নানা আয়োজনে নিউইয়র্কে স্বাধীনতা দিবস পালন করলো হৃদয়ে বাংলাদেশ
শামীম আহমেদ
প্রকাশ: ০২ এপ্রিল ২০১৯, ০৩:০৬ এএম
নিউইয়র্কে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস পালন করলো প্রবাসে জনপ্রিয় সেচ্ছাসেবী, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন হৃদয়ে বাংলাদেশ। গতকাল রোববার রাতে দিবসটি পালন উপলক্ষ্যে এক আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও নৈশভোজের আয়োজন করে সংগঠনটি। ব্রঙ্কসে বাংলাদেশীদের প্রাণ কেন্দ্র বলে পরিচিত বাংলাবাজার স্টার্লিং এর এশিয়ান ড্রাইভিং স্কুলের হলরুম আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন হৃদয়ে বাংলাদেশের সভাপতি সাইদুর রহমান লিংকন।
পবিত্র কোরআন তেলওয়াত ও গীতা পাঠের মাধ্যমে শুরু হয় অনুষ্ঠান। কোরআন তেলওয়াত করেন মুনতাসিম বিল্লাহ তুষার।গীতা থেকে পাঠ করেন নিরৎপাল ধ্রুব। এরপর প্রবাসে বেড়ে ওঠা এ প্রজন্মের তিন ক্ষুদে শিল্পী ঐশ্য, অর্ঘ, অর্নব এবং ব্যান্ড বাদক রাকিব অমিকে নিয়ে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সেন্টার এর প্রতিষ্ঠাতা ও এক সময়ে সাড়া জাগানো ব্যান্ডদল চাইমের ভোকাল আল আমিন বাবু পরিবেশন করেন দুটি গান। 'এই শোন আমি তার কথা বলি, হাজার বছরের যে সেরা বাঙ্গালি' এবং জয় বাংলা বাংলার জয় গান দুটির পর শামসুর রহমানের বিখ্যাত কবিতা স্বাধীনতা তুমি আবৃত্তি করতে মঞ্চে আসেন ছোট্ট বন্ধু মায়া এ্যাঞ্জেলিনা।
হৃদয়ে বাংলাদেশের সাধারন সম্পাদক পল্লব সরকারের প্রানবন্ত সঞ্চালনায় এরপর মঞ্চে আহ্বান জানানো হয় তিন বীর মক্তিযোদ্ধা বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিল যুক্তরাষ্ট্র শাখার কমান্ডার ড. আব্দুল বাতেন এমডি, বীর মুক্তিযোদ্ধা শরাফ সরকার ও আবু কাওসার চিশতিকে। তাদের ফুলে দিয়ে বরণ করা হয়। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন, ভোরের কাগজের যুক্তরাষ্ট্র প্রতিনিধি ও প্রবাস নিউজ ডটকমের সম্পাদক শামীম আহমেদ। এরপর প্রদর্শন করা হয় মুক্তিযুদ্ধের ওপর ওপর নির্মিত বিশেষ স্বল্প দৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র 'কন্যা-৭১'।
চলচ্চিত্র প্রদর্শনী শেষে তিন মুক্তিযোদ্ধা তাদের যুদ্ধকালিন স্মৃতি চারণ করেন। মুক্তিযুদ্ধে যাওয়ার গল্প, ভারতের ক্যাম্পে ট্রেনিং, ফিরে এসে যুদ্ধে বিভিন্ন অপারেশনসহ নানা আবেগঘন বিপদসংঙ্কুল সময়ের বর্ণনা উঠে আসে তাদের কথায়। মুক্তিযোদ্ধারা বলেন, মুক্তিযুদ্ধে আমাদের কোন ব্যাক্তিগত চাওয়া পাওয়া ছিলোনা। এই বাংলার মানুষের প্রতি ক্রমাগত অবহেলা, অনাদর, নজীরবিহীর বৈষম্য, চাকরি, শিক্ষা, ব্যবসা, সবকিছুতে অসমতাই বাঙালি জাতিকে যুদ্ধের দিকে ঠেলে দিয়েছে। মানুষ খেয়ে পরে ভালো থাকবে, অসমতা, অভাব দুর হবে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে এটাই আমাদের উদ্দেশ্য ছিলো।
তারা বলেন, বর্তমানে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনাকে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার লক্ষ্যে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। বাংলাদেশ হতে চলেছে এবং সুখী সমৃদ্ধশালী উন্নত দেশ আমরা সেই দিনের অপেক্ষায় আছি।
এরপর বক্তব্য রাখেন, হৃদয়ে বাংলাদেশের সভাপতি সাইদুর রহমান লিংকন ও ফাল্গুনি ক্যাটারিং এবং চটপট্টি ঘরের কর্নধার মাসুদ ফকির। তারা এ ধরনের আয়োজনকে স্বাগত জানান এবং প্রবাসে নতুন প্রজন্মের জন্য এ আয়োজন আরো বেশি করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
সবশেষে নিউইয়র্কের উদীয়মান ব্যান্ডদল 'সাধন' মঞ্চে আসে এক ব্যাতিক্রম পরিবেশনা নিয়ে। প্রথমেই রাজাকারদের ওপর লেখা ব্যঙ্গাত্মক আবৃত্তি দিয়ে শুরু হয় তাদের সাংস্কৃতিক পরিবশনা। সৈয়দ কামরুজ্জামান ফয়েজের আবৃত্তি এবং দুটি দেশের গানের পরে সঙ্গীত পরিবেশন করেন ব্যান্ডের অন্যতম ভোকাল মুসাফির মুক্তা। তিনি একটি দেশের গান এবং তার লেখা ও সুরে একটি মৌলিক গান পরিবেশন করেন তাদের সঙ্গে যন্ত্রশিল্পী হিসেবে ছিলেন বেস গিটার মোহাম্মদ নাসিরুল্লাহ, তবলায় আব্দুল কাদের, একোষ্টিক গিটারে শিপু চাকলাদার এবং ড্রামসে অনি।