×

অর্থনীতি

বাজারে সক্রিয় সিন্ডিকেট

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৮ মার্চ ২০১৯, ১১:২২ এএম

বাজারে সক্রিয় সিন্ডিকেট

রমজান সামনে রেখে বাড়ছে পণ্যের দাম

মরিয়ম সেঁজুতি : প্রতিদিনই বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম। জীবন ধারণের উপযোগী প্রতিটি জিনিসের অগ্নিমূল্য। চাল, ডাল, পেঁয়াজ, মাছ, মাংস, তেল, তরিতরকারি, ফলমূল, চিনি, লবণসহ সব কিছুর দাম আগের তুলনায় বেড়েছে। রমজান মাস সামনে রেখে পরিকল্পিতভাবে ভোগ্যপণ্যের দাম বাড়াচ্ছে বাজারে সক্রিয় সিন্ডিকেট এমন অভিযোগ উঠেছে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মহল থেকে। খোদ বাণিজ্যমন্ত্রীই বলেছেন, চালের দাম বাড়ছে চার-পাঁচ জন বড় ব্যবসায়ীর কারসাজিতে। তবে শুধু চালের বাজার নয়; পুরো ভোগ্যপণ্যের বাজারেই একাধিক সিন্ডিকেট সক্রিয়। কিন্তু বাজার সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণে কার্যকর কোনো উদ্যোগ দৃশ্যমান নয়। অথচ লাগামহীন দাম বাড়ার কারণে সীমিত আয়ের সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে চাকরিজীবী আর খেটে খাওয়া মেহনতী মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। ভোগ্যপণ্যের দাম কেন বাড়ছে? এমন প্রশ্নের কোনো সদুত্তর নেই। দায়িত্বশীলরা দোষ চাপান একে অন্যের ওপর। এ দুর্ভোগের জন্য মুনাফালোভী ব্যবসায়ীদের দায়ী করছেন সাধারণ মানুষ ও বাজার বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, রমজান মাসে নিত্যপণ্যের দাম বাড়বে না সরকারের এমন ঘোষণার দুই-তিন মাস আগেই বাড়তে থাকে পণ্যমূল্য। ফলে রমজান মাসে আর পণ্যের দাম বাড়ে না। বাড়ে তার আগেই। এবারও ঠিক একই পথে হাঁটছেন ব্যবসায়ীরা। যদিও উৎপাদন কম থাকায় দাম বাড়ছে বলে দাবি করছেন ব্যবসায়ীরা। চলতি মার্চ মাসের প্রথম দিকে টানা কয়েকদিন বৃষ্টিতে উৎপাদন কমেছে বলেও জানান তারা। খুচরা বাজারে সবজির দাম পাইকারি বাজারের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। কেন এ তারতম্য এ প্রশ্নে ব্যবসায়ীরা নিরুত্তর। অবশ্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আগামী ২৭ মার্চ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে একটি বৈঠকে বসবে। আগামী রমজান মাসে পণ্যমূল্য যেন স্বাভাবিক থাকে এ বিষয় নিয়েই বৈঠকে আলোচনা হবে বলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একটি বিশ^স্ত সূত্রে জানা গেছে। ইতোমধ্যে এ বিষয়ে একটি চিঠি ইস্যু করা হয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আন্তর্জাতিক বাজারে কমলেও দেশে দফায় দফায় বাড়ছে আমদানিকৃত অত্যাবশ্যকীয় পণ্যের দামও। সবজির দাম এখন আকাশ ছোঁয়া। এই বাস্তবতায় ভোগ্যপণ্যের দাম নিয়ে চরম অস্বস্তিতে দেশের কোটি কোটি সাধারণ ভোক্তা। সংশ্লিষ্টদের মতে, এসবই সিন্ডিকেটের কারসাজি। তাদের হাতে জিম্মি হয়ে পড়ছে প্রশাসন। দুর্বল বাজার মনিটরিং, প্রতিযোগিতা কমিশন গঠন করা হলেও তা কার্যকর না হওয়া, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণে যে আইন রয়েছে তা প্রয়োগ না হওয়া, ভ্রাম্যমাণ আদালত নিষ্ক্রিয় থাকা এবং পণ্যমূল্যের তালিকা প্রদর্শন না করার সুযোগ নিচ্ছে অসাধু ব্যবসায়ীরা। তাই দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে বাজার মনিটরিং টিম শক্তিশালী করার সঙ্গে সঙ্গে সরকার নিয়ন্ত্রিত সংস্থা টিসিবিকে শক্তিশালী করার পরামর্শ রয়েছে তাদের। দাম বাড়ানোর বিষয়ে ক্যাব সভাপতি ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম রহমান বলেন, শীত পরবর্তী সবজির দাম কিছুটা বেড়ে যাওয়া স্বাভাবিক। তবে বর্তমান বাজারে সবকিছুই যেন হঠাৎ আকাশ ছুঁয়েছে। বিষয়টি মনিটরিং করে সরকারকেই ব্যবস্থা নিতে হবে। তিনি বলেন, বাজার ব্যবস্থায় প্রতিযোগিতা হ্রাস ও আইনি নিয়ন্ত্রণ না থাকার কারণেই অসাধু ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট গড়ে উঠছে। তারা অযৌক্তিক মুনাফার উদ্দেশ্যে সময় ও সুযোগ বুঝে বাজার বিভাজনের মাধ্যমে পণ্যের দাম বাড়িয়ে আসছে। এ প্রবণতা ভোক্তা কিংবা সরকার কারো জন্যই শুভ নয় বলে জানান তিনি। ঢাকার কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে মুরগির দাম। ঢাকার বিভিন্ন খুচরা বাজারে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৬০-১৭০ টাকায়। রাজধানীর মালিবাগ কাঁচাবাজারে কথা হয় চাকরিজীবী রফিকুলের সঙ্গে। তিনি বলেন, ব্যবসায়ীদের কাছে আমরা জিম্মি। হুটহাট করেই জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়ে দেয়। এভাবে যদি দাম বাড়তে থাকে আমরা কী করব? মাছ, মাংস, পেঁয়াজ, সবজি সব কিছুর দাম বাড়তি। আমাদের বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। কিন্তু দিন শেষে আমাদের বেতন কিন্তু বাড়ছে না। সরকারের উচিত বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখা। সবজির দাম বাড়ার বিষয়ে মতিঝিলের এজিবি কলোনি কাঁচাবাজারের সবজি ব্যবসায়ী লতিফ বলেন, পাইকারি বাজারে হঠাৎ মাল কম। জেলাগুলো থেকে মাল কম আসছে। পাইকাররা বেশি দাম হাঁকাচ্ছে। আমাদেরও ব্যবসা করতে হয়, তাই বেশি দাম দিয়ে হলেও কিনতে হয়। ক্রেতাদের সঙ্গে বেশি দাম নিয়ে ঝগড়াও হয়। ব্যবসা করি, তাই কেউ কিছু বললেও কিছু মনি করি না। তবে দাম বাড়লে কেনাবেচা কম হয়। তাই আমাদেরও ক্ষতি হয়। খিলগাঁও বাজারে মাছ ব্যবসায়ী ছদরুল বলেন, কাওরানবাজারে যে মাছ গত সপ্তাহে কিনেছি ৫০০ টাকা কেজি। আজ সেই একই মাছ কিনেছি ৭০০ টাকা। আমরা কি করব বলেন? দেখা গেছে, রাজধানীর বাজারগুলোতে হঠাৎ করে সবজির দাম অনেকখানি চড়ে গেছে। কিছু কিছু সবজির দাম আবার নতুন করে বেড়েছে। তিনটি সবজির কেজি ছুঁয়েছে ১০০ টাকা। বাকিগুলোর বেশিরভাগের কেজি অথবা পিস ১০০ টাকার কাছাকাছি। সপ্তাহের ব্যবধানে দেশি পেঁয়াজের দাম কেজিতে ৫-১০ টাকা বেড়েছে। দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকা কেজি। তবে আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজ আগের মতই ২০ থেকে ২৫ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। প্রতি পোয়া (২৫০ গ্রাম) কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকা দরে। এদিকে মাছ ও মাংসের দামেও স্বস্তিতে নেই ক্রেতারা। বয়লার মুরগির পাশাপাশি দাম বেড়েছে লাল লেয়ার মুরগি ও পাকিস্তানি কক মুরগির। লাল লেয়ার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২১০ থেকে ২২০ টাকা কেজি। আর পাকিস্তানি কক মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৬০ থেকে ২৮০ টাকা। ৪৮০ টাকা থেকে ৫০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যেত গরুর মাংস। এখন গরুর মাংসের দামও বেড়ে গেছে। প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে বাজারভেদে ৫০০-৫৫০ টাকা পর্যন্ত দামে। আর খাসির মাংসের দর এখন ৭২০-৮০০ টাকা। শীত শেষ হওয়ার পর থেকেই চড়েছে সবজির বাজার। বাজারের সবজি বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বাজারে আসা নতুন সবজি যেমন বরবটি, পটল, কচুর লতি বিক্রি হচ্ছে ৭০-১২০ টাকা কেজি। করলা ৮০-৯০ টাকা কেজি। ঢেঁড়স বিক্রি হয়েছে ৮০-১০০ টাকা কেজি। শিম, বেগুন, ফুলকপি, বাঁধাকপি সবইকিছুর দামই এখন ৪০-৬০ টাকার কাছাকাছি। কম দামের মধ্যে এখন রয়েছে আলু। প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ১৫-২৫ টাকা দরে। এদিকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, চাহিদার তুলনায় সব ধরনের পণ্যের মজুদ সন্তোষজনক। বাজারে কোনো পণ্যের ঘাটতি নেই। পণ্যের সরবরাহ ঠিক রাখার পাশাপাশি যাতে কেউ কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করতে না পারে, সে বিষয়টি কঠোরভাবে নজরদারি করা হচ্ছে। নিত্যপণ্যের দাম সাধারণ ক্রেতার নাগালে রাখার লক্ষ্যে রোজা শুরুর আগেই বাজার মনিটরিংয়ে নামবে দেশের চারটি গোয়েন্দা সংস্থার একাধিক টিম।

খাতুনগঞ্জে ভোগ্যপণ্যের পাইকারি বাজার অস্থির

প্রীতম দাশ, চট্টগ্রাম অফিস : দেশের ভোগ্যপণ্যের সবচেয়ে বড় পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে অস্থির হয়ে উঠেছে নিত্যপণ্যের দাম। চাল, ডাল, চিনি, চা ও মসলাসহ সবধরনের নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে গত সপ্তাহের তুলনায়। অতি মুনাফা লোভী পাইকারি ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে ভোক্তাদের জিম্মি করে পণ্যের দাম বাড়ানোর পাঁয়তারা করছে বলে অভিযোগ খুচরা ব্যবসায়ীদের। আমদানিকারকরা দাবি করছেন, আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ায় এবং সরবরাহ কম থাকায় বাজারে এসব পণ্যের দাম বেড়েছে। তবে সবকিছু মিলিয়ে অতিরিক্ত টাকা যাচ্ছে সাধারণ ক্রেতাদের পকেট থেকেই। আর মধ্যবিত্ত-নি¤œবিত্ত নাগরিকদের মাসিক বাজেটে চলছে টানাপড়েন। এদিকে ভোক্তা স্বার্থ সংরক্ষণ বিষয়ক সংগঠন কনজ্যুমার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-ক্যাব নেতারা বলছেন, নিত্যপণ্যের বাজার অস্থির হওয়ার পেছনে প্রশাসনের নিয়মিত মনিটরিং না থাকাকে দায়ি করছেন। মুনাফা লোভী ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণে পাইকারি ও খুচরা বাজারগুলোতে নজরদারি বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছেন ক্যাব নেতৃবৃন্দ। খাতুনগঞ্জের পাইকারি দোকান ও আড়তগুলোয় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত কয়েক দিনে পাইকারি পর্যায়ে বেশির ভাগ ভোগ্যপণ্যের দাম বেড়েছে। এর মধ্যে চাল, ভোজ্যতেল, চিনি, ডাল ও মসলাজাতীয় পণ্যের দাম বেড়েছে সবচেয়ে বেশি। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে চট্টগ্রামের পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে চালের দাম বেড়েছে ১শ থেকে দুই শত টাকা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, চাহিদা মোতাবেক রাইস মিলে ধানের সরবরাহ কমে যাওয়ায় দামে প্রভাব পড়েছে। এখানকার ব্যবসায়ীরা চাহিদা মতো চাল পাচ্ছেন না। তবে নতুর চাল বাজারে আসতে শুরু করলে চালের দাম আবারো স্বাভাবিক হয়ে আসবে। গতকাল খাতুনগঞ্জে নাজিরশাইল চাল বস্তাপ্রতি (৫০ কেজি) বিক্রি হয় ২৩০০-২৪০০ টাকায়। মিনিকেট চাল বস্তা (৫০ কেজি) বিক্রি হয় ২৮০০-২৯০০ টাকায়। বাজারে পাম অয়েলের দাম বেড়েছে মণপ্রতি প্রায় ১৫০ টাকা। বাজারে প্রতি মণ পাম অয়েল বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৪০ থেকে ২ হাজার ৬০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ১ হাজার ৯০০ টাকা। অন্যদিকে সুপার পাম অয়েলের দামও মণপ্রতি ১২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। বর্তমান বাজারে সুপার পাম ওয়েল বিক্রি হচ্ছে ২৩৫০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ২২৩০ টাকায়। সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ২৯০০ টাকায়। দুই সপ্তাহের ব্যবধানে চট্টগ্রামের পাইকারি বাজার খাতুনগঞ্জে চিনির দাম মণপ্রতি ৭০০-৮০০ টাকা বেড়েছে। বর্তমানে বাজারে প্রতি মণ চিনি বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৭৭০ টাকায়, যা গত দুই সপ্তাহ আগে বিক্রি হচ্ছিল ১ হাজার ৭০০ টাকায়। খাতুনগঞ্জে চাল-তেল-চিনির পাইকারি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান মের্সাস ইসমাইল সওদাগরের স্বত্বাধিকারী আবদুর রাজ্জাক ভোরের কাগজকে বলেন, বাজারে সব ধরনের চালের দাম গত দুই সপ্তাহের ব্যবধানে কিছুটা বেড়েছে। চাহিদা বাড়ায় দাম বাড়লেও বাজারে কিছুদিনের মধ্যে নতুন চাল আসবে। তখন চালের বাজার স্বাভাবিক হয়ে আসবে। এ ছাড়া চিনির দাম বেড়েছে আমদানিকারকদের কারসাজিতে। সংকট দেখিয়ে দাম বাড়ানো হচ্ছে। সুপার পাম ও পাম ওয়েলের দাম বাড়ানো হয়েছে সংকট দেখিয়ে। বাজারে ডালজাতীয় কয়েকটি পণ্যের দামও বেড়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে মুগ ডালের দাম। দুই সপ্তাহ আগেও প্রতি মণ মুগ ডালের দাম ৩ হাজার ২৫০ টাকার নিচে থাকলেও বর্তমানে একই মানের মুগ ডাল বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ৯২০ টাকায়। পাইকারি বাজারে কেজিপ্রতি মুগ ডাল বিক্রি হচ্ছে (বড়) ৭০-৮০ এবং (চিকন)৯০-১০০ টাকায়। গতকাল বাজারে প্রতি মণ দেশি মসুর বিক্রি হয়েছে ৩ হাজার ৬০ থেকে ৩ হাজার ৯০ টাকায়, যা এক সপ্তাহ আগেও প্রতি মণ ২ হাজার ৬০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে খেসারি ডালের দাম বেড়ে মণপ্রতি দেড় হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া মটর ডালের দামও মণে প্রায় ১১০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এদিকে মসলাজাতীয় কয়েকটি পণ্যের দামও বেড়েছে। এর মধ্যে অস্বাভাবিক বেড়েছে এলাচের দাম। বর্তমানে বাজারে প্রতি কেজি এলাচ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৭৫০ টাকা থেকে ২ হাজার ১০০ টাকা পর্যন্ত, যা দুসপ্তাহ আগে ছিল ১ হাজার ৬০০ থেকে ১ হাজার ৮ টাকা পর্যন্ত। মসলাপণ্যের মধ্যে জিরার দামও বেড়েছে। ভারতীয় জিরা বিক্রি হচ্ছে ৩১০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ২৮০ টাকা। তুরস্কেও জিরা বিক্রি হচ্ছে ৩৬০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ৩২০ টাকা বিক্রি হচ্ছিল। পাইকারিতে প্রতি কেজি জয়ত্রি বর্তমানে ১ হাজার ৫২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, গত সপ্তাহে যা ছিল ১ হাজার ৪৭০ টাকা। এ ছাড়া বেড়েছে বাদাম, হলুদ ও ধনিয়ার দামও। খাতুনগঞ্জের ডাল ও মসলার পাইকারি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান মেসার্স ইসহাক সওদাগর স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ সেকান্দার বলেন, গত সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যে ডাল ও মসলাম দাম কিছুটা বেড়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বাড়ায় মসলার দাম বেড়েছে এবং সরবরাহ কম থাকায় ডালের দাম কিছুটা বেড়েছে। ক্যাবের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি এস এম নাজের হোসাইন বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছি, ভোক্তাদের স্বার্থ সংরক্ষণে কোনো নির্দিষ্ট সময়ে নয়, বছরের পুরো সময়ই বাজারগুলোতে নিয়মিত মনিটরিং দরকার। এক শ্রেণির ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট ভোক্তাদের জিম্মি করে বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে। বিষয়টি প্রশাসনের উচিত খতিয়ে দেখা। পাইকারি বাজার, গুদাম, খুচরা বাজারসহ সর্বস্তরে নজরদারি বাড়াতে হবে। মূল্য বৃদ্ধির পেছনে যারা রয়েছেন তাদের আইনের আওতায় আনা জরুরি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App