×

জাতীয়

পশ্চিমাঞ্চল রেলের যাত্রীরা মৃত্যু ঝুঁকিতে, সেবা ভেঙে পড়েছে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৮ মে ২০১৯, ০১:৪৭ পিএম

পশ্চিমাঞ্চল রেলের যাত্রীরা মৃত্যু ঝুঁকিতে, সেবা ভেঙে পড়েছে
বাংলাদেশ রেলওয়ে পশ্চিম অঞ্চলের যাত্রীরা যাতায়াত করছেন মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে। রেল কর্তাদের দায়িত্বহীনতায় যাত্রীসেবা ভেঙে পড়েছে। এদিকে অদ্ভুত তত্ত্ব হাজির করেছেন বাংলাদেশ রেলওয়ে পশ্চিম অঞ্চলের প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তা এ এম এম শাহনেওয়াজ। তিনি বলছেন, বিনা টিকেটের যাত্রীরোধে ঢালাওভাবে টিকেট দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ। এতে করে সিটনম্বরসহ টিকেটধারী যাত্রীদের অসুবিধা হলে তাদের করার কিছু নেই। তিনি আরো বলেন, স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে ওয়াকিবহাল। তিনিই সমাধান দিতে পারছেন না, তাই আমাদের পক্ষেও সমাধান দেয়া সম্ভব নয়। যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে এবং সরেজমিন অনুসন্ধান চালিয়ে জানা গেছে, পশ্চিমাঞ্চল বিভিন্ন রুটে চলাচলকারী সাগরদাঁড়ি এক্সপ্রেসসহ অন্যান্য সব আন্তঃনগর ট্রেনের যাত্রীসেবা সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে। রেল কর্মকর্তাদের খামখেয়ালিপনার কারণে এসব রুটে শত শত যাত্রী মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন। ১০০ আসন সংখ্যার বগিতে রেল কর্তৃপক্ষ ২৫০-৩০০ যাত্রীর কাছে টিকেট বিক্রি করছে, ফলে সিট নম্বরধারী যাত্রীরা ট্রেনে উঠে তার জন্য নির্ধারিত ছিটটি পাচ্ছেন না। অভিযোগ করার জন্য বগিতে নেই কোনো রেলের গার্ড, এটেন্ডেন্ট কিংবা জিআরপি পুলিশ। এভাবেই চরম ভোগান্তি শিকার হয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে যাত্রীদের। গত ৪ মে দর্শনা হল্ট স্টেশন থেকে সন্ধ্যায় রাজশাহী ফিরে আসতে গিয়ে অনেক যাত্রী ট্রেনে উঠতে পারেননি। এ স্টেশন দিয়ে ভারত থেকে চিকিৎসা নেয়া শত শত রোগী সাগরদাঁড়ি এক্সপ্রেস ট্রেনটিতে চড়ে নিজ নিজ গন্তব্যে ফিরে আসেন। সন্ধ্যা ৬টা ৫২ মিনিটের ট্রেন স্টেশনে পৌছে ৭টা ৪৩ মিনিটে। স্টেশনের মাইকে কোনো এনাউন্সমেন্টও ছিল না। ৭টা ৪৩ মিনিটে এসে ট্রেনটি ২ মিনিটের মাথায় যখন ছেড়ে যায় তখনো অনেক যাত্রী উঠতে পারেননি। ট্রেনের মধ্যে চাপাচাপিতে অনেকের পকেটমার হয়ে যায়, টয়লেট থাকলেও অতিরিক্ত ঠাসাঠাসির কারণে কেউ তাদের প্রাকৃতিক প্রয়োজন সারতে পারেননি। এ অবস্থা শুধু সাগরদাঁড়ি নয়, মধুমতি, সুন্দরবন, তিতুমীর, চিত্রা, পদ্মা, সিল্ক সিটি, ধূমকেতু, বরেন্দ্র এক্সপ্রেসসহ সব আন্তঃনগর ট্রেনেই। একজন কলেজ শিক্ষক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যাত্রীদের কথা বিবেচনা করে গত ২৫ এপ্রিল থেকে সরাসরি রাজশাহী থেকে ঢাকা বিরতিহীন বনলতা এক্সপ্রেস ট্রেনটি চালু করেছেন। রেল কর্তৃপক্ষের এমন উদাসীনতা চলতে থাকলে প্রধানমন্ত্রীর এসব ভালো উদ্যোগ বিফলে যাবে। রেল কর্মকর্তাদের তদারকির অভাবে ট্রেনের ভেতর হকার, হিজড়া, পকেটমারদের উৎপাত আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েই চলেছে, এদের কাছেই সাধারণ যাত্রীরা এখন জিম্মি। এ ছাড়া বেশ কিছু দিন ধরে দুষ্কৃতকারীদের পাথর নিক্ষেপে যাত্রীরা প্রতিনিয়ত গুরুতর আহত হচ্ছেন, এমনকি মৃত্যুও হচ্ছে। গত সোমবার দুপরে ট্রেনে পাথর নিক্ষেপে পৃথক দুটি ঘটনায় আহত শিশু জিসান ও জুঁথিকে দেখতে হাসপাতালে যান পশ্চিমাঞ্চল রেলের মহাব্যবস্থাপক খোন্দকার শহিদুল ইসলাম। এ সময় তিনি আহত শিশুদের চিকিৎসার দায়িত্ব নেয়ার পাশাপাশি দুষ্কৃতকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের কথা জানান। তিনি বলেন, গত এক বছরে চলন্ত ট্রেনে ৩০টির মতো পাথর নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। এতে আহত হয়েছেন ১৭ জন, নিহত হয়েছেন এক রেল কর্মকর্তাও।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App