×

মুক্তচিন্তা

আমরা ক্ষুব্ধ, মর্মাহত

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২২ এপ্রিল ২০১৯, ০৯:৩১ পিএম

এবার আক্রান্ত শ্রীলঙ্কা। খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের অন্যতম বড় উৎসব ইস্টার সানডের দিন ভয়াবহ সিরিজ বিস্ফোরণে ২৯০ জন প্রাণ হারিয়েছেন। আহত হয়েছেন আরো ৫০০ জন। হামলায় নিহতদের মধ্যে ৩০ জন বিদেশিও রয়েছেন। আমরা শ্রীলঙ্কায় এই হামলার তীব্র নিন্দা জানাই; বৈশ্বিক সন্ত্রাসী অপশক্তির বিরুদ্ধে তীব্র ঘৃণা জানাই এবং জঙ্গি সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সব দেশের শান্তিকামী, সভ্য মানুষের সংগ্রামে সংহতি জানাই।

গণমাধ্যমের খবরে দেখছি, অত্যন্ত নৃশংস, ভয়াবহ ও জঘন্য হামলার ঘটনা ঘটেছে শ্রীলঙ্কায়। ওইদিন সকালে দ্বীপরাষ্ট্রটির রাজধানী কলম্বো এবং শহরতলির তিনটি গির্জা ও দেশের বড় তিনটি হোটেলে এ হামলা হয়। পরে আরো দুটি স্থানে হামলা হয়। রবিবার ছিল খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের অন্যতম বড় উৎসব ইস্টার সানডে। হামলার সময় তিন গির্জায় ইস্টার সানডের প্রার্থনা চলছিল। গৃহযুদ্ধের পর দেশটিতে এটিই সবচেয়ে বড় হামলার ঘটনা।

নিহত ২৯০ জনের মধ্যে রয়েছে আওয়ামী লীগ নেতা শেখ ফজলুল করিম সেলিমের ৮ বছর বয়সী নাতি জায়ান চৌধুরী। আহত শেখ সেলিমের জামাতা মশিউল হক চৌধুরী প্রিন্স কলম্বোর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। হামলার শিকার তিন হোটেল এবং একটি গির্জা রাজধানীতে হলেও বাকিগুলো নিগমবো ও উত্তর কলম্বোয় অবস্থিত। হামলার ঘটনায় এ পর্যন্ত ২৪ জনকে আটক করা হয়েছে।

শ্রীলঙ্কার প্রতিরক্ষা প্রতিমন্ত্রী রুয়ান বিজয়বর্ধন জানিয়েছেন, অপরাধীদের শনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছেন তদন্তকারীরা। এটা আশার কথা। আমরা জানি, সংখ্যাগরিষ্ঠ বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের দেশ শ্রীলঙ্কার মাত্র ছয় শতাংশ মানুষ ক্যাথলিক খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী। দেশটির দুই নৃতাত্ত্বিক গোষ্ঠী তামিল ও সিংহলিজ উভয়ের মধ্যেই এই ধর্মাবলম্বীদের দেখতে পাওয়া যায়। এক দশক আগে গৃহযুদ্ধ অবসানের পর দেশটিতে বিক্ষিপ্ত সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে।

গত বছরের মার্চে সংখ্যাগরিষ্ঠ বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী সিংহলি সম্প্রদায়ের সদস্যরা মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের মসজিদ ও সম্পত্তিতে হামলা শুরু করলে দেশটিতে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়। এবার গির্জায় হামলার ঘটনায় সে দেশের সরকারকে নতুন করে ভাবনায় ফেলবে এতে সন্দেহ নেই। এ হামলাকে আমরা একপাশে ঠেলে সরিয়ে রাখতে পারি না।

এ ধরনের ঘটনা প্রতিবেশী দেশ হিসেবে নিরাপত্তার সঙ্গে সম্পৃক্ত। পৃথিবীর অনেক দেশেই জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব মানুষ সন্ত্রাসী হামলার ঝুঁকিতে রয়েছে। সন্ত্রাস ও সন্ত্রাসবাদ বর্তমান বিশ্বে একটি বহু আলোচিত, নিন্দিত এবং ধিকৃত বিষয়। সন্ত্রাসী যে নামে বা যে গ্রুপেরই হোক, তারা সন্ত্রাসী এবং মানবতার শত্রু।

নিশ্চয়ই শ্রীলঙ্কায় হামলাকারীরা চিহ্নিত হবে ও বিচার হবে। এখনই সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সারা পৃথিবীর মানুষের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার সময়। পাশাপাশি সচেতনতামূলক পদক্ষেপের পাশাপাশি নজরদারি ও আগাম নিরাপত্তার ব্যবস্থার প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App