×

বিনোদন

এসো হে নতুন দিন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৩ এপ্রিল ২০১৯, ০৮:৪৮ পিএম

এসো হে নতুন দিন
এসো হে নতুন দিন
এসো হে নতুন দিন
এসো হে নতুন দিন
এসো হে নতুন দিন
সূর্য ওঠে পূর্ব দিগন্ত আলো করে। উল্টে যায় ক্যালেন্ডারের শেষ জীর্ণ পাতা। জগতের এটাই শাশ্বত রীতি। পুরনো বিদায় নেয়। নতুন আসে। নতুনের হাত ধরে উন্মোচিত হয় সম্ভাবনার দ্বার। আবহমানকাল থেকেই নতুনের জন্ম নিয়ে মানুষের অবিরল প্রতীক্ষা। নতুনকে ঘিরেই জন্ম নেয় দিগন্ত ছাড়িয়ে যাওয়া আকাক্সক্ষা। রাতের শেষে ভোরে নতুন সূর্য, নতুন সম্ভাবনা, নতুন দিন আসে কারো অপেক্ষা না করেই। আজ বছরের শেষ দিনের রক্তিম সূর্য অস্ত গেলেই হারিয়ে যাবে বাংলা বছর ১৪২৫। আগামীকাল নতুন বছরের প্রথম দিন। বাঙালির প্রাণের উৎসব ‘বাংলা নববর্ষ’। পহেলা বৈশাখকে ঘিরে তারকারা জানিয়েছেন তাদের আবেগ-অনুভূতির কথা

ছোটবেলাটা খুব মিস করি : বিদ্যা সিনহা মিম

স্মৃতিতে মামাবাড়ির নৌকাবাইচ ছোটবেলা থেকেই পরিবারের লোকজনের সঙ্গে বাইরে বের হই। পহেলা বৈশাখের মেলা রাজশাহীর বাঘাতে মামাবাড়ি বেশ ভালো জমত। প্রতি বছর সেখানে নৌকাবাইচ হয়। আমি নৌকাবাইচ দেখতে খুব পছন্দ করি। বৈশাখীমেলায় মামা-মামিদের সঙ্গে ঘুরতে বের হতাম। সেখানে বৈশাখে অনেক আনন্দ হতো। ফ্রক পরার সুযোগ নেই কুমিল্লা ও ভোলাতেও বৈশাখ কাটিয়েছি। তখন ফ্রক পরতাম। আমি স্কুলে পড়া অবস্থায়ও ফ্রক পরেছি। এখন তো ফ্রক পরার সুযোগ নেই। এখন বৈশাখে শাড়ি পরি। তবে ছোটবেলাটা খুব মিস করি। মিডিয়ার কাজের পর কোথাও বেড়াতে যাওয়ার খুব সুযোগ থাকে না। এখন আর মামাবাড়ি যাওয়া হয় না। বাসায় স্পেশ্যাল রান্না হয় বৈশাখে সকালে পান্তা-ইলিশ খাই, দুপুরে বাসায় রান্না হয়। মেহমান আসে। বিকেলে কাছের মানুষদের বাসায় যাওয়া হয় অথবা বাইরে ঘুরতে বের হই। এ ছাড়া বিভিন্ন টিভি অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েই দিনটা কেটে যায়। বৈশাখ কাটবে পারিবারিকভাবেই ঢাকায় আসার পর তো শোবিজ অঙ্গনের মানুষদের সঙ্গেই বৈশাখ উদযাপন করা হচ্ছে। ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের চারুকলা কিংবা রমনার বটমূলে যেতে ইচ্ছা করে। কিন্তু নানা কারণে যাওয়া হয়ে ওঠে না। এবারের বৈশাখও কাটবে পারিবারিকভাবেই। শোবিজ অঙ্গনের সহকর্মী-বন্ধুদের সঙ্গেও দেখা-সাক্ষাৎ হবে। টেলিহোমের অনুষ্ঠানেও যোগ দিবো। নতুন বছর সবার জন্য শুভ হোক এটাই প্রত্যাশা।

মা-মেয়ে একই পোশাক : আজমেরী হক বাঁধন

একই রংয়ের শাড়ি পরব পহেলা বৈশাখে সাধারণত বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও সামাজিক আয়োজনে যাওয়া হয়। নববর্ষের এ দিনটা খুব আনন্দে কাটে। এ বছর আমি ও আমার মেয়ে, একই পোশাক নিয়েছি। দুজনের জন্য শাড়ি অর্ডার করেছিলাম। এবার পহেলা বৈশাখে দুজন একই রংয়ের শাড়ি পরে ঘুরে বেড়াবো। আগের মতো উদ্দীপনা নেই একটা সময় ছিল যখন পহেলা বৈশাখ এলে ব্যস্ততা তুলনামূলক বেড়ে যেত। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এখন আর আগের মতো উদ্দীপনা কাজ করে না। তবুও মেয়েকে নিয়ে এবার ঢাকার বিভিন্ন বৈশাখী আয়োজনে বেড়াতে যাওয়ার ইচ্ছে আছে। তা ছাড়া আমাদের অভিনয় জগতের মানুষদের নিয়ে পহেলা বৈশাখে যে আনন্দ মেলা হয় সেখানে যাব। এবার এই মিলনমেলার ভেন্যু ঠিক করা হয়েছে গুলশানের ইমানুয়েল ব্যাঙ্কুয়াট সেন্টারে। সেখানে হয়তো যাব। বৈশাখী মেলার স্মৃতি বাবা ছিলেন সরকারি চাকরিজীবী। সেই সূত্রে বিভিন্ন মফস্বল শহরে পহেলা বৈশাখ উদযাপনের সুযোগ পেয়েছি। সেই সময় আব্বু-আম্মুকে নিয়ে মেলায় যেতাম। রাজবাড়ীতে যখন ছিলাম; সেই সময়ের বৈশাখী মেলার কথা মনে পড়ে। সেখানেই প্রথম কোনো এক বৈশাখী মেলায় নাগরদোলায় চড়ে ছিলাম। এত স্মৃতি আছে বলে শেষ করা যাবে না। প্রতিদিনই নতুন লাগে নতুন বছর আসছে; এ নিয়ে সীমাহীন আনন্দ আছে। তবে আমার কাছে প্রতিদিনই নতুন। প্রতিদিনই গতকালের চেয়ে ভালো কিছু করার চেষ্টা করি, জীবনটাকে আরো সুন্দর করার তাড়না অনুভব করি। পাশাপাশি দর্শকরা আমার কাছ থেকে যা প্রত্যাশা করে আমি যেন তা পরিপূর্ণ করতে পারি, সে কথা ভাবি।

বৈশাখে থাকব ভিয়েনায় : আশনা হাবিব ভাবনা

  নতুন বছরকে ঘিরে নৃত্যানুষ্ঠান ছোটবেলা থেকেই আমি নাচের সঙ্গে জড়িত সে কারণে দেখা যায়, প্রত্যেক পহেলা বৈশাখে কোথাও না কোথাও আমার নৃত্যানুষ্ঠান থাকে। সবাই যেমন নববর্ষের প্রথমদিনে বৈশাখী আমেজে ঘুরে বেড়াতে পারে, সেই সুযোগটা আমার ক্ষেত্রে থাকে না। আমার কাছে পহেলা বৈশাখ মানে নতুন বছরকে ঘিরে নৃত্যানুষ্ঠান অথবা বৈশাখী সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা। এবার পহেলা বৈশাখ ভিয়েনায় সবসময় যা হয় এবারো তার ব্যতিক্রম না। এবারো আমার প্রোগ্রাম রয়েছে। পহেলা বৈশাখে থাকব ভিয়ানায়। অস্ট্রিয়াতে এটা আমার প্রথম সফর। পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে বাংলাদেশ ও অস্ট্রিয়ার দূতাবাস মিলে ভিয়েনায় বৈশাখী অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। এতদিন শুধু ভিয়েনার তারা জ্বলা আকাশের গল্প শুনেছি, এবার স্বচক্ষে দেখা হবে। উত্তেজনা কাজ করছে। বৈশাখের স্মৃতিচারণ যখন ছোট ছিলাম তখন দেখা যেত, পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে রমনার বটমূলে যে নৃত্যোৎসব হয় সেখানে পারফর্ম করতাম। মাঝেমধ্যে শাহবাগে চারুকলার অনুষ্ঠানে যেতাম। মূলত যেসব স্থানে সাংস্কৃতিক উৎসব হতো সেসব অনুষ্ঠানে যেতাম। এখন মাঝেমধ্যে সেই অনুষ্ঠানগুলোর কথা মনে পড়ে। পরিকল্পনা করে কিছু করি না নতুন বছরকে মাথায় রেখে বিশেষ কোনো পরিকল্পনা নেই। তবে আরো নাটক-সিনেমায় অভিনয় করে যেতে চাই। পাশাপাশি নাচের সঙ্গে জড়িত থাকতে চাই। এ ছাড়া একজন আদর্শ ও ভালো মানুষ হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলতে চাই।

সবার মনে শুভ বোধ উদয় হোক : মৌসুমী হামিদ

  বৈশাখী সাজে সারাদিন প্রতিবারেই যা করি তা হলো খুব সকালে একদম বৈশাখী সাজে বাসা থেকে বের হই। যদি কোথাও নিমন্ত্রণ থাকে তবে সেখানে যাই প্রথম। পহেলা বৈশাখে সাধারণত শাড়ি পরেই সারাদিন ঘুরে বেড়াই। গন্তব্য অভিনয়শিল্পীদের মিলনমেলা তা ছাড়া প্রতি বছর পহেলা বৈশাখে উপলক্ষে আমাদের অভিনয়শিল্পী সংঘের একটা আয়োজন থাকে। বৈশাখের প্রথমদিনে আমরা সব অভিনয়শিল্পীরা সবাই একসঙ্গে এক জায়গায় মিলিত হই। সারাদিন বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, হৈহুল্লোড়, আড্ডা-গান-বাজনায় মেতে থাকি। গত বছর এই আয়োজন হয়েছিল তেজগাঁওয়ের শাহীন হলে। এবারো হয়তো কোথাও আয়োজন হবে। তাই পহেলা বৈশাখে অন্য কোথাও ঘুরতে না গেলেও আমাদের সেই মিলনমেলায় ঠিকই যাওয়া হবে। ছেলেবেলার পহেলা বৈশাখ ছেলেবেলা কেটেছে রূপসা পাড়ে, খুলনায়। সেখানে পহেলা বৈশাখ ছিল বন্ধু-বান্ধব, নিজের পরিবার-আত্মীয়-স্বজনদের নিয়ে। বৈশাখের এই বিশেষ দিনে বান্ধবীরা মিলে পুরো খুলনা শহর চষে বেড়াতাম। কোথায় কোথায় বৈশাখী মেলা হচ্ছে সেই সব খোঁজ-খবর রাখতাম; যেখানে মেলা হচ্ছে বন্ধুরা সবাই মিলে ওই জায়গায় চলে যেতাম। ঢাকায় চলে আসার পর বৈশাখ এলেই সেই দিনগুলোর কথা খুব মনে পড়ে। সবার শুভ বোধ উদয় হোক নতুন বছরকে ঘিরে এত কিছু চাওয়ার নেই; একটাই চাওয়া, ‘সবার মনে শুভ বোধ উদয় হোক’। আমাদের এই সামাজিক জীবনে অস্থিরতা বন্ধ হোক। সবাই যেন সুস্থ ও বিপদ-আপদমুক্ত জীবন কাটাতে পারে এই কামনা করি।  

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App