভাগ প্রণোদনা দেয়া হয়, তাহলে যৎসামান্য ১১ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি, এটি একটি বিরাট সংখ্যা নয়। রুবানা বলেন, বর্তমান বাস্তবতা কিন্তু ভিন্ন। আমরা এখন পর্যন্ত গত এক মাসে ২২টি ফ্যাক্টরি বন্ধ করেছি। কারণ তারা বেতন দিতে পারছে না। প্রতিটি মালিকের কষ্ট হচ্ছে। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, গত ৬ বছরে ১২০০ ফ্যাক্টরি বন্ধ হয়ে গেছে। অর্থাৎ প্রতিমাসে ১৭টি। এখন প্রতি মাসে ২০ থেকে ২২টি বন্ধ হচ্ছে। আগের চেয়ে কারখানা বন্ধ হওয়ার প্রবণতা বেড়েছে। পোশাক খাতের তেমন কোনো অগ্রগতি হয়নি জানিয়ে রুবানা হক বলেন, ৫ বছরে ৫ দশমিক ৭০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। আগামী বাজেটে পোশাক শ্রমিকদের গৃহায়ণ, যাতায়াত ও রেশনিং চালু করার জন্য বাজেটে বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে বলেও জানান বিজিএমইএ সভাপতি। এক প্রশ্নের জবাবে বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, ঈদের আগে দুই একটি ফ্যাক্টরি বন্ধ হয়ে গেলেও খুব একটা অবাক হবেন না। অসহায় শিল্প মালিকরা তাদের মেশিন বিক্রি করেও বেতন-ভাতা পরিশোধ করছেন। আমরা সবাইকে নির্দিষ্ট সময়েই বেতন পরিশোধ করতে বলেছি। কিন্তু আমাদের মনে রাখা দরকার ছোট মানেই নিকৃষ্ট নয়। ছোট ও মাঝারি ফ্যাক্টরিকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে। রপ্তানিতে প্রণোদনা পেলে ফ্যাক্টরিগুলো ঘুরে দাঁড়াতে পারবে। বাজেটে বিজিএমইএর সুপারিশগুলো হলো, সব বাজারে রপ্তানির ওপর ৫ শতাংশ প্রণোদনা বা ভর্তুকি দেয়া, রপ্তানি সহায়ক মুদ্রা বিনিময় হার নির্ধারণ, পোশাক শিল্পকে সম্পূর্ণ ভ্যাটমুক্ত রাখা, পোশাক শিল্পের জন্য রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে কর শূন্য দশমিক ২৫ শতাংশ অপরিবর্তিত রাখা, উৎস করকে আগের মতো চ‚ড়ান্ত কর দায় হিসেবে গণ্য করা এবং করপোরেট কর ১২ শতাংশের পরিবর্তে পূর্বের ন্যায় ১০ শতাংশ করা। এছাড়া, পোশাক শিল্পের জন্য ৩০০ কোটি টাকার জরুরি ফান্ড গঠন, শ্রমিকের জন্য বিশেষ বরাদ্দ, বন্ডের অডিট কার্যক্রমের জন্য দলিলাদি দাখিলের সময়সীমা ৩ মাসের পরিবর্তে ৬ মাস করা ও পোশাক শিল্পের জন্য প্রযুক্তি উন্নয়নে তহবিল বরাদ্দের মতো দাবি রয়েছে সংগঠনটির। বিকেএমইএ’র প্রস্তাবনায় পোশাক শিল্পের জন্য উৎস আয়কর প্রদানকে চূড়ান্ত করদায় হিসেবে নির্ধারণ ও রপ্তানির বিপরীতে প্রত্যাবাসিত মূল্যের ওপর ৫ শতাংশ হারে নগদ সহায়তা প্রদানের কথা বলা হয়েছে। বিকেএমইএর প্রথম সহ-সভাপতি এম মনসুর আহমেদ বলেন, আমরা অনেক ক্ষেত্রে ৪ শতাংশ প্রণোদনার পরিবর্তে বাস্তবে পাই ৩.২ শতাংশ। ৫ শতাংশ হারে সব দেশের ক্ষেত্রে প্রত্যাশিত মূল্যের ক্ষেত্রে প্রণোদনা চেয়েছি। আমেরিকার বাজারের ক্ষেত্রে আমরা ১৬ শতাংশ নগদ প্রণোদনা চাই। কারণ দেশটিতে জিএসপি নেই। আমাদেরকে অনেক বেশি কর দিতে হয়। এক্সপোর্টার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইএবি)’র প্রথম সহ-সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, প্রণোদনা নিয়ে শুভঙ্করের ফাঁকি রয়েছে। নিট স্বয়ংসম্পূর্ণ হচ্ছে। পোশাক শিল্পকে সম্পূর্ণ ভ্যাটের আওতামুক্ত রাখা হোক।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App