×

জাতীয়

নুসরাত প্রসঙ্গে কেউই বিন্দুমাত্র ছাড় পাবে না: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১১ এপ্রিল ২০১৯, ০৭:১৫ পিএম

ফেনীর সোনাগাজীতে পরীক্ষাকেন্দ্রে আগুনে ঝলসে যাওয়া মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় জড়িতরা বিন্দুমাত্র ছাড় পাবে না বলে জানিয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। বৃহস্পতিবার দুপুরে সচিবালয়ে এক বৈঠক শেষে এই কথা বলেন তিনি।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, নুসরাতের ঘটনায় পিবিআই তদন্ত করছে, দ্রুত এর চার্জশিট দেয়া হবে। এই ঘটনার যথাযথ ব্যবস্থা না নেয়ায় এবং অপরাধে সহযোগিতার কারণে প্রত্যাহার হওয়া সোনাগাজীর ওসিসহ যারাই এই হত্যাকান্ডে জড়িত ও দোষী তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে। নুসরাত হত্যায় দোষী কেউই বিন্দুমাত্র ছাড় পাবে না।

আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, এ ঘটনার সাথে যারা অভিযুক্ত সিরাজ উদ্দৌলার মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন করছে, হয়তো তারা না জেনে করছে। তদন্তসাপেক্ষে এই ঘটনার বিস্তর জানা যাবে।

এদিকে নুসরাত জাহান হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার জন্য আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

গতকাল বুধবার রাত সাড়ে ৯টায় মারা যান নুসরাত জাহান। চিকিৎসকদের প্রাণপণ চেষ্টা করেও তাকে বাঁচাতে পারেনি। টানা ১০৮ ঘণ্টা মৃত্যুর সাথে লড়াই করে অবশেষে হার মানেন এই মাদ্রাসাছাত্রী।

প্রসঙ্গত, গত ৬ এপ্রিল সকালে সোনাগাজীর ইসলামিয়া সিনিয়ার ফাজিল মাদ্রাসা পরীক্ষা কেন্দ্রে নুসরাত জাহান রাফির (১৮) গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে বোরকা পড়া চার জন। রাফি ওই মাদ্রাসা থেকেই আলিম পরীক্ষা দিচ্ছিলেন।

আগুনে হত্যাচেষ্টার পর নুসরাতকে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে এবং পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়। আগুনে তার শরীরের ৭৫ শতাংশ আগুনে পুড়ে গিয়েছিল। তার চিকিৎসায় মেডিকেল বোর্ড গঠণ করা হয়। সার্বক্ষণিক খোঁজখবর নিচ্ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

জবানবন্দিতে নুসরাত বলেছিলেন, বোরকায় মুখ ঢাকা থাকায় ওই চারজনের কাউকে তিনি চিনতে পারেননি। তবে এক পর্যায়ে তাদের একজন আরেকজনকে শম্পা নামে ডেকেছে, সেটা তার মনে আছে।

আগুনে নুসরাতের শ্বাসনালি পুড়ে যাওয়ায় মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে প্রায় আড়াই ঘন্টা অস্ত্রোপচার করা হয়। অস্ত্রোপচার শেষে মেডিকেল বোর্ডের প্রধান ও হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম জানান, সফল অপারেশন হয়েছে এবং শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে পারছে।

নুসরাতের পরিবার ও স্থানীয় সূত্র জানায়, শ্লীলতাহানির অভিযোগে ২৭ মার্চ সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা সিরাজ-উদ-দৌলা বিরুদ্ধে মামলা করেন ওই ছাত্রীর মা। মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয় পরীক্ষার আধাঘণ্টা আগে প্রশ্নপত্র দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে পিয়ন নূরুল আমিনের মাধ্যমে নুসরাতকে ডেকে নেন। এরপর শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন অধ্যক্ষ।

পরে পরিবারের দায়ের করা মামলায় গ্রেফতার হন অধ্যক্ষ। সেই মামলা তুলে না নেয়ায় অধ্যক্ষের লোকজন ওই ছাত্রীর গায়ে আগুন দিয়েছে বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App