×

অর্থনীতি

ফেসবুক, গুগলে বিজ্ঞাপন খরচ ১৯৭ কোটি টাকা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ৩০ মার্চ ২০১৯, ০১:২৫ পিএম

ফেসবুক, গুগলে বিজ্ঞাপন খরচ ১৯৭ কোটি টাকা
বাংলাদেশি বিভিন্ন কোম্পানি গত পাঁচ বছরে বিশ্বব্যাপী ইন্টারনেট জায়ান্টদের প্রধানত ফেসবুক এবং গুগলকে ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে ডিজিটাল বিজ্ঞাপন বাবদ ১৯৭ কোটি টাকা (২.৩৫ কোটি ডলার) পরিশোধ করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, সরকার এই খাত থেকে মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) এবং অগ্রিম আয়কর বাবদ ৪১.৫৯ কোটি টাকা পেয়েছে। প্রদেয় বিলগুলোর মধ্যে গুগল এশিয়া প্যাসিফিক পিটি লিমিটেড সর্বোচ্চ ১০৩.৪৭ কোটি টাকা (১.২৩ কোটি ডলার) পেয়েছে। এর পরে ফেসবুক আয়ারল্যান্ড লিমিটেড ৮৯.২৪ কোটি টাকা (১.০৬ কোটি ডলার) পেয়েছে। ভারতভিত্তিক দুটি কোম্পানি- আল্টিমিডিয়া ই সলিউশন প্রাইভেট লিমিটেড এবং এসআরবি টেকনোলজি প্রাইভেট লিমিটেড অল্প কিছু বিজ্ঞাপন বিল পেয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, কিছু বিজ্ঞাপন সংস্থা ও মধ্যস্থতাকারী সংগঠনগুলো বহুজাতিক কোম্পানিসহ স্থানীয় বিজ্ঞাপনদাতাদের পক্ষে ফেসবুক, গুগল, ইউটিউব, ইয়াহু এবং অন্যান্য গ্লোবাল ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের অর্থ প্রদান করেছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) অনুরোধের ভিত্তিতে ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে এ খাত থেকে কর সংগ্রহের জন্য লেনদেন সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য তথ্য সংগ্রহ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এনবিআর কর পরিশোধ পরিস্থিতি পরীক্ষা করে দেখতে এবং এই খাতে কর ফাঁকির ঘটনা ঘটছে কিনা তা খুঁজে বের করতে পদক্ষেপ নিয়েছে। এই খাতে কর ফাঁকির অভিযোগ রয়েছে। যার কারণে স্থানীয় অনলাইন সংবাদপত্র শিল্পগুলোতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। নিউজপেপার ওনার্স এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (নোয়াব) বহুবার অর্থ মন্ত্রণালয় এবং এনবিআরকে ট্যাক্স নেটের অধীনে বিজ্ঞাপন বিল আনতে দাবি জানিয়ে বলেছে, স্থানীয় গণমাধ্যমের মোট বিজ্ঞাপন অর্ধেক আগে থেকেই বিশ্বব্যাপী ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলো নিয়ে নিয়েছে। বিশ্বব্যাপী প্রযুক্তি জায়ান্টদের অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলোতে বাংলাদেশি ব্যক্তি এবং কোম্পানিগুলো প্রদত্ত বিজ্ঞাপনের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে ওই সব প্রতিষ্ঠানের আয় থেকে সরকার কোনো কর পাচ্ছে না, কারণ তাদের বাংলাদেশে কোনো অফিস নেই। ব্যাংকগুলো বিল পরিশোধের সময় প্রযোজ্য ভ্যাট এবং অগ্রিম আয়কর কেটে রাখে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলো অর্থের উদ্দেশ্যগুলো শনাক্ত করতে পারে না, বিশেষত যখন পরিমাণটি খুব ছোট হয়। ভ্যাট এবং এআইটি হার যথাক্রমে ১৫ এবং ২০ শতাংশ। কর্মকর্তারা বলছেন, মোট পরিশোধিত বিলের আকার অনুযায়ী মোট করের পরিমাণ প্রায় ৭০ কোটি টাকা হওয়া উচিত, অনেকগুলো ক্ষেত্রে ব্যাংক কর্মকর্তারা অজ্ঞতার কারণে ট্যাক্স কাটতে না পারায় কর সংগ্রহ কম ছিল। এ অবস্থায় আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের কর সংগ্রহ নিশ্চিত করার জন্য সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী এনবিআর একটি বিশেষ কমিটি গঠন করে। বিবির তথ্য অনুযায়ী, এশিয়াটিক মাইন্ডশায়ার লিমিটেড, হ্যাভাস মিডিয়া বাংলাদেশ, মিডিয়া অ্যাক্সিস, অ্যাক্টিভ মিডিয়া সলিউশনস লিমিটেড, বিটোপি বিজ্ঞাপন লিমিটেড, অ্যাক্সেস টেলিকম বিডি, মেলনডেস, জিকে সোশ্যাল লিমিটেড, সফটওয়ন্ড টেক, অ্যানালাইজেন বাংলাদেশ লিমিটেড, শপফ্রন্ট লিমিটেড, মেডিকেমিক লিমিটেড ও রাইজ আইটি সলিউশনস লিমিটেড এসব বিল পরিশোধ করেছে। ব্যাংক এশিয়া, ডাচ্-বাংলা ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, সিটি ব্যাংক এনএ, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, এবি ব্যাংক, সাউথইস্ট ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক এবং সিটি ব্যাংকের মাধ্যমে এই বিজ্ঞাপনের বিল প্রদান করা হয়েছে। ২০১৪-১৮ সালে ব্যাংক এশিয়ার মাধ্যমে সর্বোচ্চ ১০২.৯৫ কোটি টাকা, সিটি ব্যাংক এনএ-এর মাধ্যমে ৪২.৫৬ কোটি টাকা এবং ডিবিবিএলের মাধ্যমে ১৯ কোটি টাকা প্রদান করা হয়েছিল। এনবিআরের কর্মকর্তারা জানান, কমিটি এই খাত থেকে কর সংগ্রহ নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর কাছ থেকে প্রাসঙ্গিক তথ্য সংগ্রহসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। তারা বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি ছাড়াই রপ্তানিকারকরা বিশ্বব্যাপী প্ল্যাটফর্মে বিজ্ঞাপন দিতে পারে। তবে এর জন্য লেনদেনের পরিমাণ খুব কম। তবে মধ্যস্থতাকারীরা বিজ্ঞাপন বাবদ ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে অর্থ প্রদানের জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে পূর্ব অনুমোদন নিতে হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App