×

মুক্তচিন্তা

মশক দমন অভিযান ও জনসচেতনতা বাড়াতে হবে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৯ এপ্রিল ২০১৯, ০৮:২৯ পিএম

নানাবিধ কারণে মশাবাহিত বিভিন্ন ধরনের রোগ যেমন- ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া, ম্যালেরিয়ার প্রাদুর্ভাব দেখা যাওয়া বাংলাদেশ অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। ম্যালেরিয়াকে একসময় কেবল পার্বত্যাঞ্চলের রোগ মনে করা হতো। তবে এখন সেই পরিস্থিতিতে পরিবর্তন এসেছে।

জাতীয় ম্যালেরিয়া নির্মূল ও এডিসবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির তথ্য বলছে, পাহাড়ের পাশাপাশি সমতলেও ছড়িয়ে পড়ছে মশাবাহিত এ রোগ। বর্তমানে ১৩ জেলায় ম্যালেরিয়ার প্রাদুর্ভাব বেশি। বিশ্ব ম্যালেরিয়া দিবস সামনে রেখে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এ তথ্য তুলে ধরেছে। এই তথ্য আমাদের উদ্বেগ বাড়াবে স্বাভাবিক।

তথ্যে আরো জানানো হয়, সীমান্তবর্তী এলাকা, পাহাড় ও বনাঞ্চলবেষ্টিত অঞ্চল হওয়ায় তিন পার্বত্য জেলা বান্দরবান, রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়িতে ম্যালেরিয়ার প্রকোপ সবচেয়ে বেশি। দেশের মোট ম্যালেরিয়া রোগীর প্রায় ৯১ শতাংশই এ এলাকার। তবে এ তিন জেলা ছাড়াও আরো ১০ জেলায় মশাবাহিত এ রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়েছে। জেলাগুলো হচ্ছে কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, সিলেট, হবিগঞ্জ, নেত্রকোনা, ময়মনসিংহ, শেরপুর ও কুড়িগ্রাম। এ অবস্থায় দেশের প্রায় ১ কোটি ৮০ লাখ মানুষ ম্যালেরিয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।

সারাদেশে যত মানুষ ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়, তার ৬০ শতাংশ বান্দরবানের। এ ছাড়া প্রতিবেশী দেশ ভারত ও মিয়ানমার সীমান্ত এলাকায় সম্প্রতি ম্যালেরিয়ার সংক্রমণ বৃদ্ধিও সমস্যাটিকে প্রকট করতে পারে বলে মনে করেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

এমতাবস্থায় এই ঘাতক ব্যাধি নিয়ে নতুন করে ভাবনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। মশাবাহিত যতগুলো সংক্রামক রোগ রয়েছে তার মধ্যে ম্যালেরিয়া অন্যতম। ম্যালেরিয়া বাংলাদেশের একটি জনস্বাস্থ্য সমস্যা বলে মনে করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। এ সমস্যা মোকাবেলায় সরকারের নেয়া জাতীয় কর্মসূচি ম্যালেরিয়া আক্রান্তের হার কমাতে ভূমিকা রাখছে। গত এক দশকে বেশ সফলতাও এসেছে।

২০০৮ সালে দেশে ৮৪ হাজার ৬৯০ জন ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়। ওই বছর এ রোগে মারা যায় ১৫৪ জন। এর এক দশক পর অর্থাৎ ২০১৮ সালে আক্রান্তের সংখ্যা কমে ১০ হাজার ৫২৩ জনে নেমে এসেছে এবং মারা গেছে সাতজন। তবে জাতীয় ম্যালেরিয়া নির্মূল ও এডিসবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির কর্মকর্তাদের আশঙ্কা, চলতি বছর ম্যালেরিয়ার প্রাদুর্ভাব বাড়তে পারে। আর্দ্র অবস্থার সঙ্গে আগাম বৃষ্টিপাতের কারণে গত বছরের তুলনায় ম্যালেরিয়ার ঝুঁকি এ বছর বেশি।

মশাবাহিত এই রোগ থেকে নিরাপদ দূরত্বে থাকতে হলে সচেতনতা অবলম্বন প্রয়োজন। এ জন্য যে কোনোভাবেই হোক মশার কামড় থেকে বাঁচতে হবে। যেসব স্থানে মশা ডিম পাড়ে সেখানে কীটনাশক বা কেরোসিন ছিটিয়ে দেয়া ভালো। বাড়ির আশপাশে কোনো ঝোপ-জঙ্গল থাকলে তা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা উচিত। আমাদের উদ্যম, চেষ্টা ও প্রতিশ্রুতি রক্ষার মাধ্যমে ভয়ঙ্করতম এই রোগকে মোকাবেলা করতে পারি। এ জন্য কর্মপন্থা স্থির করাসহ দরকার সরকারের জরুরি উদ্যোগ।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App