×

জাতীয়

বৌদ্ধ মন্দিরগুলোয় বাড়তি নিরাপত্তা, ফানুস নিষিদ্ধ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৫ মে ২০১৯, ১২:৩৫ পিএম

বৌদ্ধ মন্দিরগুলোয় বাড়তি নিরাপত্তা, ফানুস নিষিদ্ধ
ইসলামিক স্টেট (আইএস) জঙ্গিদের হুমকি থাকায় রাজধানীসহ দেশের আড়াই হাজার বৌদ্ধ মন্দির ঘিরে নেয়া হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা। রাঙ্গামাটি, গোপালগঞ্জসহ বৌদ্ধ অধ্যুষিত জেলায় সতর্ক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। পুলিশের পক্ষ থেকে ভারতের পুলিশ ও গোয়েন্দাদের সঙ্গে হামলার হুমকির ব্যাপারে তথ্য আদান-প্রদান করা হয়েছে। পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে আইজিপি গোটা নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে পুলিশের সব ইউনিটপ্রধান এবং বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে গতকাল সকালে বৈঠক করেছেন। পরে বিকেলে সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে তিনি সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছেন। এর আগে সোমবার দুপুরে সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে বৈঠক করেন ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার। বাড়তি নিরাপত্তার অংশ হিসেবে এরই মধ্যে সারা দেশে রাস্তায় তল্লাশি বাড়ানো হয়েছে, বসানো হয়েছে চেকপোস্ট। বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে শোভাযাত্রা ও অনুষ্ঠানস্থল ঘিরে সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। নিষিদ্ধ করা হয়েছে আতশবাজি। উড়ানো যাবে না ফানুসও। এ প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, সুনির্দিষ্ট হুমকি না থাকলেও নিরাপত্তা নিয়ে সব ধরনের সতর্কতা ও প্রস্তুতি রয়েছে। বাংলাদেশ পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল (আইজিপি) ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারীর সভাপতিত্বে গতকাল মঙ্গলবার সকালে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের সম্মেলন কক্ষে বৌদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা সংক্রান্ত সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে আইজিপি বলেন, বৌদ্ধ পূর্ণিমার নিরাপত্তা নিয়ে সুনির্দিষ্ট কোনো শঙ্কা নেই। নিরাপত্তা ব্যবস্থা সুসংহত করার লক্ষ্যে নিরাপত্তা সংক্রান্ত প্রতিটি বিষয় বিশ্লেষণ করে বৌদ্ধ মন্দিরকেন্দ্রিক বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। বৌদ্ধ পূর্ণিমাকে নিয়ে কোনো গোষ্ঠী বা মহল যাতে কোনো ধরনের গুজব বা বিভ্রান্তি ছড়াতে না পারে সে জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সার্বক্ষণিক মনিটর করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে দায়িত্ব পালন এবং গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানোর জন্য সব পুলিশ ইউনিট এবং প্রতিটি বৌদ্ধ মন্দির পরিদর্শন ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে চেকপোস্ট স্থাপন করে ব্লক রেইডের জন্য পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন আইজিপি। এ ছাড়া কমিউনিটি পুুলিশিং সদস্য, স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী এবং বৌদ্ধ ধর্মীয় নেতাদের সহায়তা নিয়ে বৌদ্ধ মন্দিরে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ইউনিটগুলোকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। নিরাপত্তার স্বার্থে ব্যাগ, পার্স, ভ্যানিটি ব্যাগ প্রভৃতি সঙ্গে না আনতে পুণ্যার্থীদের আহ্বান জানানো হয়। বৌদ্ধ মন্দিরে সিসিটিভি ক্যামেরা ও অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র স্থাপন এবং স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগের জন্য মন্দির কর্তৃপক্ষকে পরামর্শ দেয়া হয়েছে। সভায় অতিরিক্ত আইজিপি (এএন্ডও) ড. মো. মইনুর রহমান চৌধুরী, র‌্যাব মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ, ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়া, এটিইউর অতিরিক্ত আইজিপি মোহাম্মদ আবুল কাশেম, স্পেশাল ব্রাঞ্চের অতিরিক্ত আইজিপি মীর শহীদুল ইসলাম, সংশ্লিষ্ট রেঞ্জের ডিআইজি, পুলিশ কমিশনার ও জেলার পুলিশ সুপার, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধি, ধর্মরাজিক বৌদ্ধ মহাবিহারের মহাসচিব পি. আর. বড়ুয়া, বাংলাদেশ বুড্ডিস্ট ফেডারেশনের নির্বাহী সভাপতি অশোক বড়–য়া, বৌদ্ধ কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি ও সংরক্ষিত মহিলা আসন-৯ এর সংসদ সদস্য বাসন্তী চাকমা, বাংলাদেশ বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘের সহসভাপতি প্রমথ বড়ূয়া, বাংলাদেশ বৌদ্ধ সমিতি ঢাকা অঞ্চলের সাধারণ সম্পাদক স্বপন বড়ুয়া চৌধুরী, বাংলাদেশ বুড্ডিস্ট ফেডারেশনের জেনারেল সেক্রেটারি ভিক্ষু সুনন্দপ্রিয়, বাংলাদেশ বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের বোর্ড অব ট্রাস্টি ডালিম কুমার বড়ুয়া প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এর আগে সোমবারের বৈঠকে ডিএমপি কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া অনুষ্ঠানস্থলের নিরাপত্তায় বেশ কিছু নির্দেশনা দেন। উল্লেখ্য, বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে ১৭ মে শুক্রবার সকাল ৯টায় বাংলাদেশ বৌদ্ধ সাংস্কৃতিক পরিষদের উদ্যোগে শান্তি শোভাযাত্রা বের হবে। শোভাযাত্রাটি শাহবাগের জাতীয় জাদুঘর থেকে শুরু হয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবে গিয়ে শেষ হবে। আর পরদিন শনিবার সকাল সাড়ে ৭টায় ধর্মরাজিক বৌদ্ধ মহাবিহার আয়োজিত শান্তি শোভাযাত্রা ধর্মরাজিক বৌদ্ধ মহাবিহার থেকে শুরু হয়ে বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামাল স্টেডিয়াম-কমলাপুর হয়ে পুনরায় বৌদ্ধ মহাবিহারে গিয়ে শেষ হবে। শোভাযাত্রায় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেও কিছু নির্দেশনা দিয়েছে ডিএমপি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App