×

জাতীয়

ঘোড়াশাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রে দুর্বৃত্তদের হানা, নিহত ১

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০১ এপ্রিল ২০১৯, ০৮:১১ পিএম

ঘোড়াশাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রে দুর্বৃত্তদের হানা, নিহত ১

ঘোড়াশাল তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রে দুর্বৃত্তদের হানা, ইনসেটে নিহত গোলাপ মিয়া

নরসিংদীর পলাশ উপজেলায় অবস্থিত ঘোড়াশাল তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ক্যাবল চুরিতে বাধা দিতে গিয়ে দুর্বৃত্তের হামলায় গোলাপ মিয়া (৫৫) নামে এক নিরাপত্তাকর্মী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৪ জন।

রোববার মধ্যরাতে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৭নং ইউনিটের পাশে অবস্থিত ক্যাবল স্টোরে এ হামলার ঘটনা ঘটে। নিহত গোলাপ মিয়া কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ার চরটেকি গ্রামের মৃত আব্দুল বারিক মিয়ার ছেলে। তিনি ঘোড়াশাল তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রে নিরাপত্তাকর্মী হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

আহতরা হলেন, বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নিরাপত্তা সুপারভাইজার আবুল কালাম আজাদ, নিরাপত্তাকর্মী সাজ্জাত রহমান, আনসার সদস্য আসাদউল্লাহ ও উজ্জল মিয়া।

পুলিশ ও আহতদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রাতে বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৭নং ইউনিটের পাশে অবস্থিত ক্যাবল স্টোরে নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন নিরাপত্তাকর্মী গোলাপ মিয়া ও সাজ্জাত রহমান। স্টোরের পাশে নিরাপত্তায় ছিলেন আসাদউল্লাহ ও উজ্জল নামে দুই আনসার সদস্য। রাত আনুমানিক ২টার দিকে নিরাপত্তাকর্মীদের তদারকি করতে ঘটনাস্থলে যায় সুপারভাইজার আবুল কালাম আজাদ।

এসময় স্টোর থেকে ৪/৫ জন দুর্বৃত্তকে একটি মোটা তামার ক্যাবল বের করতে দেখে সুপার ভাইজার নিরাপত্তাকর্মীদের ডেকে নিয়ে যায়। এবং সেখানে বাধা দিতে গিয়ে দুর্বৃত্তদের সঙ্গে থাকা আরও ১৫/২০ জন লোক নিরাপত্তাকর্মীদের ওপর দেশীয় অস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে অর্তকিত হামলা চালায়। এতে হামলায় আহত হয়ে ঘটনাস্থলেই নিহত হয় নিরাপত্তাকর্মী গোলাপ মিয়া। পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা গিয়ে আহতদের উদ্ধার করে বিদ্যুৎকেন্দ্রের আবাসিক হাসপাতালে ভর্তি করে।

আহত নিরাপত্তাকর্মী সাজ্জাত রহমান জানান, প্রথমে ৪/৫ জন লোক ক্যাবল টেনে নিয়ে যাচ্ছিল। পরে আমরা তাদের বাধা দেই। এরপর নির্জন একটি ঝোপ থেকে আরও ১৫/২০ জন লোক রামদা ও লাঠি নিয়ে আমাদের ওপর হামলা চালায়। হামলার সময় আনসার সদস্যদের সঙ্গে দুটি শর্টগান ছিল। সুপাভাইজার তাদেরকে ফাঁকা গুলি ছোড়ার নির্দেশ দিয়েছিল কিন্তু তারা কেউ-ই গুলি ছোড়েনি। এছাড়া হামলার সময় ঘটনাস্থল থেকে আমরা সহকারী পরিচালক (নিরাপত্তা) এডি স্যারকে ফোন করে হামলার বিষয়টি জানিয়েছিলাম। কিন্তু তিনি আমাদের ওপর হামলার বিষয়টি বিশ্বাস না করে এড়িয়ে যান। তখন তিনি বলেন নিরাপত্তায় অস্ত্রসহ দুইজন আনসার সদস্য থাকা অবস্থায় কীভাবে এ হামলা হয়। পরে আমরা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রধান ফটকে দায়িত্বরত নিরাপত্তাকর্মীদের জানালে তারা পুলিশ ও বিদ্যুৎকেন্দ্রে অবস্থানরত সেনাসদস্যদের অবগত করলে তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে আমাদের উদ্ধার করে।

আহত সুপারভাইজার আবুল কালাম আজাদ জানান, হামলার শুরুতেই তাৎক্ষণিক আমাদের জীবন রক্ষার্থে দুই আসনার সদস্যকে ফাঁকা গুলি করার কথা বলেছিলাম। কিন্তু তারা শর্টগান হাতেই নেয়নি। বরং তারা বন্দুক কাঁধে রেখেই মার খেতে থাকল। তখন আনসার সদস্যরা গুলি ছোড়লে আমাদের ওপর এমন হামলা হতোনা আর নিরাপত্তাকর্মী গোলাপ মিয়াও মারা যেত না।

এ বিষয়ে ঘোড়াশাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রে দায়িত্বরত আনসার কমান্ডার আক্তার হোসেন জানান, নিরাপত্তায় আনসার সদস্যদের সঙ্গে দুটি শর্টগানে ৫ রাউন্ড করে ১০ রাউন্ড গুলি ছিল। নির্দেশ দেয়ার পরও কেন তারা গুলি ছোড়েনি সেই বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।

এ ঘটনায় ঘোড়াশাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের সহকারী পরিচালক (নিরাপত্তা) মো. কামাল মজুমদারের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে সাংবাদিক পরিচয় শুনার পর তিনি ফোনটি বন্ধ করে দেন।

পলাশ থানা পুলিশের ওসি মকবুল হোসেন মোল্লা জানান, নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। ঘটনা তদন্ত করে আসামিদের দ্রুত গ্রেফতার করা হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App