×

জাতীয়

কমিউনিটি ক্লিনিকে আস্থা বাড়ছে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৯ এপ্রিল ২০১৯, ০১:৫১ পিএম

কমিউনিটি ক্লিনিকে আস্থা বাড়ছে
দিনদিন কমিউনিটি ক্লিনিকে সেবাগ্রহীতা ও সেবার মান বেড়েই চলেছে। মা ও শিশুর পাশাপাশি সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যসেবায় এক নীরব বিপ্লব ঘটিয়েছে এ প্রকল্প। কমিউনিটি ক্লিনিকে স্বাভাবিক প্রসবের ব্যবস্থাও চালু হয়েছে। এসব ক্লিনিক এখন সাধারণ মানুষের ভরসাস্থলে পরিণত হয়েছে। সেই সঙ্গে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবায় বিশ্বের মডেল হয়ে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রকল্প। জাতীয় জনসংখ্যা গবেষণা ও প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের (নিপোর্ট) এক জরিপে দেখা গেছে, বাড়ির পাশের ক্লিনিক থেকে ওষুধ আর পরামর্শ নিয়ে ৮০ শতাংশ মানুষ সন্তুষ্ট। কমিউনিটি ক্লিনিক যে মানুষের মাঝে আস্থা বাড়িয়েছে সেই বিষয়টি উঠে এসেছে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের বক্তব্যেও। কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে গত বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিক এত ভালো কাজ করছে যে, দাবি উঠেছে ২৪ ঘণ্টা যেন তা খোলা রাখা হয়। এখন বেলা তিনটা পর্যন্ত খোলা থাকে। দাবিটাকে আমরা গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছি। জনগণের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সরকার কমিউনিটি ক্লিনিক ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখার বিষয়ে চিন্তা করছে। এ ছাড়া কমিউনিটি ক্লিনিকের নতুন ডিজাইন করা হয়েছে। সেই ডিজাইন অনুযায়ী এখন চারটি রুম, দুটি টয়লেট, রোগীদের জন্য একটি ওয়েটিং রুমও রয়েছে। তিনি বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিক ট্রাস্টের অধীনে চলে গেছে। এতে আরো ভালো হবে, আর বড় হবে। আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর ১৯৯৬ সালে সারা দেশে সাড়ে ১৩ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা নেয়া হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৯৮ সালে প্রকল্পের কার্যক্রম শুরু হয়। ২০০১ সাল পর্যন্ত সারা দেশে ১০ হাজার ৭২৩টি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠা করা হয়। ২০০১ সালে বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট ক্ষমতায় আসার পর এই প্রকল্পের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। এরপর ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর প্রকল্পটি আবারো চালু করে। কমিউনিটি ক্লিনিক প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক ডা. আবুল হাসেম খান ভোরের কাগজকে বলেন, সারা দেশে ১৩ হাজার ৭৮০টি কমিউনিটি ক্লিনিক চালু আছে। ভারতসহ বেশকিছু দেশের সহযোগিতায় নির্মাণাধীন আছে আরো বেশ কয়েকটি সেন্টার। ২০২২ সালের মধ্যে নতুন করে আরো এক হাজার ২৯টি কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মিত হবে। চলতি বছরের মধ্যেই চারশ কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মিত হবে। প্রকল্প পরিচালক আরো বলেন, চালুকৃত ক্লিনিক থেকে প্রতিদিন গড়ে সাত লাখ মানুষ প্রাথমিক চিকিৎসা নিচ্ছেন। জনগণের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে এলাকার জনগণ এবং বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার সহযোগিতায় সাড়ে ৩ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিকে স্বাভাবিক প্রসব সেবা চালু আছে। শিগগিরই এক হাজার কমিউনিটি ক্লিনিকে লেবার টেবিলসহ প্রসব সেবার সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন জিনিস সরবরাহ করা হবে। ক্লিনিকগুলোতে পরিবার পরিকল্পনাসংক্রান্ত তিন ধরনের উপকরণসহ বিনামূল্যে ৩০ ধরনের ওষুধ সরবরাহ করা হচ্ছে। কমিউনিটি ক্লিনিক প্রকল্পের মূল্যায়ন করতে গিয়ে প্রকল্পের সাবেক পরিচালক ডা. মাখদুমা নার্গিস বলেন, জনগণকে সম্পৃক্ত করে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করলে তা যে সফল হবেই, এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ এই কমিউনিটি ক্লিনিক। কমিউনিটি ক্লিনিক এমন একটা উদ্ভাবনী শক্তি, যার মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়া সম্ভব হয়েছে। কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে দরিদ্র মানুষের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করা হয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App