×

মুক্তচিন্তা

বাঁধ নির্মাণ ও সংস্কারে স্থায়ী সমাধান দরকার

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৪ মে ২০১৯, ০৮:৩৮ পিএম

ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে দেশের উপকূলীয় অঞ্চলের বেড়িবাঁধ ভেঙে হু হু করে পানি ঢুকছে নিম্নাঞ্চলে। ফলে তলিয়ে যাচ্ছে ওইসব এলাকার ঘরবাড়ি, ফসলি মাঠ। ইতোমধ্যে পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জে বেড়িবাঁধ ভেঙে পাঁচ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। রাঙ্গাবালীতে বিধ্বস্ত বেড়িবাঁধ দিয়ে জোয়ারের পানি ঢুকে তলিয়ে গেছে চারটি গ্রামের নিম্নাঞ্চল। বাগেরহাটের শরণখোলায় বেড়িবাঁধ ভেঙে দুই গ্রাম প্লাবিত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। আজকালের মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ অন্যান্য নিম্নাঞ্চলে বেড়িবাঁধ ভেঙে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ ছাড়া দেশের উত্তর-পূর্ব ও মধ্যাঞ্চলে পানি বাড়ছে প্রতি মুহূর্তে।

ফুঁসে উঠছে নদ-নদী। এতে আগাম বন্যার পদধ্বনির কথা বলছেন আবহাওয়াবিদরা। এটা আমাদের জন্য শঙ্কার ব্যাপার বৈকি। পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকার ও সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি গ্রহণ জরুরি। নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার পাশাপাশি শুরু হয়েছে বিভিন্ন স্থানে নদীভাঙনও। হঠাৎ পানি বেড়ে যাওয়ায় তা নদীর কূল উপচে চরাঞ্চলের নিম্নাঞ্চলে প্রবেশ করছে। এতে ফসলি জমি তলিয়ে যাচ্ছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় নদী পাড়ের মানুষের মধ্যে শঙ্কা ক্রমেই বাড়ছে। চরাঞ্চলে যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে। খবরে প্রকাশ, বরগুনা ও পটুয়াখালীতে কয়েকশ ঘরবাড়ি পানির নিচে।

দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানি ও খাবার সংকট। ডায়রিয়াসহ পানিবাহিত রোগের লক্ষণ এখনো দেখা না গেলেও অচিরেই আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। নদী খনন ও শুষ্ক মৌসুমে পরিকল্পিতভাবে সংস্কার কাজ না করাসহ ওয়াপদা ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাফিলতির জন্য তাদের এমন অনাকাক্সিক্ষত দুর্ভোগ বলে মনে করছেন ক্ষতিগ্রস্তরা। বছর বছর ভেঙে যাওয়া নদীতীর রক্ষা বাঁধগুলোর সংস্কার করা কিংবা স্থায়ীভাবে বাঁধের কাজ না করায় তাদের এই চরম খেসারত দিতে হচ্ছে। সামনে বন্যার যে আশঙ্কা করা হচ্ছে তা আমলে নিয়েই সরকারের এখন থেকে পরিস্থিতি মোকাবেলায় ব্যবস্থা নেয়া উচিত।

বন্যার মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ এড়ানো আমাদের সাধ্যাধীন নয়। তবে যথাযথ প্রস্তুতি নিলে মানুষের দুর্ভোগ, ক্ষয়ক্ষতি নিশ্চয় নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। নদী ভরাট হওয়ার কারণে যেমন বেড়েছে ভাঙন, তেমনি সামান্য ঢলে দুকূল উপচে আকস্মিক বন্যা ঘটায়। নদ-নদীর নাব্য রক্ষা করে একদিকে যেমন বন্যার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব, তেমনি সম্ভব ভাঙন ঠেকানো।

গত বছর বন্যায় যেসব বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেগুলো এখনো পুরোপুরি মেরামত ও সংস্কার করা হয়নি। অনেক জায়গায় বাঁধ সংস্কারে বরাদ্দও ঠিকমতো ছাড় পায়নি। কেবল বন্যা হলেই দেখি ভেঙে যাওয়া বা ভেসে যাওয়া বাঁধ সংস্কারে বালির বস্তা, বোল্ডার ইত্যাদি ফেলে মেরামত করতে। এতে কেবল অর্থের অপচয় হয়, বন্যার পানি আর ঠেকানো যায় না। আমরা মনে করি, বন্যা নিয়ন্ত্রণকারী বাঁধ নির্মাণ, সংস্কার ও মেরামতের স্থায়ী সমাধান দরকার।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App