×

জাতীয়

রাঙামাটিতে ভালুকের আক্রমণে আহত কিশোরকে সিএমএইচে ভর্তি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১২ মে ২০১৯, ০৬:১৭ পিএম

রাঙামাটিতে ভালুকের আক্রমণে আহত কিশোরকে সিএমএইচে ভর্তি

রাঙামাটিতে ভালুকের আক্রমণে আহত কিশোরকে হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছে সেনাবাহিনী।

রাঙামাটির দুর্গম পাহাড়ে ভালুকের আক্রমণের মারাত্মক আহত ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ত্রিপুরা কিশোর পানবিকাশকে (১৬) চট্টগ্রাম সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) ভর্তি করা হয়েছে। তিনদিন ধরে মৃত্যু যন্ত্রণায় ভোগা পানবিকাশকে রোববার দুপুর আড়াইটার সময় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর চট্টগ্রাম ২৪ পদাতিক ডিভিশনের সার্বিক তত্ত্বাবধানে বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টারযোগে সিএমএইচে নেয়া হয়। ভালুকের আক্রমণের শিকার এ কিশোরের বাড়ি রাঙ্গামাটি জেলার সাজেক থানাধীন নিওথাংনাং পাড়ায়। সে ওই পাড়ার অলিনদ্র ত্রিপুরার ছেলে। কৃষি কাজের মাধ্যমেই তারা জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। আহত পানবিকাশ ত্রিপুরার চাচাত ভাই হরি বিকাশ ত্রিপুরা বলেন, গত ১০ মে শুক্রবার সাজেকের দুর্গম পাহাড়ি জমিতে কৃষিকাজ শেষে বাড়ি ফিরছিলেন পানবিকাশ ত্রিপুরা। পথিমধ্যে সাজেকের নিওথাংনাং পাড়ায় হঠাৎ ভালুক আক্রমণ করে বসে পনবিকাশকে। ওই সময় ভালুক কামড়ে তার মুখ ও শরীরের একাংশ ক্ষতবিক্ষত করে। উপড়ে ফেলে তিনটি দাঁত। সে সময় তার আর্তচিৎকারে কিছু লোক এগিয়ে তাকে উদ্ধার করলেও বিনা চিকিৎসায় মরতে বসে পানবিকাশ। পরে স্বজনরা প্রায় দেড় দিন পায়ে হেঁটে বিজিবি ক্যাম্পে নিয়ে আসে। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিলেও মৃত্যু যন্ত্রণায় ছটফট করছিল কিশোরটি। খবর পেয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর চট্টগ্রাম ২৪ পদাতিক ডিভিশনের সার্বিক তত্ত্বাবধানে বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টাযোগে তাকে চট্টগ্রাম সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সিএমএইচ সূত্র জানা গেছে, দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ব্যবস্থা নেই। যার কারণে বিষয়টি মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি এ কিশোরকে যেকোনো ভাবে চট্টগ্রাম সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে নিয়ে আসার নির্দেশ দেন। সেই নির্দেশ পেয়েই রোববার দুপুর আড়াইটার দিকে বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টার যোগে চট্টগ্রাম ক্যান্টমেন্টে আনা হয়। আহত পানবিকাশ ত্রিপুরার বাবা অলিনন্দ্র ত্রিপুরা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনাবাহিনীর মানবিক কর্মকাণ্ডে পাহাড়ের দুর্গম জনপদের মানুষগুলো নতুনভাবে বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখছে। তিনি বলেন, তারা যেই গ্রামে বসবাস করছেন সেখান থেকে গাড়ী চলে এমন কোনো সড়কে যেতে হলে টানা তিনদিন পায়ে হেঁটে যেতে হয়। নেই কোনো সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা। ঝিরি-ঝরণা, খাল ও গিরিপথ পাড়ি দিয়েই দিনরাত হেঁটে কোনো বাজারের দেখা পান তারা। তবে জীবিকার তাগিদে ওই পাহাড়ী জনপদে বসবাস করছেন তারা। উল্লেখ্য, এর আগে সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী ও বিজিবির যৌথ প্রচেষ্টায় গত ৩১ ডিসেম্বর সোনাপতি চাকমা এবং ২৯ এপ্রিল জতনী তঞ্চংগ্যা নামে দুইজন উপজাতি প্রসূতি নারীকে হেলিকপ্টার যোগে চট্টগ্রাম সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়। পরে তারা ফুটফুটে বাচ্চা নিয়ে বাড়ি ফিরেন। বেঁচে যায় নবজাতক ও মায়ের জীবন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App