ভারতীয় প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) খেলে রবিবার দেশে ফিরেছেন সাকিব আল হাসান। কলকাতার স্পাইস এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটে বিকেল ৫টায় ঢাকায় পা রাখেন দেশসেরা এই অলরাউন্ডার। দেশে থেকেও গতকাল মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে বিশ^কাপের ফটোসেশনে অনুপস্থিত ছিলেন সাকিব, বিষয়টিকে দুঃখজনক বলে উল্লেখ করেন পাপন। অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজার সংবাদ সম্মেলনের পর বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসানের সঙ্গে দলের সব খেলোয়াড়ের বৈঠক ও মধ্যাহ্নভোজ ছিল। বিশ^কাপগামী বাংলাদেশ দলের ফটোসেশন হতে হতে বিকেল প্রায় ৪টা। বিশ^কাপে বাংলাদেশ কোন জার্সি পরে খেলবে সেটি দেখতে সবার মধ্যে ছিল ব্যাপক কৌত‚হল। ফটোসেশনে বিশ^কাপ দলের প্রায় সবাইকে দেখা গেলেও ছিলেন না শুধু সাকিব। দলের একজন অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য সাকিব কেন ফটোসেশনে নেইÑ এমন প্রশ্নের উত্তরে কী বলবেন, ভেবেই পাচ্ছিলেন না বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান, দুঃখজনক, আর কী বলব? এটা দুঃখজনক, যেহেতু দলের ফটোসেশন ছিল। আমি এসেই জিজ্ঞেস করেছি। এমন কী এখানে যখন ঢুকি তখন তাকে ফোন করেছিলাম, কোথায় তুমি? বলল, আমি তো চলে এসেছি (দেশে)। ও যে এসেছে জানিও না, পত্রিকায় পড়েছি। পরে বলল, আপনার বাসায় আসব রাতে। বলেছি, এখন একটু দেখা হোক। বলল, আমি তো বেরিয়ে গেছি। জিজ্ঞেস করে জানলাম, ওকে আগেই বলা হয়েছে ফটোসেশন আছে। জাতীয় দল যাচ্ছে, ফটোসেশনে সবাই একসঙ্গে থাকবে। আমরা আশা করেছিলাম কিন্তু সে নেই। প্রায় ৭০ দিনের সফরে যাচ্ছে টিম বাংলাদেশ। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ দলকে বেশ ঘটা করেই বিদায় জানিয়েছে বিসিবি। খেলোয়াড় কিংবা বিসিবির শীর্ষ কর্তাদের ভিড়ে শুধু একজন মিসিং! বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান আকরাম খান বেশ বিরক্তি নিয়ে মিসিং শব্দটাই ব্যবহার করলেন। গত নভেম্বরে বিসিবি যখন তামিম-মুশফিকের সঙ্গে তাকেও আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১০ হাজার রান করায় বিশেষ সম্মাননা দিয়েছিল, সে অনুষ্ঠানেও সাকিব ছিলেন না। দলের একজন গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়ের এ ধরনের আনুষ্ঠানিকতা এড়িয়ে চলা দলের ঐকতানে সামান্য হলেও ব্যাঘাত ঘটায়। তাই তো বিসিবি সভাপতি খানিকটা অসহায় কণ্ঠেই বললেন, আমার মনে হয় দলের বাকিরা এত দিনে অভ্যস্ত হয়ে গেছে (সাকিবকে নিয়ে)। এ ছাড়া আর কী বলব! বিশ্বকাপ দল যাচ্ছে, সেটির ফটোসেশনে থাকতে পারল না। আমি মনে করি ওরই কপাল খারাপ! দলের সবাই সাকিবের সঙ্গে অভ্যস্ত হলেও বিসিবি যে এটি সহজেই নিতে পারছে না, সেটি পরিষ্কার জানিয়ে দিলেন নাজমুল, প্রশ্নই আসে না। দল পরশু চলে যাচ্ছে, এটা নিয়ে এখন আর কিছু বলতে চাচ্ছি না। সাকিবের কাছ থেকে এ রকম আচরণ কেউই আশা করে না। কারণ অনেক ক্রিকেট ভক্ত তাকে অনুসরণ-অনুকরণ করে। ক্রিকেট ভদ্রলোকের খেলা। সাকিব ইতোপূর্বে বহুবার অশোভন আচরণ করেছেন। অধিনায়ক থাকাকালে তিনি একটি ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনের সময় প্রকাশ্যে সাংবাদিকদের সঙ্গে রেগে রেগে কথা বলেছেন। সাম্প্রতিককালে একজন ভক্তের দিকে তার তেড়ে যাওয়ার দৃশ্যের ভিডিও ক্লিপ ইউটিউবে আছে। বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের তকমা পাওয়ার পর থেকেই বোধকরি তিনি নিজেকে অপরিহার্য মনে করেই এ রকম করছেন। কিন্তু সাকিবের মনে রাখা উচিত, শুধু ভালো ক্রিকেটার হলেই হবে না, ভালো আচরণের মানুষ হওয়াটাও জরুরি।