×

বিশেষ সংখ্যা

প্রসঙ্গ : শব্দসৈনিকদের স্বীকৃতি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৮ মার্চ ২০১৯, ০২:১৯ পিএম

মুক্তিযুদ্ধে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের প্রতিটি শব্দসৈনিক অস্ত্র হাতে না নিলেও তাদের কণ্ঠ, কলমের লেখনী, বুদ্ধিমত্তা আর সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড দিয়ে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের রণাঙ্গন ও দেশবাসীর মনোবলকে অটুট রেখেছে, সাহস দিয়েছে, উৎসাহ জুগিয়েছে, সর্বোপরি বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখিয়েছে। তাই জাতির জনক কন্যা মাদার অব হিউমেনিটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই সব শব্দসৈনিককে মুক্তিযোদ্ধার সম্মান দিয়েছেন তেমনি ভাতাও দিয়েছেন। এ কাজটি অতীতের কোনো সরকার করতে পারেনি। এ জন্য স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের সব শব্দসৈনিকের পক্ষ থেকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে জানাই আমার আন্তরিক কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণ শুনে উদ্বুদ্ধ হয়েই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম, যুদ্ধে যাবো, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে গান করবো। ২৫ মার্চের কালরাত্রির পর থেকেই চেষ্টা করছিলাম মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য, প্রতিদিনই সুযোগের অপেক্ষায় ছিলাম। ইতোমধ্যে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের পূর্ণাঙ্গ অধিবেশন শুরু হয়েছে। ১৯৭১ সালের জুন মাস মুক্তিযুদ্ধ চলছে, তখনই কোনো এক ভোররাত, ঘুম থেকে উঠলাম। ঘরে মা, বাবা, ভাই-বোন, খাটে মশারি টাঙানো। পরনের কাপড়েই বেরিয়ে গেলাম, ঘরের কাউকে কিছু না বলে। আমি পরিবারের সবার ছোট ছেলে, খুব আদরের, তাই, মাকে বলতে গেলে হয়তো পরিবেশ আরো দুঃখ ভারাক্রান্ত হবে, আবেগ ধরে রাখতে পারব না। মাকে ছেড়ে যেতে পারব না, কান্নাকাটি শুরু হয়ে যাবে। তাই ভোর পাঁচটায় চুপি চুপি দরজাটা খুলে ঘর থেকে বের হয়ে গেলাম স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের উদ্দেশ্যে। কোনো দলের সঙ্গে বা কারো সঙ্গে নয়, একা বেরিয়ে গেলাম যুদ্ধ করতে, গন্তব্যস্থল স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র। নীলক্ষেত থেকে ইপিআরটিসি (বর্তমান বিআরটিসি) বাসে উঠলাম। কাঁচপুর, দাউদকান্দি হয়ে কুমিল্লা পৌঁছালাম। দাউদকান্দিতে গিয়ে দেখলাম পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ব্রাশ ফায়ার করছে সবাইকে চোখ বেঁধে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। কাউকে আবার ছেড়ে দিচ্ছে, আমাকে কোনো প্রশ্ন না করে এক ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দিলো মিলিশিয়া আর রাজাকার, আলবদররা। দৈবক্রমে বেঁচে গেলাম। ঈশ্বর বুঝি আমার সহায়। এরপর কুমিল্লার আড়িখোলা গ্রামের এক পরিবারের সঙ্গে রাত কাটিয়ে তাদেরই সহযোগিতায় পরদিন পার হলাম বর্ডার। পৌঁছালাম আগরতলা, সেখানে কলেজটিলায় গণসঙ্গীতের একটি দল ইতোমধ্যে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুরু করেছে। সেখানে এক মাস থাকলাম। কাজ ছিল প্রতিদিন সন্ধ্যায় মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্বুদ্ধ করার জন্য দেশত্মবোধক, উদ্দীপনামূলক গান শোনানো। এরপর পল্লীগীতি শিল্পী মরহুম সরদার আলাউদ্দিনকে সঙ্গে নিয়ে আগরতলা থেকে কলকাতায় ৫৭/৮, বালীগঞ্জ সার্কুলার রোডে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে পৌঁছালাম। সেখানে গিয়ে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে গান শুরু করলাম। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে প্রচারিত এবং সেখানে রেকর্ডকৃত বেশিরভাগ গানেই আমার কণ্ঠ আছে। এই সময় পূর্ব দিগন্তে সূর্য উঠেছে, নোঙর তোলো তোলো ও আমার দেশের মাটি, আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি ইত্যাদি দেশের গান গাওয়া হতো দল বেঁধে। যতগুলো রেকর্ড করা গান রয়েছে সবগুলোতেই আমার কণ্ঠ রয়েছে। বিভিন্ন মুক্তিযুদ্ধ কলকাতায় ক্যাম্পে প্রখ্যাত শিল্পীদের সঙ্গে আমরা গান গাইতাম। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য একটি ঘটনা হলো- স্বাধীন বাংলা বেতার একদিন প্রখ্যাত লোকসঙ্গীত শিল্পী হরলাল রায় আমাকে দিয়ে একটি দ্বৈত সঙ্গীত গাওয়ালেন নাসরিন আহম্মদ শীলু আপার সঙ্গে (বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো ভিসি, তখন তিনি ইংরেজি সংবাদ পাঠ করতেন) গানটির কথা ছিল ‘জ্বলছে জ্বলছে প্রাণ আমার দেশ আমার’, গানটি লিখেছিলেন গীতিকার শহিদুল ইসলাম। এই গানটি ছিল আমার গাওয়া স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে প্রথম দ্বৈত সঙ্গীত। গানটি স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে প্রচারের দিন প্রথমবারের মতো আমার নাম ঘোষণা করা হয়। দিনটি ছিল ২১ অক্টোবর ১৯৭১, দ্বিতীয় অধিবেশনে গানটি প্রচার হয় এবং সেই দিনই আমার বাব-মা বাংলাদেশে থেকে জানতে পারেন আমি জীবিত আছি, এটা আমার জীবনের একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা। একাত্তরের স্বাধীনতা যুদ্ধের দ্বিতীয় ফ্রন্ট হিসেবে কাজ করেছে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র। সাড়ে সাত কোটি বাঙালি যখন পাক-হানাদার বাহিনীর আক্রমণে দিশেহারা, শোকাতুর, কামানের গোলায় পুলিশ লাইন ভস্মীভ‚ত এবং যখন ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট এবং ইপিআরের কিছু বঙ্গশার্দল সম্পূর্ণ অন্ধভাবে স্ব স্ব দায়িত্বে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছিলেন, অন্ধভাবে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন প্রতিরোধ সংগ্রামে, ঠিক তখনই জন্ম নিয়েছিল স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী বেতার কেন্দ্র। এই বেতার কেন্দ্রের প্রথম অনুষ্ঠান শোনামাত্র বহু বাঙালি অশ্রু সংবরণ করতে পারেননি। সে অশ্রু ছিল আনন্দের, স্বস্তির, গৌরবের। বাঙালি আবার উঠে দাঁড়াল গভীর আত্মবিশ্বাসে। বীর মুক্তিযোদ্ধারা পেলেন শত্রুর ওপর আঘাত হানার নতুন প্রেরণা। ১৯৭০ সাল থেকেই ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের ডাকসুর সব সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের সঙ্গে সে সময় আমি জড়িত ছিলাম, ১৯৭১ সাল এ আমি ঢাকা ডেন্টাল কলেজে ভর্তি হই। ঢাকা মেডিকেল কলেজের চার তালায় ঢাকা ডেন্টাল কলেজ ছিল। তখন ঢাকা মেডিকেল কলেজ এবং ডেন্টাল কলেজ একই ছাত্র সংগঠনের আওতাধীন ছিল। বছরের সব সংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করতাম। ১৯৭১ থেকে শুরু হলো মুক্তিযুদ্ধ। সেই সময় ঢাকায় বিক্ষুব্ধ শিল্পীগোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত হই। সব সাংস্কৃতিক আন্দোলনের সঙ্গে তখন আমি জড়িত ছিলাম, আমরা রাস্তায় রাস্তায় গান করি। প্রথম পর্যায়ে চট্টগ্রাম বেতারের কালুরঘাট ট্রান্সমিটারে স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী বেতার কেন্দ্র সংগঠিত হয়েছিল চট্টগ্রাম বেতারের দশজন নিবেদিত কর্মী (দুজন বেতার কর্মী ছিলেন না), স্থানীয় নেতারা, জনগণ এবং ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের সহযোগিতায়। এই বিপ্লবী বেতার কেন্দ্রের ১০ জন সার্বক্ষণিক সংগঠক ছিলেন। দুদিন পর এই বেতার কেন্দ্রের নাম থেকে বিপ্লবী কথাটি বাদ দেয়া হয়েছিল। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের প্রচার বাধাহীনভাবে এগোতে পারেনি। প্রচণ্ড বাধা এলো চার দিনের মধ্যে। শত্রুর বোমারু বিমান থেকে ৩০ মার্চ, ১৯৭১ চট্টগ্রাম বেতারের কালুরঘাট ট্রান্সমিটারে বোমা ফেলা হলো। উপায়ন্তর না দেখে বাংলার বীর শব্দসৈনিকরা তৎকালীন ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলসের সহায়তায় একটি ক্ষুদ্র এক কিলোওয়াট ট্রান্সমিটার বয়ে নিয়ে যান মুক্তাঞ্চলে। ১৭ এপ্রিল, কুষ্টিয়ার বৈদ্যনাথতলায় এই অস্থায়ী সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মপ্রকাশের পর মুক্তিযুদ্ধের প্রচার জোরদার করার উদ্দেশ্যে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রকে নতুন করে সংগঠনের দায়িত্ব অর্পিত হয় আব্দুল মান্নানের (এমএন) ওপর। মুজিবনগরে পঞ্চাশ কিলোওয়াট (মধ্যম তরঙ্গ) শক্তিসম্পন্ন স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শুভ সূচনা হয় ২৫ মে। পূর্ণ উৎসাহ ও উদ্দীপনার সঙ্গে শুরু হয় এই বেতার কেন্দ্রের প্রচার। দৈনিক সকাল ৭টা ও সন্ধ্যা ৭টা এ দুই অধিবেশনে শুরু হয় এ অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠান সূচিতে অন্তর্ভুক্ত হয় বাংলা এবং ইংরেজি খবর, সংগ্রামী মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য বিশেষ অনুষ্ঠান ‘অগ্নিশিখা’, ‘চরমপত্র’ ‘বিশেষ কথিকা’, ‘বঙ্গবন্ধুর বাণী’ এবং দেশাত্মবোধক গানের অনুষ্ঠান ‘জাগরণী’। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের কাজ চলত ছোট একটি দ্বিতল বাড়িতে। অনুষ্ঠান বাণীবদ্ধ করার জন্য স্টুডিও ছিল মাত্র একটি। পরে আর একটি কক্ষ খালি করে অনুষ্ঠান রেকর্ডিংয়ের ব্যবস্থা হয়। তবে এগুলোয় পেশাদার স্টুডিওর মতো কোনো শব্দ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা ছিল না, ছিল না প্রয়োজনীয় বাদ্যযন্ত্র। অবশ্য পরবর্তীকালে বাদ্যযন্ত্রের আংশিক অভাব পূরণ হয়। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের নিচতলায় ছিল রান্নাঘর, ওখানেই আমরা খেতাম। সারাদিন এবং গভীর রাত পর্যন্ত কাজ করে, গান রেকর্ড করে ওই বাড়ির খোলা মেঝেই চাদর পেতে শুয়ে পড়তাম। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে ইতিহাসের মর্মান্তিক হত্যাযজ্ঞের পর ২৬ মার্চের সূর্য বয়ে এনেছিল বাংলার বুকে এক সাগর রক্ত, হাহাকার এবং শোকের কালো ছায়া। বাঙালির স্বাধিকার আদায়ের সংকল্প ও তেজ ২৫ মার্চের ওই কালরাত্রির হত্যার সঙ্গেই স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল চিরদিনের জন্য। কিন্তু না, এমনি হতাশার মধ্যে ২৬ মার্চ অপরাহ্ণ প্রায় দুটার সময় তৎকালীন চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্র থেকে একটি বিদ্রোহী কণ্ঠে বাংলার জনগণের প্রতি দখলদার বাহিনীকে সর্বশক্তি দিয়ে রুখে দাঁড়ানোর উদাত্ত আহবান। স্বাধীন বাংলা বিপ্লবী বেতার কেন্দ্র ইথারে আলোড়ন তুলল ‘বীর বাঙালিরা ইয়াহিয়া চক্রকে প্রতিহত করছে সর্বশক্তি দিয়ে। ইপিআর এবং পুলিশ বাহিনী বীর বিক্রমে শত্রুর ওপর আঘাত হানছে। দেশপ্রেমিক বঙালিরা রাস্তায় রাস্তায় ব্যারিকেড সৃষ্টি করে শত্রুর অগ্রযাত্রা প্রতিরোধ করছে। দিকে দিকে চলছে শত্রু হননের মিছিল’। ইথারে ভেসে আসা শব্দ যে বুলেটের চেয়েও শক্তি নিয়ে শত্রুর বিরুদ্ধে আঘাত হানতে পারে তার প্রমাণ হচ্ছে ‘স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র’, ইয়াহিয়া খানের নেতৃত্বে টিক্কা-নিয়াজী-ফরমান আলীর পাক-পশুরা সেদিন বুলেট-বেয়নেট দিয়ে বাংলাদেশের জনগণের স্বাধীনতা সংগ্রামকে স্তব্ধ করতে চেয়েছিল। আর স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র হাতিয়ারের চেয়ে শক্তিশালী আঘাত হেনেছে নরপশুদের বিরুদ্ধে। এই কেন্দ্র থেকেই বাংলাদেশের নবগঠিত সরকারের প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের ভাষণ ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল প্রথমবারের মতো বহির্বিশ্বে প্রচারিত হয়। মুজিবনগর সরকার নিজস্ব পূর্ণাঙ্গ বেতার কেন্দ্রের গুরুত্ব অনুধাবন করে ভারত সরকারের সহযোগিতায় স্বাধীন বাংলা বেতর কেন্দ্রের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি সংগ্রহ করে। প্রাপ্ত যন্ত্রপাতি দিয়ে নানা প্রতিক‚লতার মধ্যেও ১৯৭১ সালের ২৫ মে মুজিবনগর থেকে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র পূর্ণাঙ্গভাবে কার্যক্রম শুরু করে, যা ১৯৭২ সালের ২ জানুয়ারি পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের এই অবদানের কথা যেমন অনস্বীকার্য তেমনি এই বেতার কেন্দ্রের সব শিল্পী কলাকুশলীকে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি ও যুদ্ধে তাদের প্রশংসনীয় ভ‚মিকা ও সব পর্যায়ে সমাদৃত। বর্তমান বাংলাদেশ সরকার স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের সব শব্দসৈনিককে মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে সম্মান ও স্বীকৃতিই শুধু দেননি তাদের জন্য ভাতাও বরাদ্দ করেছেন। এর জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর সরকারকে জানাই আমাদের আন্তরিক কৃতজ্ঞতা। একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া অনেক গৌরবের, বীরত্বের এবং সম্মানের।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App