×

খেলা

ফের চ্যাম্পিয়ন আবাহনী

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৪ এপ্রিল ২০১৯, ০৪:০১ পিএম

ফের চ্যাম্পিয়ন আবাহনী
ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগের (ডিপিডিসিএল) সুপার লিগের পঞ্চম ও শেষ রাউন্ডের খেলা গতকাল ভিন্ন ভিন্ন তিন মাঠে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সাভারের বিকেএসপিতে শেষ রাউন্ডের ম্যাচে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবকে ৯ উইকেটে হারিয়ে শিরোপা ধরে রেখেছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন আবাহনী লিমিটেড। দলটি আসর শেষ করেছে ১৩টি জয় নিয়ে। তাই রান রেটে এগিয়ে থাকায় শিরোপা জিতেছে আকাশি-নীল জার্সিধারীরা। ফলে ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে টানা দ্বিতীয়বার চ্যাম্পিয়ন হলো আবাহনী লিমিটেড। আর প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবকে ৮৮ রানে হারিয়েছে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ। যদিও সর্বোচ্চ সংখ্যক জয়েও দলটি শিরোপার দেখা পায়নি, সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে রানার্সআপ হয়েই। অন্যদিকে ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের বিপক্ষে প্রাইম দোলেশ্বর ৩ রানে জিতেছে এবং লিগে তৃতীয় হয়েছে। গতকাল বিকেএসপিতে ব্যাট হাতে উজ্জ্বল ছিলেন সৌম্য সরকার। তার রেকর্ড গড়া ইনিংসে ভর করে বড় লক্ষ্য তাড়া করে আবাহনী লিমিটেড পেয়েছে সহজ জয়। খেলা শেষে ম্যাচসেরা পুরস্কার পেয়েছেন সৌম্য সরকার। টস জিতে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে ৩১৭ রান সংগ্রহ করে শেখ জামাল। তানবীর হায়দারের অপরাজিত ১৩২ রানের ইনিংসে ভর করে এই সংগ্রহ পায় দলটি, যদিও শুরুতে দ্রুত উইকেট হারিয়ে পড়তে হয়েছিল চাপে। অন্যদের মধ্যে ইলিয়াস সানি ৪৫ ও মেহরাব হোসেন ৪৪ রান করেন। আবাহনীর পক্ষে বল হাতে মাশরাফি বিন মুর্তজা ১০ ওভারে ৫৬ রান খরচায় একাই শিকার করেন ৪টি উইকেট। এ ছাড়া মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, মেহেদী হাসান মিরাজ, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত এবং সৌম্য সরকার নেন ১টি করে উইকেট। ৩১৮ রানের জবাবে জয়ের লক্ষ্যে বেশ ফুরফুরে মেজাজে খেলতে নামেন মাশরাফির বাহিনী। আবাহনী উড়ন্ত সূচনা পায় দুই ওপেনার সৌম্য সরকার ও জহুরুল হকের ব্যাটে। আবাহনীর উদ্বোধনী জুটি ভাঙে জহুরুল ১০০ রান করে আউট হয়ে গেলে। তবে অপ্রতিরোধ্য সৌম্য সরকার দলকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন। ১৫৩ বল মোকাবেলায় ২০৮ রানের অবিশ্বাস্য এক ইনিংস উপহার দেন, যেখানে ছিল ১৪টি চার ও ১৬টি ছক্কা। এই বিরোচিত ইনিংসের মাধ্যমে প্রিমিয়ার লিগে অনেক রেকর্ডও গড়েছেন সৌম্য। তার ব্যাটে ভর করে দল জয় পায় ৯ উইকেট ও ১৭ বল হাতে রেখেই। সৌম্য সরকার যে ঝড়ো ব্যাটিং করেছেন, তার জবাব দেয়ার উপায় আসলে ছিল না শেখ জামালের বোলারদের। টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নামে রূপগঞ্জ। নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ৩২৭ রানের পাহাড় জড়ো করে দলটি। দলের পক্ষে এ দিন শতক হাঁকান ফর্মে থাকা ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম। এ দিনও তিনি পেয়ে যান ৩ অঙ্কের রানের দেখা। ১৩০ বলে ১৩৬ বলের ইনিংসে ছিল ১৯টি চারের মার। এ ছাড়া অন্যদের মধ্যে মেহেদী মারুফ ৫৪, মুমিনুল হক ৫২, জাকের আলী ২৭, অধিনায়ক নাঈম ইসলাম অপরাজিত ২৪ ও মুক্তার আলী অপরাজিত ঝড়ো ২২ রান করেন। প্রাইম ব্যাংকের পক্ষে একটি করে উইকেট শিকার করেন মোহর শেখ, নাহিদুল ইসলাম, আব্দুর রাজ্জাক ও নাঈম হাসান। জয়ের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ভালো শুরুর ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন প্রাইম ব্যাংকের দুই ওপেনার রুবেল মিয়া ও এনামুল হক বিজয়। রুবেল ৩৭ ও বিজয় ২৬ রান করে সাজঘরে ফেরার পর দ্রুত সালমান হোসেন ও জাকির হাসান সাজঘরে ফিরলে চাপে পড়ে যায় দল। আরিফুল হক ও নাহিদুল ইসলামের ব্যাটিং সেই চাপ সামাল দেয়ার চেষ্টা করে। নাহিদুলের ৭৪ রানের ইনিংস হারের ব্যবধান কমায়। আরিফুল করেন ৩৩ রান। শেষ পর্যন্ত দল গুটিয়ে যায় ২৩৯ রানে, ৪২.১ ওভার ব্যাট করে। রূপগঞ্জের পক্ষে মোহাম্মদ শহীদ শিকার করেন চারটি উইকেট। অন্যদিকে ফতুল্লায় টস হেরে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ২৭৪ রান সংগ্রহ করে দোলেশ্বর। দলের পক্ষে অর্ধশতক হাঁকান তিন ব্যাটসম্যান। সর্বোচ্চ ৮৯ রান আসে ফরহাদ হোসেনের ব্যাট থেকে। ৭৬ বলের মোকাবেলায় ৭টি চার ও ২টি ছক্কায় এই ইনিংস সাজান তিনি। এ ছাড়া সৈকত আলী ৬৫, সাইফ হাসান ৫৫ ও মার্শাল আইয়ুব ৩৮ রান করেন। মোহামেডানের পক্ষে দুটি উইকেট শিকার করেন শফিউল ইসলাম। এ ছাড়া রাহাতুল ফেরদৌস ও সাকলাইন সজীব একটি করে উইকেট শিকার করেন। জয়ের লক্ষ্যে খেলতে নেমে আব্দুর মজিদ ও ইরফান সুক্কুর ভালো শুরুর ইঙ্গিত দিলেও যথাক্রমে ২৫ ও ২৬ রান করে সাজঘরে ফেরেন দুজন। এরপর প্রতিরোধ গড়ে তোলেন মোহাম্মদ আশরাফুল। তবে অন্য প্রান্তে আশরাফুল যোগ্য সঙ্গী খুঁজে পাচ্ছিলেন না। রকিবুল হাসান ২২ ও তুষার ইমরান ১৫ রান করে বিদায় নেয়ার পর রাহাতুল ফেরদৌস যথাসাধ্য চেষ্টা করেন। তবে আশরাফুল ৭৬ ও রাহাতুল ৩৭ রান করে আউট হয়ে গেলে আবারো চাপে পড়ে যায় মোহামেডান। তবে নিহাদুজ্জামান ঝড়ো ব্যাটিংয়ের মাধ্যমে জয় এনে দেয়ার চেষ্টা করেন। তবে ১৯ বলে ৩৫ রান করে সফল হননি এ ব্যাটসম্যান। নির্ধারিত ৫০ ওভার শেষে ৯ উইকেট হারানো মোহামেডান দোলেশ্বরের চেয়ে ৩ রান কম অর্থাৎ ২৭১ রান জড়ো করে। দোলেশ্বরের পক্ষে তাইবুর রহমান তিনটি এবং ফরহাদ রেজা ও মাহমুদুল হাসান দুটি করে উইকেট শিকার করেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App