×

মুক্তচিন্তা

অগ্নিনিরাপত্তা নিয়ে কেন এত উদাসীনতা?

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৯ মার্চ ২০১৯, ০৮:১৮ পিএম

আবারো রাজধানীতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড, আবারো বিপুল প্রাণহানি! পুরান ঢাকার চকবাজারের চুড়িহাট্টায় অগ্নিকাণ্ডে ক্ষত না শুকাতেই অভিজাত এলাকা বনানীর বহুতল এফ আর টাওয়ারে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এক শ্রীলঙ্কানসহ অন্তত ২৫ জন নিহত হয়েছেন। দগ্ধ ও পড়ে আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৭০ জন।

দেশে প্রতি বছর অগ্নিকাণ্ডে সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি ছাড়াও প্রচুর মানুষ মারা যাচ্ছে। প্রায়ই বস্তি, গার্মেন্টস ও শিল্পকারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা আমরা দেখছি। বছরের পর বছর ধরে এ ধরনের দুর্ঘটনা ঘটলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ মনে হয় উদাসীন।

এমতাবস্থায় অগ্নিপ্রতিরোধ ও নির্বাপণ ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থাপনায়ও বড় পরিবর্তন আনা হয়েছে। আধুনিক যন্ত্রাংশের ব্যবহার বেড়েছে। আগে যেখানে ক্রেন সাত তলার ওপর পৌঁছাত না, এখন সেখানে ২০তলা পর্যন্ত পানি ও কর্মী বহন করার মতো ক্রেন রয়েছে। দমকল কর্মী ও প্রশিক্ষণও বাড়ানো হয়েছে। বিএসইসি ভবন ও বসুন্ধরা সিটিতে অগ্নিনির্বাপণের সময় দমকলবাহিনী ছিল অসহায়। কারণ তখন আধুনিক যন্ত্রাংশ ছিল না, প্রশিক্ষিত কর্মী বাহিনীর অভাব ছিল।

এখন পানি সরবরাহের গাড়িও বাড়ানো হয়েছে। এরপরও কি হতাহতের সংখ্যা কমেছে? বনানীতে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে দীর্ঘ সময় লাগায় প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। ঢাকার অধিকাংশ বহুতল ভবনে পর্যাপ্ত অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা নেই। নেই ঠিকঠাক জরুরি নির্গমন ব্যবস্থাও।

সংশ্লিষ্ট আইন ও নীতিমালা অনুসরণ না করে তৈরি হওয়া ভবনগুলো পরিণত হয়েছে মৃত্যুফাঁদে! বনানীর এফ আর টাওয়ারের এমনই অভিযোগ উঠেছে। ফায়ার সার্ভিস কাজ করতে এসে বেগ পেতে হয়েছে। ভবন নির্মাণ ও সম্প্রসারণে নিয়ম না মানা এবং অগ্নিপ্রতিরোধ ও নির্বাপণ সংক্রান্ত আইন ও বিধিমালা না মানার ফলে বারবার মানুষের জীবন বিপন্ন হচ্ছে।

দুঃখজনক হলেও সত্য যে, এ ধরনের ঘটনা বারবার ঘটছে এবং প্রাণ ও সম্পদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে, তা সত্ত্বেও সংশ্লিষ্টদের টনক নড়ছে না। বনানীর এফ আর টাওয়ারে আগুনে হতাহতের ঘটনা আমরা দেখছি। কিছুদিন আগে পুরান ঢাকার কেমিক্যাল গুদামে, চট্টগ্রামে বস্তিতে এবং রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মতো স্পর্শকাতর স্থাপনায় অগ্নিকা-ের ঘটনা ঘটে।

এমন ঘটনার আর পুনরাবৃত্তি আমরা দেখতে চাই না। বনানীর ঘটনার তদন্তে কমিটি গঠন করা হয়েছে। সঠিক তদন্ত কাম্য।

আহত যারা হয়েছেন তাদের সুচিকিৎসার দায়িত্ব সরকার নিয়েছে। চিকিৎসায় যাতে কোনো ধরনের অবহেলা না হয় সেদিকে খেয়ালও রাখতে হবে। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের লোকবল ও প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের অভাব রয়েছে। সরঞ্জাম সংগ্রহ ও জনবল বৃদ্ধির পদক্ষেপ নেয়া জরুরি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App