×

অর্থনীতি

৯ মাসে রাজস্ব বাড়লেও পূরণ হয়নি লক্ষ্যমাত্রা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৮ এপ্রিল ২০১৯, ১২:১৫ পিএম

৯ মাসে রাজস্ব বাড়লেও পূরণ হয়নি লক্ষ্যমাত্রা
চলতি ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জুলাই থেকে মার্চ পর্যন্ত সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দরে ৮৬৭ কোটি ৩৩ লাখ ৮৬ হাজার ৭৬৩ টাকা রাজস্ব আয় হয়েছে। আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় এ স্থলবন্দরে রাজস্ব আয় বাড়লেও পূরণ হয়নি চলতি অর্থবছরের প্রথম নয় মাসের লক্ষ্যমাত্রা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বন্দরে পণ্যবাহী গাড়ির সিরিয়াল-সংক্রান্ত সমস্যার কারণে প্রায়ই যানজট দেখা দেয়। এতে পণ্য খালাস-সংক্রান্ত জটিলতায় আমদানি কমেছে। আবার বন্দর দিয়ে উচ্চশুল্কের পণ্য আমদানি-রপ্তানি করা যায় না। এসব কারণে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। ভোমরা শুল্কস্টেশনের রাজস্ব বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, ভোমরা স্থলবন্দরে চলতি অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৯০৩ কোটি ৭২ লাখ টাকা। এর বিপরীতে আয় হয়েছে ৮৬৭ কোটি ৩৩ লাখ ৮৬ হাজার ৭৬৩ টাকা। অর্থাৎ ২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩৬ কোটি ৩৯ লাখ টাকা রাজস্ব আয় কম হয়েছে। তবে এক বছরের ব্যবধানে এ সময় রাজস্ব আয় বেড়েছে ২০৪ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। ২০১৭-১৮ অর্থবছর জুলাই থেকে মার্চ পর্যন্ত ৬৬২ কোটি ৯ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছিল। সূত্র জানায়, চলতি অর্থবছরের অক্টোবর, সেপ্টেম্বর ও জানুয়ারিতে মাসিক লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি রাজস্ব আয় হয়েছে। তবে বাকি মাসগুলোয় মাসিক লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। এ কারণে সামগ্রিকভাবে নয় মাসে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। সূত্র আরো জানায়, চলতি অর্থবছরে ভোমরা স্থলবন্দরে জুলাইয়ে ৬৪ কোটি ৮৬ লাখ টাকা, আগস্টে ৮৪ কোটি ৮৭ লাখ, সেপ্টেম্বরে ৫৮ কোটি ৬১ লাখ, অক্টোবরে ৮০ কোটি ৬২ লাখ, নভেম্বরে ১১১ কোটি ৫ লাখ, ডিসেম্বরে ১১৭ কোটি ২৭ লাখ, জানুয়ারিতে ১১৬ কোটি ৭৬ লাখ, ফেব্রæয়ারিতে ১৩৭ কোটি ৫৮ লাখ এবং মার্চে ১৩২ কোটি ১৪ লাখ টাকা রাজস্ব আয়ের মাসিক লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এর বিপরীতে জুলাইয়ে ৪৭ কোটি ৬৪ লাখ, ৯৪ হাজার ১২৭ টাকা, আগস্টে ৬০ কোটি ৪৮ লাখ ৪৫ হাজার ৭০৩, সেপ্টেম্বরে ৮৮ কোটি ৪৩ লাখ ৯৪ হাজার ২৭৩, অক্টোবরে ৮৫ কোটি ২৬ লাখ ৫২ হাজার ৬৬০, নভেম্বরে ১০৮ কোটি ২৮ লাখ, ডিসেম্বরে ৬৭ কোটি ৩৩ লাখ, জানুয়ারিতে ১৪০ কোটি ৪৩ লাখ, ফেব্রুয়ারিতে ৯৭ কোটি ৫৩ লাখ ও মার্চে ১১৭ কোটি ৫৮ লাখ টাকা রাজস্ব আয় হয়েছে। বন্দরের কর্মকর্তা ও ব্যবহারকারীরা জানান, ভোমরা স্থলবন্দর দিয়ে ৭৮টি পণ্য আমদানি-রপ্তানির অনুমতি রয়েছে। তবে অবকাঠামো ও শুল্কায়ন-সংক্রান্ত সমস্যার কারণে চাল, পেঁয়াজ, আপেল, মাছসহ ২০টির মতো পণ্য এ বন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি করা যায়। এসব পণ্যে আবার শুল্ক কম। এ কারণে রাজস্ব আয় কম হয়। এ ছাড়া পণ্যবাহী গাড়ির সিরিয়াল রক্ষা করতে গিয়ে বন্দরে প্রায়ই যানজট দেখা দেয়। এতে পণ্য খালাস সময়সাপেক্ষ হয়ে পড়ায় ব্যবসায়ীরা আমদানি কমিয়ে দিয়েছেন। এ কারণে এবার রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। ভোমরা স্থলবন্দর সিএন্ডএফ এজেন্টস এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান নাসিম বলেন, ভৌগোলিক দিক দিয়ে ভোমরা স্থলবন্দর বেশ সুবিধাজনক অবস্থানে আছে। দেশের অন্য যে কোনো বন্দরের তুলনায় ভারতের কলকাতা থেকে এ বন্দরের দ‚রত্ব সবচেয়ে কম। তবে নানা কারণে এ সম্ভাবনা কাজে লাগানো যাচ্ছে না। উচ্চশুল্কের পণ্য আমদানির সুযোগ দেয়া হলে বন্দরের রাজস্ব আয় বাড়বে। উল্লেখ্য, ১৯৯৬ সালের ১৫ মে শুল্কস্টেশন হিসেবে যাত্রা করে ভোমরা স্থলবন্দর। ওই সময় এ বন্দর দিয়ে ২১টি পণ্য আমদানির অনুমতি দেয়া হয়। ২০১০ সালে এ তালিকায় আরো ২৬টি পণ্য যুক্ত হয়। ২০১৮ সালের অক্টোবরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ভোমরা বন্দরে নতুন ৩১টি পণ্য আমদানি-রপ্তানির অনুমোদন দেয়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App