×

জাতীয়

বুদ্ধ পূর্ণিমা ঘিরে ঢাকায় পুলিশের নিরাপত্তা জাল

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৪ মে ২০১৯, ০২:০৬ পিএম

বুদ্ধ পূর্ণিমা ঘিরে ঢাকায় পুলিশের নিরাপত্তা জাল
বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান বুদ্ধ পূর্ণিমাকে ঘিরে এবারো রাজধানীর সব বৌদ্ধ মন্দিরে সমন্বিত ও নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। আগামী শুক্র ও শনিবার উৎসবকে ঘিরে সাজানো হয়েছে নিরাপত্তা ছক। ইসলামিক স্ট্রেট (আইএস) জঙ্গিদের হুমকির কারণে এ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। বুদ্ধ পূর্ণিমাকে ঘিরে গতকাল সোমবার দুপুরে ডিএমপি সদর দপ্তরে ডিএমপি কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সার্বিক নিরাপত্তা, আইনশৃঙ্খলা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনাসংক্রান্ত সমন্বয় সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। সভায় বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে শোভাযাত্রা ও অনুষ্ঠানস্থল ঘিরে সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। অনুষ্ঠানস্থলগুলোর নিরাপত্তায় বেশ কিছু নির্দেশনা দিয়েছে ডিএমপি। সেগুলো হচ্ছে সব বৌদ্ধ মন্দির ও তার আশপাশের এলাকা সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হবে। এসব জায়গায় পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করা হবে। মন্দিরে প্রবেশের ক্ষেত্রে সব দর্শনার্থীকে ম্যানুয়ালি ও আর্চওয়ে দিয়ে তল্লাশি করিয়ে ভেতরে প্রবেশ করানো হবে। মন্দিরের নিরাপত্তার জন্য মন্দির কর্তৃপক্ষ কর্তৃক পর্যাপ্ত সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করতে হবে এবং তাদের আলাদা পোশাক, আর্মড ব্যান্ড বা আইডি কার্ডের ব্যবস্থা করতে হবে। এ ছাড়া সব ধরনের মাদকদ্রব্য, আতশবাজি ও পটকা ব্যবহারের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা থাকবে। নিরাপত্তার স্বার্থে ফানুস উড়ানো থেকে বিরত থাকতে হবে। নামাজের সময় সব ধরনের বাদ্যযন্ত্র বাজানো বন্ধ রাখতে হবে। সর্বসাধারণের চলাচল স্বাভাবিক রাখার জন্য মন্দিরের আশপাশে কোনো ভাসমান দোকান ও হকার বসতে দেয়া হবে না। নিরাপত্তার স্বার্থে মন্দির সংশ্লিষ্ট রাস্তায় পর্যাপ্ত বেরিকেড থাকবে। সন্দেহভাজন কাউকে মন্দিরে প্রবেশের পূর্বে তার পরিচয় নিশ্চিত হয়ে প্রবেশ করাতে হবে। বড় ব্যাগ, ব্যাক-প্যাক, পোটলা, ধারালো কোনো বস্তু, দাহ্য পদার্থ নিয়ে মন্দির ও অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশ সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ থাকবে। অনুষ্ঠানস্থল বোম্ব^ ও ডগ স্কোয়াড দিয়ে সুইপিং করানো হবে। অগ্নিনির্বাপকের ব্যবস্থা হিসেবে পর্যাপ্ত ফায়ার টেন্ডার ও দ্রুত চিকিৎসার জন্য অ্যাম্বুুলেন্সের ব্যবস্থা থাকবে। মন্দিরের নিরাপত্তার স্বার্থে পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় করে স্থানীয় সব শ্রেণিপেশার প্রতিনিধি নিয়ে বুদ্ধ পূর্ণিমা উদযাপন কমিটি গঠন করা হবে। সাদা পোশাকে গোয়েন্দা পুলিশ নিয়োজিত থাকবে। গোয়েন্দা সংস্থাগুলো অগ্রিম সংবাদ সংগ্রহ করে তা পোশাক পরিহিত পুলিশদের সরবরাহ করবেন। উল্লেখ্য, বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে আগামী ১৭ মে শুক্রবার সকাল ৯টায় বাংলাদেশ বৌদ্ধ সাংস্কৃতিক পরিষদের আয়োজিত শান্তি শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে। শোভাযাত্রাটি শাহবাগের জাতীয় জাদুঘর থেকে শুরু হয়ে জাতীয় প্রেসক্লাবে গিয়ে শেষ হবে। আর পরদিন শনিবার সকাল সাড়ে ৭টায় ধর্মরাজিক বৌদ্ধ মহাবিহার আয়োজিত শান্তি শোভাযাত্রা ধর্মরাজিক বৌদ্ধ মহাবিহার থেকে শুরু হয়ে বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামাল স্টেডিয়াম-কমলাপুর হয়ে পুনরায় বৌদ্ধ মহাবিহারে গিয়ে শেষ হবে। শোভাযাত্রায় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেও কিছু নির্দেশনা দিয়েছে ডিএমপি। শোভাযাত্রা শুরুর পূর্বে সবাইকে তল্লাশি করে শোভাযাত্রায় প্রবেশ করানো হবে। শোভাযাত্রা শুরুর পর পথ থেকে কাউকে নতুন করে ঢুকতে দেয়া হবে না। পর্যাপ্ত স্বেচ্ছাসেবক দিয়ে শোভাযাত্রার চারপাশ বেষ্টনী দিয়ে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। শোভাযাত্রায় কোনো ধরনের ব্যাগ ও ব্যাকপ্যাক, দাহ্য পদার্থ, ধারালো বস্তু, আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ থাকবে। অনুষ্ঠানস্থল ও শোভাযাত্রায় অপরিচিত কোনো লোক বা অস্বাভাবিক কিছু দেখলে পুলিশকে অবহিত করাসহ বুদ্ধ পূর্ণিমার নিরাপত্তার স্বার্থে পুলিশের তল্লাশি কার্যক্রমে নগরবাসীকে সহায়তা করার জন্য সভায় বিশেষভাবে অনুরোধ করেছেন ডিএমপি কমিশনার।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App