ঈদে উজ্জ্বল উপস্থিতি
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২৭ মে ২০১৯, ০৪:০৬ পিএম
কয়েক বছর ধরেই ঈদুল ফিতর পড়ছে আষাঢ়- জ্যৈষ্ঠ মাসে। গরমের দাবদাহ ও বর্ষাএ দুইয়ের মধ্যেই মুসলিম সম্প্রদায়কে ঈদ পালন করতে হচ্ছে। তাই দেশের ফ্যাশন হাউসগুলোও পোশাকের নকশায় আবহাওয়ার কথা মাথায় রেখেছে। এ ছাড়া উৎসব যেহেতু রঙিন, তাই উজ্জ্বল নকশার পোশাক এসেছে বাজারে। দেশি ও বিদেশি সংস্কৃতির ভাবধারা মাথায় রেখে পোশাকে ভিন্নতা আনার চেষ্টা করেছে ফ্যাশন হাউসগুলো।
ফ্যাশন ট্রেন্ডে এখন প্যাশ্চাত্য এবং দেশীয় মোটিফ উৎসবে যেন পায় বৈচিত্র্যতা। তাই আসছে ঈদ ফ্যাশনে দেশি মোটিফের সঙ্গে চল এখন আন্তর্জাতিক মোটিফ, প্যাটার্ন, কাটিংয়ের। চলতি কাটিং, প্যাটার্নের সঙ্গে রঙে দেওয়া হয়েছে নজর। ঈদের পার্টি গাউনেও দেখা মিলবে এ ট্রেন্ডের। যে কোনো টপস বা কামিজের প্যাটার্ন এবং কাটিং ডিজাইন করা হয় দুই অংশে। বডি ও বটম। এই ঈদে ড্রেসের বডিতে ভিন্নতা তেমন পরিলক্ষিত না হলেও বটম কাটিংয়ের নতুনত্ব চোখে পড়ে। এবারের ঈদে বটম ও বডির বৈচিত্র্য সমান ভাবে দেখা যাবে।
পুরুষের ঈদ পোশাকে সারাবছর
দেশের ফ্যাশন হাউসগুলোয়ও ঈদের আগে গরমের পোশাক বিক্রি চলছে এখন। গরম আর বৃষ্টির কারণে দেশের প্রকৃতি এখন নানা রঙে বর্ণিল। প্রকৃতির এই রঙের কারণেই আলাদা করে ঝলমলে রঙের পোশাক পরার দরকার পরে না। তাই পোশাকের রং কিছুটা হালকাই রাখেন ডিজাইনাররা। আর ঈদকে সামনে রেখে তাই পাঞ্জাবি ছাড়াও নতুন কেনা ক্যাজুয়াল পোশাকটি পরা যাবে সারা বছরই। মনে হচ্ছে কেমনে?
পাঞ্জাবি তো ঈদের দিনে একবেলা পরবেনই। আর বাকিটা সময়? সারাদিন ফুরফুরে থাকতে বেছে নিতে পারেন টি-শার্ট বা পোলো বা শার্টের মতো পোশাক। জিনস বা গ্যাবার্ডিন প্যান্টের সঙ্গে এগুলো মানিয়েই যাবে। কাটে-ছাঁটে নতুন এসব দিব্যি স্টাইলিশ দেখাবে আপনাকে।
ফ্যাশন স্টোর ক্যাটস আই এর পরিচালক সাদিক কুদ্দুস বলেন, ‘ঈদে পাঞ্জাবি পরা হয় বড়জোড় দুপুর বা সন্ধ্যা রাত অবদি। বাকি সময় বা রাতের কোন দাওয়াতে গেলে পোলো, শার্টের চাহিদাও থাকে ঈদে। এবার যেমন গরমের কারণে রঙ এবং প্রিন্টের দিকে নজর দেয়া হয়েছে। প্যাটার্ন নিয়েও চলছে নানা ধরনের নিরীক্ষা। এছাড়াও এধরনের পোশাক ঈদ ছাড়াও সারা বছরই পরাও যায়। ইদানিং পলো টি-শার্ট এবং শার্টের ক্ষেত্রে এক কালার বেশ চলছে।’
ফ্যাশন হাউস জেন্টল পার্কের চেয়ারম্যান শাহাদৎ চৌধুরি বাবুর সঙ্গে কথা বলেও তেমনটা বোঝা গেল। তিনি বলেন, বিষয়টা কিন্তু এমন না; গরমে ছেলেদের পোশাকে শুধু সাদা রং চলছে। সব রঙের দেখা মিলবে গরমের পোশাকে। তবে সেখানে গাঢ় রং না নিয়ে সব ধরনের রঙেরই হালকা শেড বেছে নেয়া হয়। এতে গরমে এক ধরনের স্বস্তি পাওয়া যায়।
এবার আসি ঈদের পোশাকেই কেন সারা বছর। কেননা, সকাল শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বাড়তে থাকে গরমের তীব্রতা। নানা কাজে ছুটতে হয় ঘরের বাইরে। প্রচণ্ড গরমে একদিকে যেমন চারপাশের সবকিছুতে অস্থির লাগে তেমনি ঘেমে নেয়ে একাকার হয় পুরো শরীর। এই প্রচণ্ড গরম থেকে ছেলেদের কিছুটা রেহাই পেতে তাই নজর দিতে হবে নিত্যদিনের পোশাকের দিকে। এ ধরনের পোশাক কিনলে ঈদের দুপুর বা রাত ছাড়াও তাই পরা যাবে সব সময়ই। এধরনের আবহাওয়ায় কেমন পোশাক পড়লে গরম কম লাগবে এবং পোশাকে কী কী বৈশিষ্ট্য থাকবে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
নারীর ঈদ পোশাক
পোশাকের কাট-ছাঁটেও চলে এসেছে নতুনত্ব। এই ঈদে, গরমে দেবে আরাম এমন কাপড়ের কদর বেড়ে গেছে। পোশাকে ড্রেপিং বা ড্রাফটিং কাট প্যাটার্ন বৈচিত্র্য ডিজাইনারদের মুন্সিয়ানায় পাচ্ছে ভিন্নতা। কেমন হবে রোদ বৃষ্টির এই ঈদে যাপিত জীবনের ফ্যাশন ট্রেন্ড বা সাজ- পোশাক? ডিজাইনারদের বয়ানে, এমন সময়ে পোশাক হতে হবে হালকা রং, পাতলা কাপড়, আরামদায়ক কাটে তৈরি। দৈনন্দিন কাজকর্ম, বন্ধুদের আড্ডা বা নানা সামাজিক অনুষ্ঠানে তাই একটু আরাম পেতে হলে পোশাকে এই বিষয়গুলো যেন থাকতেই হবে। বেশ ক’বছর ধরেই উপমহাদেশীয় ফ্যাশনধারার অনুসারে ম্যাক্সি ড্রেস, গাউন স্টাইল সিঙ্গেল কামিজ বা লং প্যাটার্ন পোশাক চলছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কল্যাণে আমাদের দেশের তরুণীদের কাছেও এই ট্রেন্ড জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। গরমের সময় এই পোশাক বেশ আরামদায়ক হবে, আর ট্রেন্ডি তো বটেই। তবে ফ্যাশনে সময়টা যেহেতু গ্রীষ্মকাল, সেহেতু বডি কাটিংয়ে দুই-চারটা নতুনত্ব তো চোখে পড়েই। তাও পূর্ব ফ্যাশনের বাইরে নয়। তেমনি কিছু ডিজাইনের মধ্যে ঢোলা, কার্ভ স্লিভ, বেল স্লিভ উল্লেখ্য। নেকের পরিবর্তন দেখা যায় বেশ। সেমি বোট নেক, পরট্রেইট, জুয়েল, স্কয়ার, গেদার্ড নেক, সেট ইন স্লিভ নেকের মতো প্যাটার্নেও উন্নত ডিজাইন বেশি দেখা যায় এখন। নেকে এমব্রয়ডারি, প্রিন্টের কাজ এখন ফ্যাশনের বাইরে। তবে বডিতে হালকা কাজ ট্রেন্ডের মধ্যেই।
লং কাটের কুর্তি, টপস বা লং পোশাক সবকিছুতেই আভিজাত্য নিয়ে আসবে। মানিয়ে যাবে দিনে ও রাতে দুই সময়েই। এদিকে আন্তর্জাতিক ফ্যাশনেও চলছে এখন হাতার নকশা বৈচিত্র্য। মজার বিষয় হচ্ছে, একই ধাঁচের নকশার হাতা ব্যবহার করা যায় ব্লাউজ, কামিজ বা ফতুয়ায়।
পোশাক ও ছবি : ক্যাটস আই