×

বিনোদন

‘মানবতার জন্য সঙ্গীত’

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৩ মার্চ ২০১৯, ০৩:৩১ পিএম

‘মানবতার জন্য সঙ্গীত’
তৃতীয়বারের মতো জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হলো সঙ্গীত উৎসব।বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীত বিভাগের আয়োজনে ২০-২১ মার্চ অনুষ্ঠিত উৎসবে অংশ নিয়েছেন দেশের বরেণ্য সঙ্গীতশিল্পীরা। সঙ্গীত উৎসবের প্রসঙ্গ নিয়ে ভোরের কাগজের মুখোমুখি হয়েছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গীত বিভাগের চেয়ারম্যান অণিমা রায়। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন শাহনাজ জাহান
এবারের উৎসবে কোন বিষয়টিকে প্রাধান্য দিতে চেয়েছেন? আমরা এমন একটা সময়ে আছি, যেখানে সব কিছুই আছে শুধু মানবতাটুকু নেই। মানুষের প্রতি মানুষের, প্রকৃতির জন্য মানুষের যে মমত্ববোধ ছিল, সেটা কেন যেন হারিয়ে যাচ্ছে। আমরা এবারের উৎসবে যে বিষয়টিকে সামনে তুলে ধরতে চেয়েছি, সেটা হলো মানবতার জন্য সঙ্গীত। এই উৎসবে সঙ্গীতের সুরের মাধ্যমে মানবতার জয়গান গাইতে চেয়েছি। আরেকটু বিস্তারিত যদি জানতে চাই? সঙ্গীতের আলাদা একটা শক্তি আছে। সঙ্গীত মানুষের মনোজগৎকে নাড়িয়ে দেয়, মানুষকে ভাবায়। আত্মার প্রশান্তি তৈরি করে। প্রকৃতির সঙ্গে হৃদয়ের সম্পর্ক তৈরি হয় সঙ্গীতের মাধ্যমে। এবারের উৎসবও সঙ্গীতের বিভিন্ন ধারার সমন্বয়ে সাজানোর চেষ্টা করেছি। নজরুল, রবীন্দ্রনাথ, লোকগানসহ শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের নানা ধারার সমন্বয় করার চেষ্টা করেছি। দুদিনের আয়োজনে সঙ্গীতের নানা ধারার সমন্বয়ে মানবতার জয়গান গেয়েছি। এ ছাড়া উৎসবে একটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। ‘রাগসঙ্গীত ও প্রকৃতি’ বিষয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেছেন ড. অসিত রায়। সমাপনী দিনে ছিল নৃত্যনাট্য চিত্রাঙ্গদার মঞ্চায়ন। সেখানে আমাদের ছেলেমেয়েরা গানের পাশাপাশি নৃত্যেও অংশ নিয়েছে। এ ছাড়া দেশের বরেণ্য শিল্পীরা অংশ নিয়েছেন আমাদের সঙ্গে। সব মিলিয়ে উৎসব প্রাণবন্ত হয়েছে। উৎসবে কেমন সাড়া পেয়েছেন? যারা বাংলা গান পছন্দ করেন তারা আমাদের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। পুরো বিশ^বিদ্যালয় ক্যাম্পাসেই উৎসবের আমেজটি ছড়িয়ে গেছে। এ ছাড়া সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়, বেঙ্গল ফাউন্ডেশন, ভারতীয় দূতাবাস এবং আমাদের জগন্নাথ বিশ^বিদ্যালয়ের সহযোগিতায় উৎসবটি করতে পেরেছি। তবে আমি বলবো, বাংলা গানের জন্য পৃষ্ঠপোষকতা জরুরি। অনেকেই আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন বলেই উৎসবটি সফলভাবে সম্পন্ন করতে পেরেছি। তবে বাংলা গান নিয়ে আরো বড় পরিসরে কাজ করতে চাইলে সরকারি-বেসরকারিভাবে পৃষ্ঠপোষকতা জরুরি। সঙ্গীত নিয়ে আপনার ব্যক্তিগত ব্যস্ততার কথা শুনতে চাই? বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষকতার ব্যস্ততায় সঙ্গীতশিল্পী হিসেবে নিজেকে সময় কম দেয়া হচ্ছে। আমি যেহেতু সঙ্গীত বিভাগের চেয়ারম্যান, আমাকে নানাবিধ কাজে ব্যস্ত থাকতে হয়। এরপরও নিয়মিত গানের চর্চায় থাকার চেষ্টা করি। তিন কবির গান নিয়ে নতুন একটি অ্যালবামের কাজ গুছিয়ে রেখেছি। কিন্তু সময় করে উঠতে পারছি না। সেটা আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো প্রকাশ করা হয়নি। আশা করছি শিগগিরই এ বিষয়ে সবাইকে বিস্তারিত জানাতে পারব। অ্যালবামটিতে কি ধরনের গান থাকছে? আমার শিক্ষার্থী জীবনে নিলুফার ইয়াসমিনকে পেয়েছি, রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যাকে পেয়েছি, মিতা হককে পেয়েছি। তাদের কাছ থেকে গানের শিক্ষা নিয়েছি। এই অ্যালবামটিতে বাংলা গানের বিশাল ভাণ্ডার থেকে দিজেন্দ্রলাল রায়, অতুল প্রসাদ সেন, রজনী কান্তের গান থেকে ৯টি গান নিয়ে অ্যালবামটি করা হয়েছে। আপাতত নাম ঠিক করা হয়েছে ‘বিবর্তন’। তিন কবির গানের বিশাল ভাণ্ডার থেকে ৯টি গান নেয়া হয়েছে। যে গানগুলোতে মানবতার কথা আছে, মানুষের কথা বলা হয়েছে। অ্যালবামের গানগুলো সবার মন ছুঁয়ে যাবে বলেই আমার বিশ্বাস। চেষ্টা করেছি গানের সঙ্গীতায়োজন থেকে শুরু করে সব কিছুইতেই ভিন্নতা আনতে। শ্রোতারা নতুন কিছু পাবেন বলেই মনে করি। আপনাকে ধন্যবাদ। তোমাকেও ধন্যবাদ। ভোরের কাগজের সবার জন্য শুভকামনা।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App