×

খেলা

বাড়ির জন্য জমি পাচ্ছে গোল্ডেন বুট জয়ী আঁখি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৯ এপ্রিল ২০১৯, ০৫:৪০ পিএম

বাড়ির জন্য জমি পাচ্ছে গোল্ডেন বুট জয়ী আঁখি

গোল্ডেন বুট হাতে নারী ফুটবলার আঁখি খাতুন/ফাইল ছবি

মাত্র এক শতক জমির উপর দো-চালা একটি টিনের ঘর। আর এ ঘরেই জন্ম দক্ষিণ এশিয়ার সেরা নারী ফুটবলার আঁখি খাতুনের। একমাত্র ভাই নাজমুল হোসেনকে নিয়ে এমনই জীর্ণ কুটিরে বসবাস করে আসছেন আঁখির বাবা-মা।

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের পারকোলা গ্রামের হতদরিদ্র তাঁত শ্রমিক আক্তার হোসেনের ঘরে জন্ম নেয়া আঁখি ২০১৭ সাফ অনূর্ধ্ব-১৫ মহিলা চ্যাম্পিয়নশিপ ফুটবল টুর্নামেন্টে গোল্ডেন বুট জয়ী সেরা খেলোয়াড়। সেই আঁখি খাতুন বাসস্থানের জন্য পাবেন ৫ শতক জমি- এমন খবরে উল্লসিত তার পরিবার, আত্মীয়স্বজনসহ শুভাকাঙ্খীরা।

আজ শুক্রবার (১৯ এপ্রিল) শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাজমুল হুসেইন খান গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, ফুটবলার আঁখির পরিবারের নিজস্ব কোনো বাড়ি নেই। তার বাবা আক্তার হোসেন ওয়ারিশ সূত্রে পাওয়া মাত্র এক শতক জায়গাতে পরিবার বসবাস করছেন। তাই বাসস্থানের জায়গা চেয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করেছেন আঁখি খাতুন।

আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা পৌর এলাকার মনিরামপুর বাজারে প্রায় এক কোটি টাকা মূল্যের ৫ শতক জমি আঁখির জন্য নির্ধারণ করেছি। তবে উপজেলা বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রবিন আকন্দ এসব খাসজমি অবৈধভাবে দখল করে রেখেছিলেন। আমরা ওই জমি দখলমুক্ত করতে উচ্ছেদ অভিযান শুরু করেছি। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশে পরবর্তী প্রক্রিয়া শেষ করা হবে।

ইউএনও আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী ক্রীড়া বান্ধব। ক’দিন আগেও ক্রিকেটার মেহেদী মিরাজকে জায়গা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এতে আমরাও আশান্বিত খুব দ্রুতই আঁখি জমি পাবে।

এ বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) ইফতেখার উদ্দিন শামীম বলেন, বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) ফুটবলার আঁখির একটি আবেদন আমরা পেয়েছি। জমি পাওয়ার অধিকার তার আছে। সবেমাত্র আবেদনটা করেছে, এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে জমি আছে দেওয়া যাবে।

এদিকে বাড়ির জন্য শহরে জায়গা পাচ্ছেন, এমন খবরে উল্লসিত আঁখির বাবা বলেন, অন্যের বাড়িতে তাঁত শ্রমিকের কাজ করে ছেলে-মেয়েদের বড় করেছি। বাপ-দাদার এক শতক জমির উপর পুরনো একটি টিনের ঘরে কোনমতে মাথা গুঁজে থাকি। কখনো ভাবি নাই বাড়ি পাবো। মেয়ের জন্যই এতোকিছু সম্ভব হলো। কিছুদিন আগেও একটি সংস্থার লোকজন এসে পাকা বাড়ি নির্মাণ করে দেবে বলেছে। কিন্তু নিজস্ব জায়গা না থাকায় সেটা হয়নি।

আঁখির বড় ভাই নাজমুল হোসেন বলেন, খুউব কষ্ট করে লেখাপড়া করছি। নিজের বাড়িতে থাকার ঘরে জায়গা না হওয়ায় চাচার বাড়িতে থাকি। বোনের জন্য গর্ব হয়। শুধু আমার নয় পুরো শাহজাদপুর ও সিরাজগঞ্জবাসীর গর্ব আমার বোন আঁখি।

প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালে বঙ্গমাতা গোল্ডকাপ ফুটবলে শাহজাদপুর ইব্রাহিম বালিকা বিদ্যালয়ের হয়ে খেলে উঠে আসে আঁখি। ২০১৫ সালে জাতীয় দলের ক্যাম্পে ডাক আসে তার। এর আগে তাজিকিস্থানে এএফসি অনূর্ধ্ব-১৪ আঞ্চলিক ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপে প্রথম খেলে আঁখি। ২০১৭ সালে সাফ অনূর্ধ্ব-১৫ নারী ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে ভারতকে ১-০ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশ। এ টুর্নামেন্টে সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হয়ে আঁখি খাতুন গোল্ডেন বুট পেয়েছিল।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App