×

মুক্তচিন্তা

সরকারকেই কৃষকের পাশে দাঁড়াতে হবে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৫ মে ২০১৯, ০৯:১৬ পিএম

ফণীর প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কয়েক হাজার হেক্টর জমির ফসল। বিভিন্ন উপকূলীয় এলাকায় বেড়িবাঁধ ভেঙে এই ফসলহানিতে কৃষকরা দিশাহারা হয়ে পড়েছেন। ধানক্ষেতের সঙ্গে তলিয়ে গেছে সবজির ক্ষেতও। এরও অশুভ প্রভাব পড়বে আসন্ন রমজানের বাজারে। বাঁধ ভাঙা পানিতে লাখ লাখ কৃষকের প্রায় সব ফসল তলিয়ে গেল, এই ক্ষতি তারা কীভাবে কাটিয়ে উঠবেন? সরকারকে এখনই তাদের বিষয়ে ভাবতে হবে।

যেসব জমিতে পাকা ফসল রয়েছে তা কীভাবে দ্রুত সংগ্রহ করা যায় এই বিষয়েও কৃষককে সহায়তা দেয়া যায়। তাহলে ফসলহানি কিছুটা হলেও হ্রাস পাবে। বিভিন্ন পত্রপত্রিকার খবরে জানা যায়, বরগুনায় ৪৫ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বগুড়ার ধুনট উপজেলার প্রায় ১০ হেক্টর জমির পাকা বোরো ধান মাটিতে হেলে পড়েছে। পটুয়াখালীর আট উপজেলায় ছয় হাজার ১৮ একর ফসলের ক্ষতি হয়েছে।

ভোলায় এক হাজার ৪৩৭ হেক্টর জমির বোরো ও অন্যান্য ফসল নষ্ট হয়েছে। চরফ্যাশন উপজেলায় পাকা বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কক্সবাজারের কুতুবদিয়া দ্বীপের ৪০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের মধ্যে ১৪ কিলোমিটার ভাঙন বাঁধ এলাকার অন্তত ২০টি পয়েন্ট দিয়ে জোয়ারের নোনা পানি ঢুকে পড়ে। এতে তলিয়ে কিছু লবণ মাঠ প্লাবিত হয়ে উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। বরিশালে বিস্তীর্ণ এলাকার ৯ হাজার হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এ ছাড়া অন্যান্য উপকূলীয় এলাকার ফসলহানি কম নয়। ওই ফসল বিক্রির টাকা দিয়ে কৃষকদের পরবর্তী মৌসুমের ফসল ফলানোর জন্য বীজ, সার, কীটনাশক কিনতে হয়, মেটাতে হয় পানি ও ক্ষেতমজুরদের খরচ। এখন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের ভাগ্যে কী ঘটবে, তা নিয়ে তারা অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছেন।

কৃষকদের এই দুরবস্থা কেবল তাদের জন্যই কষ্টকর নয়, এটা জাতীয় অর্থনীতির জন্যও একটা বড় সমস্যা। যদিও ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে দেশের বিভিন্ন জেলায় যতটুকু ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা কাটিয়ে উঠতে সরকার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। এমন খবরে আমরা আশ্বস্ত হতে চাই।

সরকারকে পানিতে প্লাবিত সব অঞ্চলে কৃষকদের মধ্যে বিনামূল্যে ধানের বীজ ও সারসহ কৃষি উপকরণ বিতরণের পদক্ষেপ নিতে হবে, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা যাতে পানি সরে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নতুন করে চাষাবাদ শুরু করতে পারেন। সরকারের উচিত এই কৃষকদের মধ্যে যাদের ঋণ রয়েছে, তাদের ব্যাপারে কিছু ছাড়ের ব্যবস্থা করা।

অন্ততপক্ষে এই সময়ে তাদের ঋণ আদায় বন্ধ রাখা উচিত। বেসরকারি পর্যায়ের আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীদের ব্যাপারেও কঠোর নজরদারির ব্যবস্থা নিশ্চিত করা দরকার। কারণ এ ধরনের পরিস্থিতিতে অতি মুনাফাখোর ব্যবসায়ী ও কালোবাজারিরাই সাধারণত মানুষের বিপদ বাড়ায়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App