×

জাতীয়

আহসান উল্লাহ মাস্টারের মৃত্যুবার্ষিকী আজ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৭ মে ২০১৯, ১১:৪৮ এএম

আহসান উল্লাহ মাস্টারের মৃত্যুবার্ষিকী আজ
সাবেক এমপি ও শ্রমিক নেতা শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টারের ১৫তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ মঙ্গলবার। দিনটি পালনে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠন নিয়েছে নানা কর্মসূচি। হত্যাকাণ্ডের ১৫ বছরেও খুনিদের বিচারের রায় কার্যকর না হওয়ায় হতাশ ব্যক্ত করেছেন স্থানীয় নেতাকর্মী, স্বজন ও এলাকাবাসী। তারা আদালতের দেয়া ফাঁসির রায় অবিলম্বে কার্যকর দেখতে চান। ২০০৪ সালে ৭ মে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে গাজীপুরের টঙ্গীর নোয়াগাঁও এম এ মজিদ মিয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলনের দিন দুপুরে সন্ত্রসীদের গুলিতে নিহত হন সাবেক এমপি ও শ্রমিক নেতা আহসান উল্লাহ মাস্টার। নৃশংস এ হত্যাকাণ্ডে বিক্ষোভে ফুঁসে ওঠে পুরো গাজীপুর। বিভিন্ন স্থানে হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে চলে সাধারণ মানুষের আন্দোলন। এ ঘটনায় পরদিন ৮ মে নিহতের ভাই মতিউর রহমান টঙ্গী থানায় ১৭ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরো ১০-১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় ২০০৪ সালের ১০ জুলাই অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। বিচার শেষে ২০০৫ সালের ১৬ এপ্রিল ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১-এর বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন রায়ে বিএনপি নেতা নুরুল ইসলাম সরকারসহ ২২ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৬ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। এ ছাড়া ২ জনকে খালাস দেয়া হয়। পরে আপিল বিভাগে এ মামলার ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের জেল আপিলের শুনানি শেষে ৬ জনের ফাঁসি, ৮ জনকে যাবজ্জীবন এবং ১১ জনকে বেকসুর খালাস দেন আদালত। ২০১৬ সালের ১৫ জুন বিচারপতি ওবায়দুল হাসান এবং বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আহসান উল্লাহ মাস্টারের ১৫তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে গাজীপুর ও টঙ্গীতে নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নিহত আহসান উল্লাহ মাস্টারের স্বজন ও বিশিষ্ট সাংবাদিক আতাউর রহমান। তিনি জানান, দিবসটি উপলক্ষে গাজীপুর এবং টঙ্গীর বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনসহ বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের উদ্যোগে মিলাদ, দোয়া ও খাবার বিতরণ করা হবে। এসব কর্মসূচিতে কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারাসহ সর্বস্তরের মানুষ অংশ নেবেন। এ ছাড়া এ দিন জেলার বিভিন্ন উপজেলায় দলীয় কার্যালয়ে পবিত্র কুরআনখানি, শোক পতাকা, জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন, নেতাকর্মীদের কালোব্যাজ ধারণ, সকালে শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টারের গ্রামের বাড়ি হায়দরাবাদের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ, আলোচনা সভা, মিলাদ মাহফিল ও দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টারের ছেলে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল এমপি তার বাবার ১৫তম শাহাদাতবার্ষিকীর বিভিন্ন কর্মসূচিতে সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহণের জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন। এদিকে ১৫ বছরেও বিচার না পেয়ে হতাশ ও মর্মাহত নিহতের মা বেগম রুসমুতুন্নেছা। নৃশংস এ হত্যাকাণ্ডের বিচারের রায় কার্যকর করার জন্য সরকারের কাছে দাবি করে তিনি বলেন, আহসান উল্লাহ মাস্টারের বাবা মারা গেছেন, আমিও অসুস্থ। এ অবস্থায় মরার আগে সন্তান হত্যার বিচার দেখে যেতে চাই। একই দাবি করে এলাকাবাসী বলছেন, শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার একজন আদর্শ শিক্ষক ছিলেন, গরিব খেটে খাওয়া মানুষের জন্য তিনি কাজ করতেন । তিনি ছিলেন অনুকরণীয় একজন শ্রমিক নেতা। ১৯৫০ সালের ৯ নভেম্বর গাজীপুরের সাবেক পূবাইল ইউনিয়নের হায়দরাবাদ গ্রামে শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা শাহ্ সুফি আলহাজ আব্দুল কাদের, মা বেগম রুসমুতুন্নেছা। তিনি গাজীপুর-২ (গাজীপুর সদর, টঙ্গী) আসন থেকে ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে পর পর দুবার আওয়ামী লীগ মনোনীত সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯০ সালে গাজীপুর সদর উপজেলা চেয়ারম্যান এবং ১৯৮৩ ও ১৯৮৭ সালে দুই দফা পূবাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এ ছাড়া তিনি আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সদস্য, শিক্ষক সমিতিসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন, আন্তর্জাতিক শ্রমিক সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তিনি ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন। স্বাধীন হওয়ার পর একদিকে শিক্ষক অন্যদিকে রাজনীতি ও সমাজসেবায় আমৃত্যু নিয়োজিত ছিলেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App