×

জাতীয়

ঘূর্নিঝড় ফণী মোকাবেলায় প্রস্তুত বরিশাল

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০২ মে ২০১৯, ০৫:০৫ পিএম

ঘূর্নিঝড় ফণী মোকাবেলায় প্রস্তুত বরিশাল
বরিশালে ঘূর্নিঝড় ফণী মোকাবেলায় সবধরনের প্রস্তুতি নিয়েছেন বরিশালের বিভাগ ও জেলা প্রশাসন। এ লক্ষ্যে চালু করা হয়েছে একটি কন্ট্রোল রুম। জেলা প্রশাসকের সভাকক্ষে বেশ কয়েকটি জরুরি প্রস্তুতি সভা করে জেলা প্রশাসন এই প্রস্তুতি গ্রহন করেন। এদিকে দখিনের সবরুটে নৌযান চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক শহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রস্তুতি সভায় সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন বিভাগের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। সভায় ঘূর্নিঝড় ফণী মোকাবেলায় এবং জানমাল রক্ষায় করণীয় বিষয়ে আলোচনা হয়। ইতোমধ্যে সকল উপজেলায় জরুরি সভা করে ইউনিয়ন ও গ্রাম পর্যায়ে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এছাড়া জেলা সদরে একটি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। কন্ট্রোল রুমের নম্বর হল টিএন্ডটি-০৪৩১৬৩৮৬৩ এবং মোবাইল নম্বর ০১৭৪১১৯৬৯৩৯। বরিশাল সিপিপির উপ-পরিচালক মো. আব্দুর রশিদ জানান, সিপিপির আওতাধীন বরিশাল জেলার ৫ উপজেলায় আশ্রয়কেন্দ্রসহ সেচ্ছাসেবকদের প্রস্তুত রাখা হয়েছে। সেচ্ছাসেবকরা দুর্যোগ মোকাবিলায় সতর্কতামূলক প্রচার-প্রচারণাসহ আগাম সব কর্মকান্ড পরিচালনা করছে। এরইমধ্যে ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) আওতাধীন বরিশাল বিভাগের ১ হাজার ১০৮টি আশ্রয়কেন্দ্র ও ২৪ হাজার ৩৩০ জন সেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রাখা হয়েছে। অপরদিকে বরিশাল রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির ইউনিট লেভেল অফিসার (ইউএলও) গোলাম কবির জানান, বরিশাল জেলায় তাদের প্রায় ৪শ’ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ভলান্টিয়ার রয়েছে। যাদের প্রস্তুত রাখার পাশাপাশি উদ্ধারকারী সরঞ্জামগুলোও প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পাশাপাশি সার্বিক বিষয়ে বরিশালে জেলা প্রশাসক এস এম অজিয়র রহমান বলেন, শুক্রবার আঘাত হানতে পারে ‘ফণী’। তাই এটির মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছে বরিশাল। এরইমধ্যে বিভিন্ন সেচ্ছাসেবী ও উন্নয়ন সংস্থার সঙ্গে দফায় দফায় সভা করা হয়েছে। উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে দুর্যোগ মোকাবিলা নিয়ে আগাম প্রস্তুতিমুলক কর্মকান্ড পরিচালিত হচ্ছে। দুর্যোগের সতর্কতা নিয়ে জনসাধারণকে অবহিত করার জন্য ইউনিয়ন পর্যায়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, বিভিন্ন সংস্থার সেচ্ছাসেবকদের প্রস্তুত রাখার পাশাপাশি সব সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। ১ লাখ ২৫ হাজার লোকের ধারণক্ষমতা সম্পন্ন জেলার ২৩২টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখার পাশাপাশি বিভিন্ন বিদ্যালয় ভবন, কমিউনিটি সেন্টার ও উপাসনালয় ভবনও প্রস্তুত রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। দুর্যোগ পরবর্তী ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে শুকনো খাবারসহ বিভিন্ন সহায়তার ব্যবস্থাও রাখার হয়েছে। ‘যেহেতু আবহাওয়া বার্তায় জলোচ্ছ্বস ও নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার কথা বলা হয়েছে। পাশাপাশি এমন দুর্যোগের পর বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দেয়। তাই পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ও চাপকল নিরাপদে ঢেকে রাখার জন্য গ্রাম পর্যায়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসক বলেন, জনসাধারণকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের উদ্ধার কাজের জন্য সড়ক পথের পাশাপাশি নৌ-পথেও পর্যাপ্ত যানবাহনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সার্বিকভাবে জেলা, উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, স্বাস্থ্য বিভাগ, ফায়ার সার্ভিস, সিপিবি, রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটিসহ সংশ্লিষ্ট সবাই দুর্যোগের বিষয়ে যার যার অবস্থান থেকে কাজ শুরু করে দিয়েছেন। এদিকে, জেলার সিভিল সার্জন ডা. মনোয়ার হোসেন জানান, প্রতিটি উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে মেডিকেল টিম নিরাপদ, গুরুত্বপূর্ণ ও জরুরি সরঞ্জামসহ প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এদিকে বরিশাল-ঢাকা রুট সহ অভ্যন্তরীণ সকল নৌ-রুটের যানবাহন চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে বিআইডব্লিউটিএ। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে বরিশাল বিআইডব্লিউটিএ’র উপ-পরিচালক আজমল হুদা মিঠু সরকার এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড় ফণীর কারণে যে কোনো বিপদ এড়াতেই এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তিনি আরও জানান দক্ষিণা লের পায়রা বন্দরে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত ঘোষণা করেছে আবহাওয়া দপ্তর। যে কোনো মুহূর্তে আবহাওয়ার আরও অবনতি হওয়ার সম্ভাবনা থেকেই এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App