×

জাতীয়

নিয়ন্ত্রণহীন মাদ্রাসা শিক্ষা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৩ এপ্রিল ২০১৯, ১১:৩০ এএম

নিয়ন্ত্রণহীন মাদ্রাসা শিক্ষা
দেশের ১৬ হাজারের বেশি মাদ্রাসার পৌনে দুই লাখ শিক্ষক-কর্মচারীর শতভাগ বেতনভাতাসহ সব ধরনের সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করা হলেও এগুলো পরিচালনায় কোনো নিয়ন্ত্রণই নেই সরকারের। সুপার, অধ্যক্ষ কিংবা পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের স্বেচ্ছাচারিতায় পরিচালিত হচ্ছে বেশিরভাগ মাদ্রাসা। নিয়োগ বাণিজ্য, অর্থ লুটপাটসহ অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছেন অনেক প্রতিষ্ঠানে অধ্যক্ষসহ পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা। শিক্ষার মানও নিম্নগামী হচ্ছে দিন দিন। গত কয়েক বছরে বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষায় শূন্যপাসের প্রতিষ্ঠানের তালিকায় শীর্ষে থাকছে মাদ্রাসা। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের শারীরিক নির্যাতন নিষিদ্ধ করা হলেও মাদ্রাসাগুলোতে শিশু শিক্ষার্থীদের পিটিয়ে হত্যার ঘটনাও ঘটছে। শিক্ষকদের নৈতিক অবক্ষয়ের প্রভাব পড়ছে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মধ্যেও। নিজ প্রতিষ্ঠানেই যৌন নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়েছে অনেক মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা। তবে সরাসরি নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকায় এসব কর্মকাণ্ডের কোনো তথ্যই পৌঁছাচ্ছে না শিক্ষা বিভাগে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরের সূত্র ধরেই অভিযুক্ত শিক্ষকদের এমপিও স্থগিত করার মধ্যেই সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা। এ কারণে স্থানীয় প্রভাববলয় তৈরি করে নিজেদের অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন অনেক মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। সম্প্রতি ফেনীর সোনাগাজীর ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ এস এম সিরাজ উদদৌলার বিরুদ্ধে সীমাহীন দুর্নীতি ও অনৈতিক কর্মকাণ্ডসহ এক আলিম পরীক্ষার্থীকে যৌন নিপীড়ন ও পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় মাদ্রাসাগুলোর ব্যবস্থাপনা, শিক্ষার মান ও মূল্যবোধ চর্চা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে। দীর্ঘ ১৮ বছর নানা অপকর্মে জড়িত থেকেও সিরাজ উদদৌলা কিভাবে অধ্যক্ষ পদে বহাল ছিলেন সে ঘটনায় বিস্ময় প্রকাশ করেছেন শিক্ষাবিদরা। যৌন হয়রানির মামলায় বছর খানেক আগে গ্রেপ্তার হওয়ার পরেও বহাল ছিল অধ্যক্ষের এমপিও। সে সম্পর্কে কোনো তথ্যই ছিল না শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে। তবে দেশজুড়ে সমালোচনা ঝড় উঠলে গত ১১ এপ্রিল সিরাজ উদদৌলাসহ দুই শিক্ষকের এমপিও বাতিল করে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর। প্রচলিত ধারণায় মাদ্রাসাগুলোকে নৈতিক শিক্ষা আর মানবিক মূল্যবোধ চর্চার প্রধান ক্ষেত্র হিসেবে ভাবা হলেও বাস্তবে দেখা গেছে উল্টো চিত্র। যার প্রমাণ পাওয়া গেছে ফেনীর ঘটনার রেশের মধ্যেই গত ৭ এপ্রিল। রাজধানীর ডেমরার নূরী মদিনা মাদ্রাসার শিক্ষার্থী মনিরকে (৮) মসজিদের ভেতরেই হত্যা করেন অধ্যক্ষ আবদুল জলিল হাদি। আর এ ঘটনার রেশ না কাটতেই ১১ এপ্রিল চট্টগ্রামের বায়েজিদ বোস্তামি থানার ওমর ফারুক আল ইসলামিয়া মাদ্রাসার ছাত্র হাবিবুরকে (১১) হত্যা করা হয়। শিশুটিকে যৌন নির্যাতন করার কারণে স্থানীয়রা মাদ্রাসায় তালা ঝুলিয়ে দেয়। মাদ্রাসায় নানা অপরাধ : শিক্ষক ও পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের অনৈতিক কর্মকাণ্ডের কারণেই নিজ মাদ্রাসায় নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়েছে শিক্ষার্থীরা। ভয় আর লজ্জায় নির্যাতনের তথ্য প্রকাশ না করায় চাপা পড়ে যায় সেসব ঘটনা। যেসব ঘটনা সামনে আসে প্রভাবশালীদের কারণে তাও একসময় চাপা পড়ে। এতে বেপরোয়া হয়ে ওঠে প্রতিষ্ঠানের হর্তাকর্তারা। বিশেষত পরিচালকদের হাতে শিক্ষার্থী নির্যাতনের ঘটনা শিউরে ওঠার মতো। গাজীপুরের শ্রীপুরে নিজ জমিতে মদিনাতুল উলুম মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার পর থেকেই শিক্ষার্থীদের যৌন নির্যাতন করে আসছিলেন মাওলানা নুরুল ইসলাম (৪০)। একপর্যায়ে গেল বছরের ১ ডিসেম্বর রাতে সব শিক্ষার্থী ঘুমিয়ে গেলে এক শিশুকে (১১) ডেকে তুলে যৌন নিপীড়ন করেন ওই পরিচালক। পরদিন ঘটনা জানাজানি হলে এলাকাবাসী উত্তেজিত হয়ে মাদ্রাসায় ভাঙচুর চালায়। একই ঘটনা ঘটেছে খাগড়াছড়ির মাটিরাঙার পলাশপুর মিফতাহুল জান্নাহ মহিলা মাদ্রাসাতেও। পরিচালক আবদুল হাই আর তার শ্যালক শিক্ষক কারি আবদুল খালেকের বিরুদ্ধে ছাত্রীদের যৌন নিপীড়নসহ সীমাহীন দুর্নীতির ওঠে। ২০১৭ সালে ১৩ জুলাই কারি খালেককে পুলিশে সোপর্দ করা হলেও তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। উল্টো প্রতিবাদ করতে গিয়ে এক শিক্ষক ও কয়েকজন শিক্ষার্থীকে মাদ্রাসা ছাড়তে হয়েছে। নাটোরের বড়াইগ্রামে আহম্মেদপুর আয়েশা সিদ্দিকী আবাসিক বালিকা কওমি মাদ্রাসা পরিচালনার আড়ালে ছাত্রীদের যৌন নিপীড়ন করে আসছিলেন পরিচালক মোবারক হোসেন (৫০) ও তার জামাই শিক্ষা সচিব ইসমাইল হোসেন (২৮)। ২০১৩ সালের আগস্ট শ্বশুর-জামাইকে আটক করে জেল জরিমানা ও মাদ্রাসা সিলগালা করা হয়। কক্সবাজারের তৈয়্যবিয়া তাহেরিয়া সুন্নিয়া মাদ্রাসার একাধিক শিক্ষকের হাতে বেশ কজন ছাত্রী বারবার নিপীড়নের শিকার হলেও কর্তৃপক্ষ ছিল নীরব। ২০১৭ সালে এসে দুই ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নের ঘটনায় শিক্ষক সাইফুদ্দীনকে ‘পদত্যাগপত্র’ না দিয়েই সরিয়ে দেন অধ্যক্ষ শাহাদাত হোসেন। পরিস্থিতি শান্ত হলে আবারো মাদ্রাসায় ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দেন। শুধু পরিচালকরাই নয়, ছাত্রীদের যৌন নির্যাতনের ঘটনায় অনেক শিক্ষকই গ্রেপ্তার হয়ে জেলে গেছেন। তারপরেও থামেনি এসব ঘটনা। আরবি ক্লাসে পড়া না পারায় তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রীকে কাছে ডেকে যৌন নিপীড়ন করায় গাইবান্ধার বাগচি সিদ্দিকীয়া দ্বি-মুখী সিনিয়র আলিম মাদ্রাসার এবতেদায়ি শাখার প্রধান শিক্ষক খন্দকার আবু বক্কর সিদ্দিক ২০১৫ সালের ১০ সেপ্টেম্বর গ্রেপ্তার হন। চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় চার বছরের ছাত্রীর ওপর দেড় মাস ধরে যৌন নিপীড়ন চালিয়ে আসছিলেন মাওলানা রুহুল আমিন (৩৭)। ঘটনা জানার পর ছাত্রীর মা মামলা করলে গত বছরের ৪ এপ্রিল শিক্ষক গ্রেপ্তার হন। জয়পুরহাটের পাঁচবিবির কুয়াতপুর জিন্নাতিয়া দাখিল মাদ্রাসার অন্তত ১২ জন ছাত্রীকে যৌন নির্যাতন করার ঘটনায় কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থায় নেয়নি কম্পিউটার শিক্ষক আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে। তবে গেল বছরের ১২ নভেম্বর নির্যাতিতার পক্ষে মামলা হলে বিষয়টি সবার সামনে চলে আসে। গেল বছরের নভেম্বরে ৪০ জন ঘুমন্ত শিশু-কিশোরের মধ্যেই রাজধানীর গুলিস্তানের মদিনাতুল মাদ্রাসার ছাত্র জিদানকে (১৪) গলা কেটে হত্যা করে লাশ সেফটিক ট্যাংকে গুম করে পালিয়ে যায় আবু বক্কর (১৬) নামে এক ছাত্র। জানা যায়, বলাৎকারের ঘটনার জেরে ছাত্রাবাসে সিনিয়র-জুনিয়রের দ্বন্দ্বে ঘটে ওই হত্যাকাণ্ড। মাদ্রাসার অনেক শিক্ষকের যোগ্যতা ও মূল্যবোধ নিয়েও নানা প্রশ্ন আছে। খাগড়াছড়ির পলাশপুর মিফতাহুল জান্নাহ মহিলা মাদ্রাসার শিক্ষক কারি খালেকের বিরুদ্ধে ক্লাসে ছাত্রীদের কোলে বসিয়ে চুমু দেয়ার অভিযোগ উঠেছিল। এ নিয়ে শালিসে ওই শিক্ষক যুক্তি দেখিয়েছিলেন, ছাত্রীরা ক্লাসে পড়া পারায় তাদের স্নেহ করে চুমু দেয়া যে অনৈতিক তিনি তা জানতেন না। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শারীরিক নির্যাতন নিষিদ্ধ করলেও মাদ্রাসায় শিক্ষার্থী নির্যাতনের ঘটনা সবচেয়ে বেশি। গেল বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারি ময়মনসিংহের ভালুকায় জামিরদিয়া মাদ্রাসায়ে ওমর (রা.) হাফিজিয়া এন্ড ইসলামি কিন্ডার গার্টেনে পড়া না পারায় এক শিশুকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে পা ও পাজরের হাড় ভেঙে হত্যা করেন এক শিক্ষক। এদিকে, উচ্চ আদালতের আদেশে মাদ্রাসাসহ দেশের প্রতিটি বিদ্যালয়ে যৌন হয়রানি বন্ধে মনিটরিং সেল গঠন করার নির্দেশনা থাকলেও মাদ্রাসাগুলোতে এ ধরনের সেল চোখে পড়ে না। এ বিষয়ে মনিটরিং বা নজরদারিও কোনো উদ্যোগ নেই। প্রতিমাসে ২০০ অভিযোগ : এমপিওভুক্ত মাদ্রাসাগুলোতে অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতা দিন দিনই বাড়ছে। অনেক প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীর চেয়ে শিক্ষক বেশি। তারা খেয়াল খুশিমতো হাজির হচ্ছেন। শূন্যপাসের প্রতিষ্ঠান নিয়ে মাথা ব্যথা নেই শিক্ষকদের। পুরনো শিক্ষকদের বাদ দিয়ে স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগ করা হচ্ছে। এরকম হাজারো অভিযোগ জমা হচ্ছে মন্ত্রণালয়ে। সূত্রমতে, মাদ্রাসা শাখায় প্রতিমাসে দেড় শতাধিক অভিযোগ জমা পড়ছে। গেল বছরের ১৭ ডিসেম্বর বাগেরহাটের শরণখোলা ‘বড় রাজাপুর সালেহিয়া দাখিল মাদ্রাসা’র অভিযোগপত্রে দেখা যায় শিক্ষক নাসির উদ্দিনের তিনটি জন্ম তারিখ ও দুটি ইনডেক্স (এমপিও নম্বর)। ঝালকাঠির রাজাপুরে ‘পূর্ব কানুনদাসকাঠি দাখিল মাদ্রাসার ১৭ জন শিক্ষক-কর্মচারী নিয়মিতভাবে বেতনভাতা উত্তোলন করলেও প্রয়োজনীয় সংখ্যক শিক্ষার্থী নেই বলে অভিযোগ পড়ে। বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির চাকঢালা এমএস দাখিল মাদ্রাসার বিরুদ্ধে অভিযোগ নকলপ্রবণতায় সহযোগিতা করার। জামালপুরের ইসলামপুরের ‘গুঠাইল সিনিয়র মাদ্রাসা’র অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে প্রতিষ্ঠানে অনুপস্থিত থাকার অভিযোগ পাওয়া যায়। কুড়িগ্রামের ‘নায়কের হাট দারুল সুন্নাত দাখিল মাদ্রাসার সহকারী মৌলভি শিক্ষক আজিজুল হকের বিরুদ্ধে আগের প্রতিষ্ঠানের ইনডেক্স অনুযায়ী বেতনভাতা উত্তোলনের অভিযোগ করা হয়। তবে এসব অভিযোগের অধিকাংশই আমলে না নেয়ায় মাদ্রাসার অনিয়ম নিয়ন্ত্রণে আসছে না। শূন্যপাসের সংখ্যা বেশি : মাদ্রাসায় নৈতিক শিক্ষার অবনতির পাশাপাশি পরীক্ষার ফলাফল নিয়েও নানা অভিযোগ রয়েছে। বিগত কয়েক সালের পাবলিক পরীক্ষায় শূন্যপাসের সংখ্যা মাদ্রাসাতেই বেশি দেখা গেছে। ২০১৬ সালে জেডিসিতে শূন্যপাসের ২০টি মাদ্রাসার মধ্যে তিনটি ছিল এমপিওভুক্ত। ২০১৭ সালে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় ৮টি শিক্ষা বোর্ডের ৯৩টি শূন্যপাসের প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৮২টিই মাদ্রাসা। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি এমপিওভুক্ত। গত বছর অষ্টম শ্রেণির জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষায় শূন্যপাসের ৫৯টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে মাদ্রাসার সংখ্যা ২৫টিই। যার মধ্যে একটি এমপিওভুক্ত। সূত্রমতে, মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধিনে সরকার স্বীকৃত ১৬ হাজার ২২৬টি মাদ্রাসার মধ্যে পূর্ণ এমপিওভুক্ত দাখিল, আলিম, ফাজিল ও কামিল মাদ্রাসা আছে সাত হাজার ৬১০টি। এমপিওভুক্ত শিক্ষকের সংখ্যা এক লাখ ২০ হাজার এবং কর্মচারী প্রায় ৪০ হাজারের মতো। এমপিওভুক্ত এসব শিক্ষক-কর্মচারীর জন্য প্রতি মাসে সরকারকে খরচ করতে হচ্ছে প্রায় দুইশ কোটি টাকা। বাংলাদেশ শিক্ষা তথ্য ও পরিসংখ্যান ব্যুরোর (ব্যানবেইস) তথ্য অনুযায়ী মাদ্রাসার প্রায় শতভাগই চলছে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায়। সরকারের লোকবল না থাকায় এসব প্রতিষ্ঠানকে সার্বক্ষণিক নজদারিতে রাখা সম্ভাব হচ্ছে না। তাছাড়া অর্থের বিনিময়ে অযোগ্য শিক্ষকদের নিয়োগ দেয়াও নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। অযোগ্য শিক্ষকরা কোনো প্রশিক্ষণ ছাড়াই পাঠদান করে যাচ্ছেন। এতে একদিনে ফলাফল খারাপ হচ্ছে অন্যদিকে প্রশ্নপত্র ফাঁসসহ অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত হয়ে পড়ছেন শিক্ষকরা। শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এমপিওভুক্ত মাদ্রাসার শিক্ষক-কর্মচারীদের শতভাগ বেতন সরকার দিলেও বহু প্রতিষ্ঠান চলছে অধ্যক্ষ, সুপার আর পরিচালনা পর্ষদের খেয়াল খুশিতে। উন্নয়নের নামে সরকারের বরাদ্দ লোপাট, নিয়োগ বাণিজ্য, ধর্মীয় শিক্ষা প্রসারের নামে অর্থ আত্মসাত ছাড়াও ধর্মভিত্তিক রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়ছেন অনেক শিক্ষক। জাতীয় পতাকা উত্তোলন কিংবা জাতীয় সঙ্গীত গাওয়া নিয়ে তাই নানা অভিযোগ আছে এসব মাদ্রাসার বিরুদ্ধে। সরকারের নির্দেশনা অমান্য করে তারা নানা কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছেন। জানতে চাইলে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরে মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) সফিউদ্দিন আহমদ ভোরের কাগজকে বলেন, মাদ্রাসাগুলোর শতভাগ বেতনভাতাসহ বহু সুযোগ সুবিধা দেয়া হচ্ছে। তারপরেও শিক্ষকরা যে এমন অনৈতিক কাজে জড়িয়ে পড়ছে এটা নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন। তবে সরকারিভাবে মাদ্রাসাগুলোর প্রিন্সিপাল নিয়োগ করার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। এতে এ ঘটনা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে। সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা শিক্ষাবিদ রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, শিক্ষকদের কাছে যদি শিক্ষার্থীরা নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়ে তার চেয়ে দুঃখজনক ঘটনা আর নেই। তবে প্রতিটি বিদ্যালয়ে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ সেল গঠন করার কথা থাকলেও মাদ্রাসাগুলোতে তা মানা হচ্ছে না।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App