×

জাতীয়

শতবর্ষী গাছগুলো উপড়ে পড়ছে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৪ মার্চ ২০১৯, ০৪:১৯ পিএম

শতবর্ষী গাছগুলো উপড়ে পড়ছে
দুই পাশের শতবর্ষী গাছ অক্ষত রেখেই শুরু হয়েছে যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের পুনর্নির্মাণকাজ। সড়ক চওড়া এবং ৪ থেকে ৫ ফুট গর্ত করায় পাশের শতবর্ষী বৃক্ষগুলো উপড়ে পড়ছে। সামনের কালবৈশাখীতে বহু গাছ উপড়ে পড়ে এই সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যাবে বলে মনে করছেন অনেকে। ইতোমধ্যে রাস্তার পাশ থেকে ঝুঁকিপূর্ণ গাছ কাটার জন্য জেলা পরিষদের ১০ জন আবেদন করেছেন। গত বছরের নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে দুই লেনের এ মহাসড়কের কাজ শুরু হয় শহরতলীর পুলেরহাট। সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ, যশোর কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, দুটি প্যাকেজে কাজ চলছে। যশোর শহরের দড়াটানা থেকে বেনাপোল বন্দরের বাংলাদেশ অংশের নো-ম্যান্স ল্যান্ড পর্যন্ত ৩৮ কিলোমিটারের মহাসড়কটি নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৩২৮ কোটি টাকা। সওজ বিভাগ সূত্র জানায়, দুই লেনের এ মহাসড়কের প্রশস্ত হবে সর্বোচ্চ ৩৪ ফুট। গাছ থাকার কারণে কোথাও কোথাও তা কমবে। সাড়ে ৪ থেকে ৫ ফুট গর্ত করে প্রথমে বালি, পরে বালি ও খোয়া, পাথর-বালি ও তারপর বিটুমিনাস সারফেস হবে। বিটুমিনাস সারফেসের পুরুত্ব হবে ১২০ মিলিমিটার বা প্রায় ৫ ইঞ্চি। জানা গেছে, এই সড়কটি প্রথম ৪ লেন করার সিদ্ধান্ত হয়। সে সময় ২ হাজার ৩১২টি গাছ কাটার সিদ্ধান্ত হয়েছি। এর মধ্যে শতবর্ষী প্রাচীন গাছ ছিল ২০০টির মতো। কিন্তু পরিবেশবাদীরা আন্দোলন শুরু করেন। একপর্যায়ে বিষয়টি নিয়ে উচ্চ আদালতে রিট করেন একজন। তার পরিপ্রেক্ষিতে সরকার গাছ কাটার সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে এবং গাছ রেখেই যতটুকু রাস্তা চওড়া করা যায় তা সিদ্ধান্ত নেন। সেই মোতাবেক এখন রাস্তার পুনর্নির্মাণের কাজ চলছে। কিন্তু এখন দেখা যায় রাস্তা যতটুকু চওড়া করা হচ্ছে, তাতেই সড়কের পাশে আর কোনো গাছ থাকবে না। সামান্য ঝড়ে গাছগুলো উপড়ে পড়বে। ইতোমধ্যে যশোর বেনাপোল সড়কের ঝিকরগাছার নবীনগর এলাকায় প্রায় ১০টি শতবর্ষী গাছ উপড়ে পড়েছে। গাছের পাশ থেকে রাস্তা গর্ত করার কারণে অনেক গাছ গেছে হেলে। সামনের কালবৈশাখীতে অন্তত ৫০টি গাছ উপড়ে পড়বে বলে মনে করছেন অনেকে। ফলে এ সড়কে যান চলাচল এখন ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। কারণ কাজ চললেও গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কে প্রতিদিন হাজার হাজার যানবাহন চলাচল করছে। আশপাশে রয়েছে মানুষের বাড়ি এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। বেনাপোলের বিশিষ্ট সিএন্ডএফ ব্যবসায়ী মতিয়ার রহমান বলেন, ক্ষয়ক্ষতি কমাতে হলে এখনই ঝুঁকিপূর্ণ গাছগুলো অপসারণ করতে হবে। কারণ, মানুষের জীবনের চেয়ে বেশি মূল্য এই গাছের নয়। এদিকে ঝুঁকিপূর্ণ গাছগুলো কাটার জন্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছে আবেদন করেছেন ১০ জন। যশোর-বেনাপোল সড়কের পাশে নবীনগর গ্রামের আব্দুল কাসেম তার আবেদনে উল্লেখ করেন, যশোর-বেনাপোল পুনর্নির্মাণ করায় সড়কের পাশের গাছগুলো ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। ঝড়-বৃষ্টি হলে যে কোনো সময় গাছগুলো উপড়ে তার বসতবাড়ির উপর পড়তে পারে। তাই গাছগুলো কাটার জন্য তিনি অনুরোধ করেছেন। জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সাইফুজ্জামান পিকুল বলেন, গাছগুলো ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। তা অপসারণ করা দরকার। কিন্তু গাছ না কাটার ব্যাপারে উচ্চ আদালতের নিষেধ রয়েছে। তাই কিছু করা যাচ্ছে না। যশোর-বেনাপোল মহাসড়কটির উন্নয়ন হলে বাংলাদেশ-ভারত ব্যবসা-বাণিজ্যে আরো গতি আসবে বলে মনে করেন এই অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা। কারণ, দেশের স্থলপথের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পণ্য আমদানি হয়ে থাকে বেনাপোল দিয়ে। সড়কটি পুনর্নির্মিত হলে বন্দরে ব্যবসা-বাণিজ্য উৎসাহিত হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App