×

জাতীয়

অতিরিক্ত ফি নিলে স্বীকৃতি বাতিল

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৫ মে ২০১৯, ১১:৩১ এএম

অতিরিক্ত ফি নিলে স্বীকৃতি বাতিল
সারা দেশের কলেজ ও মাদ্রাসায় একাদশ শ্রেণিতে এসএমএস ও অনলাইনে ভর্তির আবেদন শুরু হয়েছে। গত ১২ মে ভর্তিসংক্রান্ত সব তথ্য তুলে ধরে নির্দেশিকা জারি করেছে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটি। তিন ধাপে আগামী ২৫ জুন পর্যন্ত আবেদন গ্রহণ ও ফল প্রকাশ করা হবে। ফলাফলের ভিত্তিতে ২৭ থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত চলবে ভর্তি কার্যক্রম। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ভর্তি নীতিমালায় সেশন চার্জসহ ভর্তি ফি নির্ধারণও করে দেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড থেকে সতর্ক করা হয়েছে, নির্ধারিত ফির চেয়ে অতিরিক্ত আদায় করা হলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। প্রয়োজনে অভিযুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের স্বীকৃতি বাতিল করারও হুঁশিয়ারি দেয়া হয়েছে। জারি করা ভর্তি নীতিমালায় মফস্বল ও পৌর (উপজেলা) এলাকায় সেশন চার্জসহ ভর্তি ফি নির্ধারণ করা হয়েছে এক হাজার টাকা। জেলা সদরের পৌর এলাকায় দুই হাজার টাকা, ঢাকার বাইরের সব মেট্রোপলিটন এলাকায় তিন হাজার টাকা করা হয়েছে। তবে ঢাকা মেট্রোপলিটনে এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানে সেশন চার্জসহ ভর্তি ফি পাঁচ হাজার টাকা এবং আংশিক ও নন-এমপিও প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের বেতন-ভাতা হিসেবে বাংলা মাধ্যমে সর্বোচ্চ ৯ হাজার টাকা ও ইংরেজি ভার্সনে ১০ হাজার টাকা নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। এবারই প্রথম ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে কলেজের তিনটি ক্যাটাগরি করে ভর্তি নেয়া হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে ভর্তির এই নীতিমালা ও নির্দেশনা জারির পরপরই ঢাকা ও বাইরের মেট্রোপলিটন সিটিসহ জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের কলেজগুলো ভর্তি কার্যক্রম শুরু করেছে। ইতোমধ্যে পত্রপত্রিকায় বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করছে। তবে অনেক প্রতিষ্ঠান তাদের বিজ্ঞপ্তিতে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী সেশন চার্জ ও ভর্তি ফি নেয়ার বিষয়টি স্পষ্টভাবে উল্লেখ করলেও কোনো কোনো কলেজ তা এড়িয়ে যাচ্ছে। আবার অনেক কলেজই নীতিমালা মানার কথা বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করলেও ইচ্ছামতো ভর্তি ফি আদায়ের পরিকল্পনা করছে। একাদশে ভর্তির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা রাজধানীর কয়েকটি কলেজে যোগাযোগ করে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। রাজধানীর বাইরে ক্যামব্রিয়ান কলেজের চট্টগ্রাম ক্যাম্পাসে যোগাযোগ করা হলে ভর্তি কমিটির সদস্য শিক্ষক ফারহানা জানান, একাদশ শ্রেণিতে ভর্তিতে সেশন চার্জসহ মোট তিন হাজার টাকা ধরা হয়েছে। ভর্তি নীতিমালার বিষয়টি বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ না করলেও তারা নীতিমালা মেনেই ভর্তি কার্যক্রম চালানোর পরিকল্পনা করছেন। রাজধানীর লালমাটিয়া মহিলা কলেজের অফিস সহকারী হাবিব জানালেন, ভর্তি নীতিমালা মেনেই তারা সেশন চার্জসহ সর্বমোট ভর্তি ফি ৮ হাজার ৯৮২ টাকা নির্ধারণ করেছে। তারা অতিরিক্ত কোনো ফি নেবে না। তবে একটি জাতীয় দৈনিকে গতকাল মঙ্গলবার একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা রাজধানীর উত্তরার স্ব-অর্থায়নে পরিচালিত ট্রাস্ট কলেজে দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র। বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্টভাবে ‘ভর্তি সংক্রান্ত সব বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ভর্তি নীতিমালা ২০১৯ অনুসরণ করা হবে’ উল্লেখ করলেও প্রতিষ্ঠানের ভর্তি সংক্রান্ত কমিটির সদস্য বিএম আজমল হোসেন বললেন উল্টো কথা। তিনি জানালেন, সেশন ফি ৯ হাজার টাকা ধরে মোট ভর্তি ফি ১৮ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। ভর্তি নীতিমালায় সর্বসাকুল্যে ভর্তি বাবদ সর্বোচ্চ ৯ হাজার টাকা নেয়ার কথা বলা হলেও তারা কেন বেশি আদায় করার পরিকল্পনা করছেন এমন প্রশ্নের কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি শিক্ষক আজমল হোসেন। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পরিদর্শক (কলেজ) প্রফেসর ড. মো. হারুন-অর-রশিদ বলেন, সেশন চার্জসহ ভর্তির ক্ষেত্রে নির্ধারিত সর্বোচ্চ নয় হাজার টাকার বেশি কোনোভাবেই কোনো কলেজ নিতে পারবে না। অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের প্রমাণ পেলেই সেসব প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। প্রয়োজনে পাঠ অনুমোদন বা স্বীকৃতি বাতিল করা হবে। অধ্যাপক হারুন জানান, গত বছরে নির্ধারিত ফির বেশি আদায় করা রাজধানীর তিনটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। আদায় করা অতিরিক্ত অর্থও শিক্ষার্থীদের ফেরত দিতে বাধ্য করা হয়েছে। তিনি বলেন, আগামী দুয়েকদিনের মধ্যেই এ ব্যাপারে সতর্ক চিঠি পাঠানো হবে কলেজগুলোতে। এ ব্যাপারে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটির সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর মো. জিয়াউল হক বলেন, অতিরিক্ত ফি কেউ আদায় করতে পারবে না। এ ব্যাপারে কঠোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আদায় করলে অবশ্যই ফেরত দিতে হবে। প্রমাণ পেলে সে প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App