×

জাতীয়

চ্যাম্পিয়ন হলেন শাহজালাল

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৬ এপ্রিল ২০১৯, ০২:২৪ পিএম

চ্যাম্পিয়ন হলেন শাহজালাল
বাঙালি সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের অন্যতম অংশ চট্টগ্রামের আবদুল জব্বারের বলী খেলার ১১০তম আসরে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন কুমিল্লার শাহজালাল বলী। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে লালদীঘির মাঠে টান টান উত্তেজনার প্রায় ২৬ মিনিটের তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ লড়াইয়ে চকরিয়ার তারিকুল আলম জীবন বলীকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হন তিনি। নগরীর লালদীঘি ময়দানে বলী খেলা দেখতে হাজারো মানুষ জড়ো হন। কানায় কানায় পূর্ণ মাঠের আশপাশের বিভিন্ন ভবনের ছাদে উঠেও মানুষ উপভোগ করেন ঐতিহ্যবাহী এ বলী খেলা। উল্লাসে ফেটে পড়া দর্শকরা জীবন ও শাহজালাল বলীর পক্ষে স্লোগান দিতে থাকেন। খেলা পরিচালনা করেন ৩০ বছরের অভিজ্ঞ রেফারি সাবেক কাউন্সিলর আবদুল মালেক। তাকে সহযোগিতা করেন নূর মোহাম্মদ লেদু ও জাহাঙ্গীর আলম। সেমিফাইনালে কুমিল্লার শাহজালালের মুখোমুখি হন মহেশখালীর সাহাবউদ্দিন। অপর সেমিফাইনালে মুখোমুখি হন চকরিয়ার জীবন বলী ও মহেশখালীর মো. হোসেন। এ খেলায় হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হয়। শেষ পর্যন্ত বুদ্ধি, শক্তি ও কৌশলের ১০ মিনিটের লড়াই শেষে টসে ফাইনালের টিকেট পান জীবন বলী। যিনি ২০১৮ সালে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন। এবার বলী খেলায় চ্যাম্পিয়নকে নগদ ২০ হাজার টাকা ও ট্রফি এবং রানারআপকে নগদ ১৫ হাজার টাকা ও ট্রফি প্রদান করেন সিএমপি কমিশনার। এ ছাড়া ২৫ বলীকে নগদ ১ হাজার টাকা ও একটি করে ট্রফি দেয়া হয়। এর আগে বলী খেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন সিএমপি কমিশনার মো. মাহাবুবর রহমান। টেলিফোনে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম সিটি মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন। বিশেষ অতিথি ছিলেন গ্রামীণফোনের চিফ মার্কেটিং অফিসার এন্ড ডেপুটি সিইও ইয়াসির আজমান। সিএমপি কমিশনার বলেন, চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক বলী খেলার সমৃদ্ধি দেশের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে পড়েছে। আমরা সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়েরর কাছে অনুরোধ করব বলী খেলা ও বৈশাখী মেলাকে বিশ্ব ঐতিহ্যের অন্তর্ভুক্তির জন্য ব্যবস্থা নেয়ার। তিনি আরো বলেন, বিভিন্ন মহল আমাদের সংস্কৃতিকে বিনষ্টের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দেশের সব জনগণকে একত্রিত করে এসব অপচেষ্টা রুখে দিতে চাই। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে বাঙালি যুব সম্প্রদায়কে উদ্বুদ্ধ করতে ও শক্তিমত্তা প্রদর্শনের মাধ্যমে তাদের মনোবল বাড়ানোর উদ্দেশ্যে চট্টগ্রাম নগরীর বদরপাতি এলাকার সওদাগর আবদুল জব্বার ১৯০৯ সালে এই বলী খেলার সূচনা করেন। খেলা উপলক্ষে বাঙালির লোকজ সংস্কৃতির বিকাশের লক্ষ্যে আয়োজন করা হয় বৈশাখী মেলার। এ খেলার প্রবর্তক আবদুল জাব্বারের মৃত্যুর পর এ প্রতিযোগিতা জব্বারের বলী খেলা নামে পরিচিতি লাভ করে। প্রতি বছর ১২ বৈশাখ নগরীর লালদীঘি মাঠে এই বলী খেলা অনুষ্ঠিত হয়। বৃহত্তর চট্টগ্রামের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বলী খেলা দেখতে ও মেলায় ঘুরতে আসেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশা ও বয়সের মানুষ। নগরীর আন্দরকিল্লা, বক্সিরহাট, লালদীঘি পাড়, কেসি দে রোড, সিনেমা প্যালেস, শহীদ মিনার সড়ক, কোতোয়ালি মোড় ও জেল রোডসহ প্রায় চার বর্গকিলোমিটারজুড়ে এ মেলার বিস্তৃতি ঘটে। এ মেলায় অংশ নিতে বৃহত্তর চট্টগ্রামের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে বিভিন্ন ধরনের লোকজ পণ্য নিয়ে মেলার এক-দুইদিন আগে চলে আসেন ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প ব্যবসায়ীরা।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App