×

খেলা

ফাইনালে লিভারপুল

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৯ মে ২০১৯, ০২:৩৩ পিএম

ফাইনালে লিভারপুল
নিজেদের মাঠে অনুষ্ঠিত সেমিফাইনালের প্রথম লেগ বার্সেলোনা ৩-০ গোলের বড় ব্যবধানে জেতায় ফাইনালে ওঠা একপ্রকার অসম্ভবই হয়ে উঠেছিল ইংলিশ ক্লাব লিভারপুলের জন্য। টানা দ্বিতীয়বারের মতো চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে দ্বিতীয় লেগের ম্যাচে অন্তত ৪-০ ব্যবধানের জয় প্রয়োজন ছিল তাদের। বার্সেলোনার মতো শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিপক্ষে যা রীতিমতো অসম্ভব। তার ওপর আবার দলের আক্রমণভাগের দুই গুরুত্বপূর্ণ সদস্য মোহামেদ সালাহ ও রবার্টো ফিরমিনো নেই। তাই অলরেডদের ফাইনালে টিকেট পাওয়ার সম্ভাবনা আরো ফ্যাকাশে হয়ে ওঠে। কিন্তু খেলাটা যে ফুটবল। এখানে শেষ বলে কোনো কিছুই নেই। হতে পারে যে কোনো কিছুই। তা ছাড়া শুধু জিতলেই হতো না, গড়তে হতো ইতিহাস। তাও সালাহ-ফিরমিনোকে ছাড়া। আর কী দুর্দান্তভাবেই না সেটা করে দেখাল লিভারপুল। বার্সেলোনার বিপক্ষে গোল উৎসবে মেতে উঠে ৪-০ ব্যবধানের বড় জয় তুলে নিল কোচ জার্গেন ক্লপের শিষ্যরা। ম্যাচে লিভারপুলের হয়ে দুটি করে গোল করেন দিভোগ ওরিগি ও জর্জিনিয়ো উইনালডাম। এ জয়ে উভয় লেগ মিলিয়ে বার্সাকে ৪-৩ ব্যবধানে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের চলতি আসরের ফাইনালে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করল অলরেডরা। বার্সেলোনা এবং লিভারপুল দুদলের নামের পাশেই আছে সমান ৫টি করে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপা। বার্সা শেষবার টুর্নামেন্টটির শিরোপা জিতেছে ২০১৫ সালে। আর ২০০৫ সালে শেষবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপা ঘরে তুলেছিল লিভারপুল। সেমিফাইনালের প্রথম লেগ বড় ব্যবধানে জিতে এবারের আসরের ফাইনালে ওঠার পথটা অনেকটাই সহজ করে রেখেছিল বার্সেলোনা। তবে হাল ছাড়েনি লিভারপুলের খেলোয়াড়রাও। অসম্ভবকে সম্ভব করে কোচ আর্নেস্তো ভালভের্দের শিষ্যদের কাঁদিয়ে ফাইনালের টিকেট নিশ্চিত করার লক্ষ্য নিয়েই এ দিন খেলতে নামে তারা। নিজেদের মাঠে অনুষ্ঠিত ম্যাচটিতে শুরুতেই গোলের দেখা পায় ক্লপের শিষ্যরা। ম্যাচের সপ্তম মিনিটে বার্সার ডি-বক্সের ভেতর একজনকে কাটিয়ে গোলপোস্ট লক্ষ্য করে শট নেন লিভারপুল তারকা জর্ডান হেন্ডারসন। তার শট ফেরালেও পুরোপুরি বিপদমুক্ত করতে ব্যর্থ হন বার্সা গোলরক্ষক মার্ক-আন্ড্রে-টের স্টেগেন। ফিরতি বলে বুদ্ধিদীপ্ত শটে গোল করে অলরেডদের এগিয়ে (১-০) নেন দলটির ফরোয়ার্ড ওরিগি। শুরুতেই গোল খেয়ে যেন এলোমেলো হয়ে উঠে বার্সার রক্ষণভাগ। এ দিন নিষ্প্রভ ছিলেন আক্রমণভাগের দুই তারকা লিওনেল মেসি ও লুইস সুয়ারেজ। সে সুযোগ কাজে লাগিয়ে একের পর এক আক্রমণ করতে থাকে স্বাগতিকরা। ম্যাচের ৫৪ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ (২-০) করে লিভারপুল। জর্দি আলভার পা থেকে বল কেড়ে নিয়ে কিছুটা এগিয়ে বার্সার ডি-বক্স বরাবর ক্রস করেন ট্রেন্ট আলেকজান্ডার-আরনল্ড। বল একজনের পায়ে লেগে চলে যায় পেনাল্টি স্পটের কাছাকাছি দাঁড়ানো জর্জিনিয়ো উইনালডামের কাছে। আর নিচু শটে লক্ষ্যভেদ করেন তিনি। এর দুই মিনিট পর মিডফিল্ডার জর্ডান সাকিরির ক্রস থেকে উড়ে আসা বলে হেডে লক্ষ্যভেদ করে অলরেডদের হয়ে ব্যবধান বাড়ান (৩-০) উইনালডাম। দুই লেগ মিলিয়ে স্কোরলাইন তখন ৩-৩। কোণঠাসা হয়ে পড়া বার্সেলোনা শিবিরে জেগে ওঠে ছিটকে পড়ার শঙ্কা। আর ম্যাচের ৭৯ মিনিটে সেই শঙ্কাকে সত্যি পরিণত করেন লিভারপুল ফরোয়ার্ড ওরিগি। এ সময় কর্নার পায় স্বাগতিকরা। গোলরক্ষক স্টেগেনসহ বার্সার রক্ষণভাগের খেলোয়াড়রা তখনো ঠিক প্রস্তুত হয়ে ওঠেননি। কিন্তু রেফারির বাঁশি শুনে আচমকা শট নেন আলেকজান্ডার আরনল্ড। তার শট থেকে ছুটে আসা বল বার্সার জালে পাঠিয়ে ব্যবধান ৪-০ করেন ওরিগি। শেষ পর্যন্ত ম্যাচটি ৪-০ ব্যবধানে জিতে নেয় ক্লপের শিষ্যরা। এর মধ্য দিয়ে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো শেষ চারের প্রথম লেগে তিন গোলের ব্যবধানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় লেগ বড় ব্যবধানে জিতে ফাইনালে ওঠার কীর্তি গড়ল লিভারপুল।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App