×

বিনোদন

পর্দা থেকে দূরে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৭ এপ্রিল ২০১৯, ০৩:১৯ পিএম

পর্দা থেকে দূরে
কিংবদন্তি চলচ্চিত্র অভিনেত্রী শবনম সম্প্রতি তার অভিমানের ঝাপি খুলেছেন। বলেছেন চলচ্চিত্রাঙ্গন সম্পর্কে তার যত অভিমানের কথা। ১৯৯৯ সালে তিনি শেষ অভিনয় করেছিলেন কোনো ছবিতে। ‘আম্মাজান’ মুক্তির বিশ বছর পূর্তি হচ্ছে আসছে জুনে। দুই দশক ধরে দর্শকরা বঞ্চিত শবনমের মনোমুগ্ধকর অভিনয় থেকে। অথচ এই চিত্রনায়িকাই ষাট, সত্তর, আশির দশকে দর্শকদের মন্ত্রমুগ্ধ করে রেখেছিলেন। অভিনয়-সামর্থ্য থাকার পরও শবনমের মতো সোনালি যুগের বেশ কয়েকজন চিত্রনায়িকার রুপালি পর্দায় অনুপস্থিতি ব্যথিত করে নস্টালজিক দর্শকদের। শবনমের পথে হেঁটে যাওয়া চিত্রনায়িকাদের মধ্যে আরো আছেন
সুচন্দা ১৯৯১ সালে ‘বাপ বেটা ৪২০’ ছবিতে অভিনয়ের পর ক্যামেরার সামনে দাঁড়ানোর আগ্রহ হারান সুচন্দা। স্বামী জহির রায়হানের ফেলে যাওয়া জুতায় পা গলিয়ে বনে যান চিত্রনির্মাতা। ‘সবুজ কোট কালো চশমা’ এবং ‘জীবন থেকে নেয়া’র মতো বিপরীতধর্মী দুটি ছবি নির্মাণ করে জিইয়ে রাখেন নিজের অস্তিত্ব। কিন্তু যে কাজল কালো চোখের ভ্রু কম্পনে ‘বেহুলা’র নায়িকা কাঁপিয়েছিলেন দেশ, সেই চোখ জোড়া আর পর্দায় দেখার ভাগ্য হয়নি দর্শকদের। কদাচিৎ অনুষ্ঠানে দেখা গেলেও অভিনয়কে যেন চিরবিদায়ই জানিয়েছেন সুচন্দা। অঞ্জনা চলচ্চিত্রের পার্টি মানেই অঞ্জনা। অনেকদিন নিদ্রাচ্ছন্ন থাকার পর এখন বেশ চটপটে অঞ্জনা। মাঝে তাকে কোথাও দেখা না গেলেও এখন তার সরব উপস্থিতি সর্বত্রই। কিন্তু আলোচনায় থাকাটাই যেন অঞ্জনার সার। কারণ তিনি অভিনয় ছেড়েছেন দুই দশকেরও বেশি সময় আগে। ১৯৯৫ সালে ‘লালু সর্দার’ ছবিতে অভিনয়ের পর হারিয়ে গিয়েছিলেন অঞ্জনা। একটা সময় নাচের মুদ্রায় দর্শকচিত্তে ঝঙ্কার তুলেছেন। সেই অঞ্জনার হৃদয়েই আর আকাক্সক্ষা জাগেনি দর্শকদের চিত্তজয়ের। তিনি ইস্তফা দিয়ে দিয়েছিলেন চলচ্চিত্র অভিনয়ে। রোজিনা সংখ্যাতত্ত্বের বিচারে রোজিনা এ দেশের প্রথম সারির চলচ্চিত্র অভিনেত্রী। সত্তর ও আশির দশকে বিরামহীনভাবে তিনি অভিনয় করে গেছেন শত শত ছবিতে। তার অভিনয়ে বুঁদ হয়ে থেকেছে আপামর দর্শক। স্বামী প্রযোজক ফজলুর রশীদ ঢালীর মৃত্যুর পর এক ব্যবসায়ীকে বিয়ে করে অভিনয়কে ছুটি জানিয়ে বিদেশে পাড়ি দিয়েছিলেন রোজিনা। অনেক বছর পর জন্মভূমিতে ফিরে ২০০৬ সালে তিনি ক্যামেরার সামনে দাঁড়ান ‘রাক্ষুসী’ ছবির জন্য। সেও প্রায় তেরো বছর আগের ঘটনা। মাঝখানের একটি ছবির কথা বাদ দিলে দর্শকদের সঙ্গে তার ব্যবধান রচিত হয়েছে অনেক বছরের। অলিভিয়া সত্তরের দশকে গ্ল্যামারের জন্য অলিভিয়া উঠে গিয়েছিলেন খ্যাতির শীর্ষে। ‘দ্য রেইন’র মতো সাহসী ছবিতে দুঃসাহসী উপস্থিতি দিয়ে চমকে দিয়েছিলেন দর্শকদের চেনা-জানা জগৎকে। নাড়া দিয়েছিলেন এরকম আরো কয়েকটি ছবি দিয়ে। নব্বই দশকে যখন তার ক্যারিয়ারের যৌবন-জোয়ারে ভাটার টান, তখন এক ব্যবসায়ীকে বিয়ে করে অন্তরালে চলে যান অলিভিয়া। ১৯৯০ সালে ‘লাখে একটা’ ছবিতে অভিনয়ের পরই বলতে গেলে রুপালি পর্দা থেকে স্থায়ী অবসর নেন অলিভিয়া। অঞ্জু ঘোষ ১৯৯৮ সালে ‘নেশা’ ছবিতে অভিনয়ের পরই ঢালিউডের প্রতি নেশা কেটে যায় অঞ্জু ঘোষের। আশির দশকের সবচেয়ে দাপুটে নায়িকাটি পেরিয়ে যান সীমান্তের কাঁটাতার। কলকাতার ছবিতে কয়েক বছর তিনি ছিলেন ব্যস্ত। দীর্ঘ বিরহ কাটিয়ে গত বছর ‘বেদের মেয়ে জোছনা’ ফেরেন ঢাকায়। কিন্তু তার সঙ্গে দর্শকদের দুই দশকের ব্যবধান ঘোচেনি। পর্দায় কবে অঞ্জুকে আবার পাওয়া যাবে, তা কেই বা বলতে পারে! জয়শ্রী কবির আলমগীর কবিরের ক্ল্যাসিক ছবিগুলো জয়শ্রী কবিরের রূপ ও অভিনয় ছাড়া অসম্পূর্ণ। মিস ক্যালকাটা এ দেশে এসে বিয়েও করেছিলেন প্রিয় নির্মাতাকে। আলমগীর কবীর না ফেরার দেশে চলে গেলে জয়শ্রী ফিরে যান নিজের ঠিকানায়। পরে সেখান থেকে পাড়ি জমান ইউরোপে। এবং শাবানা ২০০১ সালে ‘ঘরে ঘরে যুদ্ধ’ মুক্তির পর বন্ধ হয়ে যায় শাবানার দীর্ঘ চলচ্চিত্রযাত্রা। ১৯৯৮ সালেই ঘোষণা দিয়ে অভিনয়ে ইতি টেনেছিলেন শাবানা। তার অভিনয়ে প্রত্যাবর্তন প্রায় অসম্ভব বলেই জানেন তার ভক্তরা। কোনো মিরাকল ঘটলেই কেবল অভিনয়ে ফেরা সম্ভব শাবানার।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App