×

মুক্তচিন্তা

অপরাধীদের দ্রুত চিহ্নিত করা দরকার

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২১ মার্চ ২০১৯, ০৮:৩৯ পিএম

কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের ছাত্রী ও নাট্যকর্মী সোহাগী জাহান তনু হত্যার তিন বছরেও শেষ হয়নি তদন্ত। প্রথমে থানা পুলিশ, পরে ডিবি পুলিশ হয়ে বর্তমানে সিআইডি মামলাটির তদন্ত করছে। দীর্ঘ সময়েও চাঞ্চল্যকর এ হত্যার তদন্তে দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি হয়নি এবং এখনো রহস্যের জট খোলেনি, যা খুবই হতাশাজনক।

২০১৬ সালের ২০ মার্চ রাতে কুমিল্লা সেনানিবাসের ভেতরের একটি জঙ্গল থেকে কলেজছাত্রী সোহাগী জাহান তনুর লাশ উদ্ধার করা হয়। ঘাতকরা ধর্ষণের পর পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে তনুকে। তনু হত্যা-নির্যাতনের ঘটনাটি দেশবাসীকে ভীষণভাবে ক্ষুব্ধ ও মর্মাহত করে।

ঘটনার পরদিন তার বাবা কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের অফিস সহায়ক ইয়ার হোসেন বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন। থানা পুলিশ ও ডিবির পর ২০১৬ সালের ১ এপ্রিলে মামলাটির তদন্তে দায়িত্ব পায় কুমিল্লা সিআইডি। ওই বছরের মে’তে সিআইডি তনুর জামা-কাপড় থেকে নেয়া নমুনার ডিএনএ পরীক্ষা করে তিনজনের শুক্রাণু পাওয়ার কথা গণমাধ্যমকে জানিয়েছিল এবং হত্যার আগে তনুকে ধর্ষণ করা হয়েছিল বলে তারা নিশ্চিত হয়েছিল।

সর্বশেষ সন্দেহভাজন হিসেবে তিনজনকে ২০১৭ সালের ২৫ থেকে ২৭ অক্টোবর পর্যন্ত সিআইডির একটি দল ঢাকা সেনানিবাসে জিজ্ঞাসাবাদ করে। জিজ্ঞাসাবাদ করা ব্যক্তিরা তনুর মায়ের সন্দেহ করা ব্যক্তি বলেও সিআইডি জানিয়েছিল। তবে তাদের নাম জানানো হয়নি।

একই সালের ২২ নভেম্বর ঢাকা সিআইডি কার্যালয়ে তনুর বাবা ইয়ার হোসেন, মা আনোয়ারা বেগম, চাচাতো বোন লাইজু ও চাচাতো ভাই মিনহাজকে দিনভর পুরনো বিষয়গুলো জিজ্ঞেস করেন ঢাকার সিআইডির কর্মকর্তারা। এরপর থেকে তনুর পরিবারের সদস্যরা মামলার বিষয়ে আর কিছুই জানেন না এবং তদন্তকারী সংস্থাও তাদের কিছু জানাচ্ছে না বলে সাংবাদিকদের জানান তনুর বাবা-মা।

এ মামলার ভবিষ্যৎ কিংবা বিচার পাওয়া নিয়ে তনুর পরিবার, মানবাধিকার সংগঠনসহ বিভিন্ন মহলে সংশয় দেখা দিয়েছে। ঘটনার পর একাধিকবার তদন্তকারী সংস্থা পরিবর্তন করা হলেও দীর্ঘ এ সময়ে হত্যা রহস্যের কিনারা হয়নি। ধীরে ধীরে এ মামলার কার্যক্রম অনেকটা ঝিমিয়ে পড়েছে। বিচার প্রলম্বিত হওয়া ন্যায়বিচারকে অনিশ্চিত করে তোলে। তনু হত্যা মামলার ক্ষেত্রেও এমনটি ঘটতে যাচ্ছে কিনা অবস্থাদৃষ্টে সে উদ্বেগ দেখা দেয়াই স্বাভাবিক।

আমরা চাই তনুর খুনিরা দ্রুত শনাক্ত হোক, তাদের বিচারাধীন করা হোক। ভবিষ্যতে আর যাতে কোনো তনুকে এভাবে নির্মম পাশবিকতার শিকার হতে না হয়, জীবন দিতে না হয়, তা নিশ্চিত করার জন্য তনু হত্যাকা-ের মতো সব হত্যাকা-ের সুষ্ঠু বিচার হওয়া জরুরি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App