×

জাতীয়

জাবির ছাত্রী হলে উদ্ধার নবজাতকের মৃত্যু, তদন্ত কমিটি গঠন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৮ মার্চ ২০১৯, ০১:০৩ পিএম

জাবির ছাত্রী হলে উদ্ধার নবজাতকের মৃত্যু, তদন্ত কমিটি গঠন
জাবির ছাত্রী হলে উদ্ধার নবজাতকের মৃত্যু, তদন্ত কমিটি গঠন
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজির হলের একটি কক্ষের তালাবদ্ধ ট্রাংক থেকে নবজাতক উদ্ধারের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার বেলা তিনটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। উদ্ধারের পর নবজাতকটিকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত পৌনে ১০টার দিকে নবজাতকটির মৃত্যু হয়।ধারনা করা হচ্ছে যে, অবৈধ শারিরীক সম্পর্কের ফলে গর্ভধারণ করে উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের এ শিক্ষার্থী। তবে ধোঁয়াশা কাটাতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন চার সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী আবাসিক শিক্ষক রাবেয়া খাতুন তানিয়াকে প্রধান করে চার সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটিকে ১০ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। হল প্রশাসন ও প্রক্টর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, শনিবার বেলা আড়াইটার দিকে ওই ছাত্রীর চিৎকার শুনে আশপাশের শিক্ষার্থীরা তার প্রসব বেদনার কথা জানতে পারেন। পরে তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে এনাম মেডিকেল কলেজে স্থানান্তর করেন। হলের কয়েকজন আবাসিক ছাত্রী জানান, ওই ছাত্রীকে হাসপাতালে নেওয়ার পর তাঁর কক্ষ থেকে নবজাতকের কান্নার আওয়াজ পাওয়া যায়। খোঁজাখুজি করে কক্ষে থাকা ট্রাঙ্ক থেকে তালা ভেঙে নবজাতককে উদ্ধার করে হল প্রশাসন। পরে নবজাতককে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে এনাম মেডিকেল পাঠান। জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্রের দায়িত্বরত চিকিৎসক আবু জাফর মোহাম্মদ সালেহ বলেন, ‘নবজাতককে যখন মেডিকেলে আনা হয়, তখন তার শরীর সম্পূর্ণ নীল রং ধারণ করেছিল। অক্সিজেন দিয়ে বাচ্চাটিকে এনাম মেডিকেলে পাঠানো হয়।’ জানা যায়, নবজাতকের মা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের ৪৬তম ব্যাচের বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের আবাসিক ছাত্রী। ছাত্রীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক জড়িত ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের মারকেটিং বিভাগের ৪৩ ব্যাচের রনি মোল্লা। তার বাড়ি পাবনায়। এ বিষয়ে তাদের সহপাঠীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ওই ছাত্রীর সঙ্গে রনি মোল্লার দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। একপর্যায়ে শারীরিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন তারা। এরই মধ্যে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন ছাত্রী। এরপরও বিষয়টি গোপন রাখার সিদ্ধান্ত নেয়। তবে এ নিয়ে ছাত্রীর সঙ্গে রনির একাধিকবার বাগবিতণ্ডা হয়। বিষয়টি নিয়ে তাদের সম্পর্কের অবনতিও হয়েছে। এ বিষয়ে বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেসা হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক মুজিবর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ‘ঘটনা শুনে সঙ্গে সঙ্গে হলে যাই। কান্নার আওয়াজের ভিত্তিতে কক্ষের ট্রাঙ্ক ভেঙে নবজাতককে উদ্ধার করি এবং এনাম মেডিকেলে নিয়ে যাই। তবে বাচ্চাটাকে বাঁচানো যায়নি।’ এদিকে সন্তান জন্মের ঘটনার পর থেকে মোবাইল বন্ধ করে রেখেছেন রনি মোল্লা। ক্যাম্পাসে আসেননি তিনি। এরই মধ্যে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে ছাত্রীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কের কথা জানিয়ে সন্তানের পিতৃত্বের দাবি করেছেন রনি মোল্লা। ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে তিনি জানিয়েছেন, ‘আমার সঙ্গে ওই ছাত্রীর প্রেমের সম্পর্ক দীর্ঘদিনের। ওই সন্তানের বাবা আমি। বিষয়টি অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে ঘটেছে। এ নিয়ে কেউ বাজে মন্তব্য করবেন না।’ অপরদিকে রনি মোল্লার সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি দাবি করেন, ২০১৭ সালের ৮ এপ্রিল পারিবারিক ভাবে পাবনায় তাদের বিয়ে হয়েছে। বাচ্চাটি ভূমিষ্ট হওয়ার তারিখের বেশ কিছুদিন আগেই হয়েছে। পরীক্ষা চলার কারণে কথিত ছাত্রী বাড়ি যেতে পারেনি এবং পরীক্ষা চলাকালিন সময়ে তারও ফোন বন্ধ থাকার কারণে তার সাথেও যোগাযোগ করতে না পারায় অনাকাংখিত ঘটনাটি ঘটেছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App