×

মুক্তচিন্তা

সম্মিলিতভাবে এ দুর্যোগ মোকাবেলা করতে হবে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০২ মে ২০১৯, ০৯:৪৪ পিএম

ভৌগোলিক অবস্থানগত কারণে পৃথিবীর অন্যতম প্রাকৃতিক দুর্যোগপূর্ণ এলাকায় পরিণত হয়েছে বাংলাদেশ। উত্তরে হিমালয় আর দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর রয়েছে। জলোচ্ছ্বাস-সুনামিসহ বড় বড় দুর্যোগ সৃষ্টি বা উৎপত্তি হয় সাগর থেকে। গত দুদিন ধরে ঘূর্ণিঝড় ফণী নিয়ে আমরা আতঙ্কিত। সর্বশেষ খবরে জানা যায়, পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’ ঘনীভূত হয়ে বাংলাদেশের দিকে এগোচ্ছে।

আবহাওয়াবিদরা বলছেন, ‘ফণী’ উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে আজকালের মধ্যে ভারতের উড়িষ্যা-পশ্চিমবঙ্গ হয়ে সন্ধ্যা নাগাদ বাংলাদেশে আঘাত হানতে পারে। সরকার ইতোমধ্যে এই দুর্যোগ মোকাবেলায় নানা প্রস্তুতি নিয়েছে। পাশাপাশি জনগণকেও এ ব্যাপারে সচেতন হতে হবে। তাহলে দুর্যোগে প্রাণহানি, ক্ষয়ক্ষতি কমে আসবে। এক সময় এ দেশের মানুষ প্রতি বছর প্রাকৃতিক দুর্যোগকে মোকাবেলা করেছেন।

৫০ দশক থেকে ৮০ দশক পর্যন্ত এ দেশের শহর ব্যতীত সব বাড়িঘর বাঁশ, বেত, ছন ও মাটির ছিল। সাধারণত বৃষ্টি বা দমকা হাওয়ায় লণ্ডভণ্ড করে দিত বাড়িঘর। এখন সে অবস্থানের অনেক পরিবর্তন আসছে। জানা গেছে, গত দশ বছরে দেশে মোট পাঁচটি বড় ঘূর্ণিঝড় হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী ছিল ‘মোরা’। ২০১৭ সালের ৩০ মে অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় মোরা আঘাত হেনেছিল। এর গতি ছিল ঘণ্টায় ১৪৬ কিলোমিটার।

এর আগে, ২০১৬ সালের ২১ মে ঘূর্ণিঝড় ‘রোয়ানু’ আঘাত হানে। এর গতিবেগ ছিল ১২৮ কিলোমিটার। ২০১৩ সালের ১৬ মে আসে ‘মহাসেন’, যার গতি ছিল ১০০ কিলোমিটার। আর ২০১৫ সালের ৩০ জুলাই আসে ‘কামেন’। এর গতি ছিল ৬৫ কিলোমিটার। আর ২০০৯ সালের ২৫ মে আঘাত হানে ‘আইলা’। এর গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১২০ কিলোমিটার।

ফণীর গতি আইলার চেয়েও অনেক বেশি। ঝড়টি যদি ভারতে আগে আঘাত হানে, তাহলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সেখানে বেশি হবে। পরে ভারত হয়ে এটি সাতক্ষীরা-খুলনা অঞ্চল দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করার কথা। তবে আমাদের ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা কমে যাবে, কারণ সেখানে আমাদের সুন্দরবন আছে। এই বন বড় বাধা হিসেবে কাজ করবে। ফলে ঝড়ের গতি আরো কমে যাবে। আইলার সময় বাংলাদেশের কোনো অভিজ্ঞতা ছিল না।

সে সময় ক্ষয়ক্ষতি বেশি ছিল কারণ আমাদের প্রস্তুতি ছিল না। কিন্তু এখন বাংলাদেশ অনেক আপডেটেড। ঝড় সৃষ্টির পর প্রায় সাতদিন সময় পাওয়া গেছে। সরকারের প্রস্তুতি ভালো থাকলে ক্ষতির পরিমাণ খুব কম হওয়ার কথা। দুর্যোগ, ত্রাণ ও ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের নানা উদ্যোগের কথা আমরা জেনেছি।

এ কথা অনস্বীকার্য, প্রাকৃতিক দুর্যোগ কমবেশি আসবেই। প্রকৃতিকে নিয়ন্ত্রণ করা আজও মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়। তবে দুর্যোগের ফলে সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতি মানুষের চেষ্টায় যে কমিয়ে আনা সম্ভব তাতে সন্দেহ নেই।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App