জেলার দক্ষিণ সুনামগঞ্জে শিশু ধর্ষণের ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। সোমবার ওই শিশুর মা বাদী হয়ে ধর্ষণকারীসহ অজ্ঞত ৫/৭ জনের বিরুদ্ধে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। ১৩ বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের ঘটনায় ধর্ষণকারীকে সোমবার দুপুরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মো. ইখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরীর নেতৃত্ব এসআই রফিকুল ইসলামের সহযোগিতায় গনিগঞ্জ এলাকা থেকে ধর্ষণকারীর নাম মো. আব্দুনু নুর মিয়া (৫৮) ও শালিসকারী সাবেক ইউপি সদস্য কবির আহমদেকে আটক করা হয়েছে। ধর্ষণকারী গনিগঞ্জ গ্রামের মৃত আরব আলীর ছেলে ও সালিশকারী কবির আহমদ একই গ্রামের আব্দুল্লাহের ছেলে। এদিকে সোমবার দুপুরে সুনামগঞ্জ জুডিশিয়াল মেজিস্ট্রেটের আদালতে তার জবানবন্দী রেকর্ড করা হয়েছে এবং ভিকটিমকে তাহার মায়ের জিম্মায় প্রদান করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা (এসআই) মোঃ রফিকুল ইসলাম। ভিকটিম সূত্রে জানা যায়, ধর্ষণকারী আব্দুন নুর মিয়া প্রায় সময়ই ছায়েমা(ছদ্মনাম)এর বসত বাড়ীতে যাওয়া আসা করিতো। ধর্ষণকারী আব্দুন নুর ছায়েমা(ছদ্মনাম) এর সম্পর্কে দাদা হওয়ায় পরিবারের ভিকটিমের পিতা-মাতার কোন বাঁধা নিষেধ ছিল না। কারণ ধর্ষণকারী আব্দুন নুর মিয়া ঘরে স্ত্রী, ৫ ছেলে, ছেলের বউ, ১ মেয়ে, নাতি-নাতনী রয়েছে। ২০১৮ সনের জুন মাসে ভিকটিম ছায়েমা (ছদ্মনাম)কে পরিবারের লোকজনদের অগোচরে প্রলোভন দিয়ে আব্দুন নুর মিয়া নাবালিকা শিশুটিকে ধর্ষণ করে। একপর্যায়ে ভিকটিমের অস্বাভাবিক চলাফেরায় তার মায়ের নজরে আসিলে বিষয়টি প্রকাশ পায়। উক্ত বিষয়টি নিয়ে ঘটনার ২/৩ মাস পর স্থানীয় গণিগঞ্জ সাকিনে গ্রাম্য মাতব্বরের শরনাপন্ন হলে গণিগঞ্জ গ্রামের পূর্বহাটি গ্রামের মৃত ধনাই মিয়ার ছেলে আব্দুল মজিদ,পশ্চিম হাটির মড়ল বাড়ির লাল মিয়ার ছেলে আব্দুল আওয়াল, তালেব আলীর ছেলে মাওলানা আব্দুল কাইয়ূম, আব্দুল গফুরের ছেলে ইউপি সদস্য খইছা মিয়া, গণিগঞ্জ গ্রামের আব্দুল্লাহ মিয়ার ছেলে সাবেক মেম্বার কবির আহমদ, গণিগঞ্জ বাজার হাটির রবাই মিয়ার ছেলে কাহার মিয়া, নুরফর মিয়ার ছেলে আনজু মিয়া মিলে ধর্ষণের ঘটনায় শালিস বৈঠক হয় এবং ৫০ হাজার টাকা দেন মোহরে নাবালিকা শিশুটিকে ধর্ষণকারী আব্দুন নুর মিয়ার কাছে বিবাহ দেওয়া হইবে মর্মে গ্রাম্য মাতব্বরেরা আশ্বস্থ করে। গত শনিবার(১৬ মার্চ) ভিকটিম ছায়েমা(ছদ্মনাম) অসুস্থ হয়ে পড়লে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে যান তার মা। এসময় কতর্ব্যরত ডাক্তার ভিকটিম ছায়েমা(ছদ্মনাম) অল্পদিনের মধ্যে নবজাতকের জন্ম দেবন বলে ব্যবস্থাপত্র প্রদান করেন। ভিকটিম ছায়েমা(ছদ্মনাম) ধর্ষণের ঘটনায় গ্রাম্য মাতব্বরদের শালিসের বিষয়ে ধর্ষণকারী আব্দুন নুর মিয়া ও মাতব্বরদের কোন সহযোগিতা ও অন্তঃস্বত্ত্বা নাবালিকা শিশুটির চিকিৎসার ব্যবস্থাসহ গর্ভের নবজাতকের ভবিষ্যৎ নিয়ে কোন নিশ্চয়তা না পাওয়ায় ভিকটিমের মা বাদী হয়ে সোমবার থানায় মামলা দায়েরে করেন। দক্ষিণ সুনামগঞ্জ থানা অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মো. ইখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী বলেন, ভিকটিমের মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে অতি দ্রুততার সাথে আসামীকে অভিযান চালিয়ে আটক করেছি এবং জেল হাজতে প্রেরণ করেছি। ধর্ষণের ঘটনায় মাতব্বদের বিষয়ে খোঁজ খবর নিচ্ছি। ধর্ষণের ঘটনা ধামাচাঁপা দিতে যারা জড়িত। তাদের বিরুদ্ধে আইনানূগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।