×

অর্থনীতি

মুরগি ও ডিমের বাজারে সক্রিয় সিন্ডিকেট

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৪ মার্চ ২০১৯, ০৪:১১ পিএম

মুরগি ও ডিমের বাজারে সক্রিয় সিন্ডিকেট
খামারি ও পাইকার এবং খুচরা বিক্রেতার সিন্ডিকেটের হাতে বন্দি দেশের মুরগি এবং ডিমের বাজার। ‘সরবরাহ’ স্বল্পতার অজুুহাতে প্রতিদিনই বাড়ছে মুরগি ও ডিমের দাম। গত কয়েক সপ্তাহে মুরগির দাম বেড়েছে কেজিতে প্রায় ৩০ টাকা। চলতি সপ্তাহে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৬৫-১৭০ টাকায়। মুরগির দাম বেড়ে যাওয়ায় নতুন করে বেড়েছে ডিমের দাম। প্রতি ডজন ফার্মের ডিম বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১২৫ টাকায়। যা এক মাস আগেও ১০০ থেকে ১০৫ টাকায় বিক্রি হতো। মুরগি ও ডিমের দাম বাড়ার যৌক্তিক কোনো কারণ জানাতে পারেননি ব্যবসায়ীরা। শুধু বলছেন, ‘সরবরাহ কম। চাহিদা বেশি।’। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, রমজান এবং শবেবরাতকে সামনে রেখে ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। সরকার বাজার মনিটরিংয়ে গুরুত্ব দিলে অবস্থার উন্নতি হতে পারে। তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, কয়েক সপ্তাহ আগেও ১২০ টাকা কেজিতে মুরগি বিক্রি হয়েছে। দাম বাড়তে বাড়তে চলতি সপ্তাহে প্রতি কেজি মুরগির দাম ১৭০ টাকা হয়েছে। খামারিদের মতে, পয়লা বৈশাখ ও পবিত্র শবেবরাত সামনে রেখে বাড়তি চাহিদার কারণে মুরগির একদিন বয়সী বাচ্চা খামারে তুলছেন খামারিরা। বাড়তি চাহিদার কারণে বাচ্চা উৎপাদকরা দাম বাড়িয়েছেন। তা ছাড়া বনভোজনসহ সামাজিক অনুষ্ঠানের কারণে এখন মুরগির চাহিদা বেশি। এ ছাড়া সরবরাহও চাহিদার চেয়ে কম। খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, খরচ বাড়ছে, মাংস বেঁচে লাভ হচ্ছে না। বেশি দাম দিয়ে মাংস কিনতে হচ্ছে। রাজধানীর খিলগাঁও বাজারে মাংস কিনতে আসা সোনালি ভৌমিক দাস বলেন, মেয়ে চিকেন খেতে খুব পছন্দ করে। অথচ হঠাৎ করেই মুরগির মাংসের দাম বাড়ল। দিন দিন জিনিসপত্রের দাম বেড়েই চলছে?। সূত্র জানায়, চলতি মাসের শুরুতে ব্রয়লার মুরগির দাম বাড়তে থাকে। গত সপ্তাহে তা কেজিপ্রতি ১৬৫-১৭০ টাকায় ওঠে। দাম আর কমেনি। বরং কোনো কোনো জায়গায় আরো বেড়েছে। ব্রয়লারের পাশাপাশি কক মুরগি বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ২৯০ টাকায়। সাধারণ সময়ে কক মুরগি কেজিপ্রতি ২৪০-২৫০ টাকায় বিক্রি হতো। আর দেশি মুরগির দাম কেজিতে প্রায় ১০০ টাকা বেড়ে ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গতকাল কারওয়ান বাজারের নূরজাহান চিকেন হাউসের বিক্রেতা সৌরভ হোসেন বলেন, দাম আর কমেনি। মুরগির দামের বিষয়ে খিলগাঁওয়ের ব্যবসায়ী মো. কামাল বলেন, চলতি বছরের শুরুতে জানুয়ারি মাসের প্রথম দিকে সব ধরনের মুরগির দাম বেশ কম ছিল। কিন্তু জানুয়ারি মাসের শেষের দিকে হঠাৎ করেই মুরগির দাম বাড়তে শুরু করে। বাজারে মুরগির যে পরিমাণ চাহিদা রয়েছে, সে হারে ফার্ম থেকে সরবরাহ পাওয়া যাচ্ছে না। এ কারণেই হয়তো মুরগির দাম বেড়েছে। এদিকে ডিমের বাজারেও একই অবস্থা বিরাজ করছে। ঢাকার এজিবি কলোনি কাঁচাবাজারে গতকাল প্রতি ডজন (১২টি) ফার্মের ডিম ১২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। গত সপ্তাহে ছিল ১১৫ টাকা। পাড়া-মহল্লার খুচরা দোকানে একই ডিম হালিপ্রতি দাম বেশি। বাজারে হাঁসের ডিম প্রতি হালি ৫০ টাকা এবং দেশি মুরগির ডিম ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ দরও স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে হালিতে ১০ টাকা বেশি। হঠাৎ করে মুরগি ও ডিমের দাম বাড়ার বিষয়ে ওয়ার্ল্ডস পোল্ট্রি সায়েন্স এসোসিয়েশন বাংলাদেশ শাখার (ওয়াপাসা-বিবি) সভাপতি শামসুল আরেফিন খালেদ বলেন, উৎপাদন কম হওয়ার কারণে এখন ব্রয়লার মুরগি ও ডিমের দাম কিছুটা বেড়েছে। তবে একটি ডিমের দাম ১০ টাকা হওয়া ঠিক না। একটি ডিমের দাম ৭ থেকে ৮ টাকার মধ্যে থাকাই যুক্তিসঙ্গত। গাজীপুরের শ্রীপুরের খামার মালিক ও পোলট্রি খামার রক্ষা জাতীয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক খন্দকার মো. মহসিন জানান, হ্যাচারিগুলো এখন প্রতিটি একদিনের ব্রয়লার মুরগির বাচ্চার দাম ঠিক করেছে ৮২ টাকা। পয়লা বৈশাখ ও পবিত্র শবেবরাত সামনে রেখে বাড়তি চাহিদার কারণে তারা এই সুযোগ নিচ্ছেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App