বাড়তি দাম, হয়রানি কাম্য নয়
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৭ মে ২০১৯, ০৯:১০ পিএম
ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বাসের অগ্রিম টিকেট বিক্রি শুরু হয়েছে গতকাল শুক্রবার থেকে। রাজধানীর কল্যাণপুর, শ্যামলী, গাবতলী, মহাখালী ও আসাদগেট বাস কাউন্টারে দেয়া হচ্ছে অগ্রিম টিকিট। শুরুতে দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার বিড়ম্বনা, দাম বেশি রাখার অভিযোগ আর কাক্সিক্ষত টিকেট না পাওয়ার খবর গণমাধ্যমে আসছে। সাহরি খেয়েই টিকেটের আশায় অনেকে চলে আসছেন কাউন্টারে। কেউ ইফতারি-সাহরি দুটোই সারছেন কাউন্টারে। অবশেষে দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর টিকেট পেয়ে স্বস্তি।
অন্যদিকে, আগামী ২২ মে ট্রেনের অগ্রিম টিকেট বিক্রি শুরু হবে। রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশন ছাড়াও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি, ফুলবাড়িয়া রেলওয়ে কল্যাণ ট্রাস্ট, মিরপুর পুলিশ লাইন, বিমানবন্দর স্টেশন, বনানী ও জয়দেবপুর রেলস্টেশনসহ মোট ৬ স্থান থেকে যাত্রীরা অগ্রিম টিকেট সংগ্রহ করতে পারবেন। ২, ৩ ও ৪ জুনের টিকেটের চাহিদাই সবচেয়ে বেশি। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ৫ জুন বাংলাদেশে ঈদ হবে। সে কারণে আগের তিন দিনের টিকেটই বেশি চাচ্ছেন ঘরমুখো মানুষ। বেশিরভাগ ঘরমুখো যাত্রীকে যদি এই কয়েক দিনেই ঘরে ফিরতে হয়, তাহলে চাহিদা অনুযায়ী যানবাহনের সংকট হওয়া স্বাভাবিক। তবে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা, পরিবহন কোম্পানিগুলোর যাত্রীসেবার ব্যাপারে আন্তরিকতা থাকলে হয়তো ঘরমুখো মানুষের চাহিদা পূরণ অসম্ভব নয়।
কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক ব্যাপার হলো- এ নিয়ে সরকারের সংশ্লিষ্টরা আগাম যেসব পরিকল্পনার কথা বলেন বাস্তবে তার তেমন ফল পাওয়া যায় না। আর পরিবহন ব্যবসার সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা এই সংকটকে কেন্দ্র করেই অসাধু বাণিজ্যে লিপ্ত হন। টিকেটের অতিরিক্ত দাম, কালোবাজারি, হয়রানি ইত্যাদি প্রতি বছরের অভিযোগ। এসবের বিরুদ্ধে নানা রকম ব্যবস্থা নেয়া হলেও পুরোপুরি সুফল পাওয়া যাচ্ছে না, এটাই সত্যি। ব্যবস্থা গ্রহণ, বাস্তবায়ন- কোথাও নিশ্চয়ই ফাঁক থেকে যাচ্ছে। টিকেটের বাড়তি দাম নেয়াসহ টিকেট বিক্রি সংক্রান্ত সব অনিয়ম বন্ধ করতে কঠোর মনিটরিংয়ের বিকল্প নেই।
ঈদ মৌসুমে পরিবহন কোম্পানিগুলো যাত্রীদের জন্য সেবার মান বাড়াবে, বাড়তি সেবা সংযোজন করবে, ভাড়ার ক্ষেত্রে নানা রকম ছাড় দেবে, তা না করে তারা এই সময়টাতে যাত্রীদের জিম্মি করে ফায়দা নেয়ার চেষ্টা করে। এই অন্যায়, অনৈতিক প্রবণতা থেকে তাদের বের করে আনতে হবে। ঈদে যাত্রী পরিবহন সুষ্ঠু-সুশৃঙ্খল ও হয়রানি-ভোগান্তিমুক্ত করতে পরিবহন মালিক পক্ষের দায়িত্বশীল ভূমিকা ও সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কঠোর নজরদারি প্রত্যাশা করছি আমরা।