×

জাতীয়

অগ্নি নিরাপত্তায় একগুচ্ছ নির্দেশনা প্রধানমন্ত্রীর

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০১ এপ্রিল ২০১৯, ০৪:২১ পিএম

অগ্নি নিরাপত্তায় একগুচ্ছ নির্দেশনা প্রধানমন্ত্রীর
রাজধানীর বনানীর এফআর টাওয়ারে অগ্নি দুর্ঘটনায় নিহতের প্রতি শোক জানাতে শোক প্রস্তাব গ্রহণ করেছে মন্ত্রিসভা। এছাড়া অগ্নি দুর্ঘটনা এড়াতে ১২ দফা নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সোমবার (০১ এপ্রিল) সচিবালয়ে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এইসব নির্দেশনা দেয়া হয়। বৈঠকে শেষে ব্রিফ্রিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা তুলে ধরে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, যখন ভবন তৈরি করা হবে, তখন ফায়ার সার্ভিস একটি ক্লিয়ারেন্স দেয়, এ ক্লিয়ারেন্স যথেষ্ট নয় এর সঙ্গে পরিদর্শন করে এটা ভায়াবল কিনা সেটা নিশ্চিত করতে হবে। তিনি বলেন, ফায়ার সেফটির বিষয়টি নিয়মিত ইন্সপেকশন (পরিদর্শন) করা। ফায়ার সার্ভিস যে অনুমোদনটা দেয়, এটা ইন্ডাস্ট্রির মতো প্রতি বছর একবার করে নবায়ন করা যায় কিনা- সেটা দেখা। প্রধানমন্ত্রী বিল্ডিং কোড অনুসরণ করে ভবন নির্মাণের নির্দেশনা দিয়েছেন জানিয়ে শফিউল আলম বলেন, ফ্রিকোয়েন্টলি এক থেকে তিন মাসের মধ্যে বা সুবিধামতো সময়ে অগ্নি মহড়া করা। যাতে সবাই সচেতন হয়। তিনি বলেন, পানির অভাবে অনেক সময় ফায়ার সার্ভিস আগুন নেভাতে পারে না। পানির অভাবজনিত সমস্যা তৈরি হচ্ছে। ঢাকায় যে খাল, ডোবা, ঝিল ছিল তা বন্ধ হয়ে গেছে। যেখানে যেখানে সম্ভব জলাধার তৈরি করে পানির অভাব পূরণের জন্য বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। শেখ হাসিনা ভরাট হয়ে যাওয়া লেকগুলো সংরক্ষণের নির্দেশনা দিয়েছেন জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ধানমন্ডি ও গুলশান লেক এগুলো যাতে কেউ দখল করতে না পারে তা নিশ্চিত করা। এখন ফায়ার সার্ভিসের সাকুল্যে তিনটি ল্যাডার আছে, যেগুলো ২৩ তলা পর্যন্ত যেতে পারে। ফায়ার সার্ভিসের সক্ষমতা ও ল্যাডারের সংখ্যা বাড়ানো। তিনি আরও বলেন পরিবেশ ও বাস্তবতার দিকে চিন্তা করে যাতে স্থপতিরা প্ল্যানটা করেন। ঘর যেগুলো তৈরি করা হয় তা অনেকটা ম্যাচ বাক্সের মতো। এখানে কোনো দরজা-জানালা থাকে না, গ্লাস দিয়ে ব্লক, এসি করা। এবার এটা ভেঙে বেরুতে হয়েছে। এজন্য দরজা, জানালা বা বারান্দা থাক তবে বের হওয়ার একটা সুযোগ যেন থাকে। ফায়ার এক্সিট নিশ্চিত করা। শুধু হাইরাইজ নয়; প্রতিটি দালানে শতভাগ ফায়ার এক্সিট নিশ্চিত করা, যাতে সবাই যেতে পারে। শফিউল আলম বলেন, অনেক স্থানে ইলেকট্রনিক সিস্টেমে দরজা নিয়ন্ত্রণ করা হয়। ফায়ার এক্সিটগুলো সবসময় ওপেন থাকবে। এটা ইলেকট্রনিক সিস্টেম দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করলে যথন ইলেকট্রনিক সিস্টেম ফেইল করবে বিদ্যুৎ থাকবে না তখন এটা চলবে না। এজন্য এটা যাতে ম্যানুয়ালি হ্যান্ডেল করা যায় এভাবে রাখতে হবে। বিশেষ করে হাসপাতাল ও স্কুলগুলো যেখানে লোকসমাগম বেশি হয়, ওখানে অবশ্যই বারান্দা বা খোলা জায়গা রাখার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। ইন্টেরিয়র ডেকোরেটর যারা করে তারা অনেক সময় এগুলো ব্লক করে দেয়, এটা যেন না করে। আগুন লাগার সময় অনেকে লিফট ব্যবহার করেন। কিন্তু সারা বিশ্বেই আগুন লাগার সময় লিফট ব্যবহার করা নিষেধ। এ জিনিসগুলো ট্রেনিং কিংবা সচেতনতার অভাব আছে। মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে- বলেন শফিউল আলম। প্রত্যেকটি ভবনে যেন কমপক্ষে একাধিক বের হওয়ার পথ থাকে। অনেক সময় হুড়োগুঁড়ি করে নামতে গিয়ে মারা যায়। এটা যেন না হয়- সেই নির্দেশনাও দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। মন্ত্রিপরিষদ সচিব আরও বলেন, বৈঠকে গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী অবহিত করেছেন পুরো ঢাকা শহরের জন্য ২৪টি টিম গঠন করা হয়েছে। টিমগুলো পুরো ঢাকা শহরে যত ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ও হাইরাইজ বিল্ডিং আছে পরিদর্শন করে যেটা কম্প্যায়েন্সের আওতায় আসবে তা ফিট বলে ঘোষণা দেয়া হবে। যেটা আনফিট সেটা বন্ধ করে দেয়া হবে। কঠোর ভাবে এটা এনফোর্স করা হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App