দিতির কথা
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৬ মার্চ ২০১৯, ০৪:১৬ পিএম
জন্ম নিয়েছিলেন ১৯৬৫ সালের ৩১ মার্চ। মারা গিয়েছেন ২০১৬ সালের ২০ মার্চ। কিংবদন্তি চিত্রতারকা দিতির জন্ম-মৃত্যুর মাসে তাকে স্মরণ করল ‘মেলা’
জন্ম
১৯৬৫ সালের ৩১ মার্চ নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে দিতির জন্ম।
নাটক
দিতি বিটিভিতে একদিন গান করার সময় অভিনেতা আল মনসুরের নজরে আসেন। তিনি দিতিকে খুঁজে বের করে মানস বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিপরীতে ‘লাইলি মজনু’ নাটকে কাস্ট করেন। নাটকটি প্রচারের পর দর্শক মহলে সাড়া ফেলে। কিন্তু দিতির অভিনয় চালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে পরিবার থেকে বাধা আসে।
নতুন মুখের কার্যক্রম
১৯৮৪ সালে প্রথমবারের মতো এফডিসি নতুন মুখের কার্যক্রম চালু করে। এই আসরে অংশ নিয়ে বিজয়ী হোন দিতি। নায়ক সোহেল চৌধুরীও বেরিয়ে আসেন এখান থেকেই।
সিনেমা
দিতি অভিনীত প্রথম ছবি প্রয়াত উদয়ন চৌধুরী পরিচালিত ‘ডাক দিয়ে যাই’। এ ছবিতে তার নায়ক ছিলেন আফজাল হোসেন। কিন্তু আশি শতাংশ কাজ শেষ করার পরও ছবিটি আলোর মুখ দেখেনি। দিতির মুক্তিপ্রাপ্ত প্রথম ছবি প্রয়াত আজমল হুদা মিঠু পরিচালিত ‘আমিই ওস্তাদ’।
বিয়ে
চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরীকে ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন দিতি। ১৯৮৬ সালে শুরু করা সংসার স্থায়ী হয়নি। ১৯৯৮ সালের ১৭ ডিসেম্বর বনানীর ট্রাম্পস ক্লাবে সোহেল চৌধুরী খুন হন। সোহেল চৌধুরীর মৃত্যুর পর ২০০১ সালে চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চনকে বিয়ে করে সংসার শুরু করেন দিতি। খুব অল্পসময়ে এই বিয়ে ভেঙে যায়।
জাতীয় পুরস্কার
সুভাষ দত্ত পরিচালিত ‘স্বামী স্ত্রী’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য দিতি ১৯৮৮ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন। এ ছবিতে একজন অন্ধের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন দিতি।
গান
ছোটবেলায়ই দিতি গানের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। শৈশবে শিশু একাডেমি আয়োজিত প্রতিযোগিতায় জাতীয়ভাবে পুরস্কৃত হন। প্রায় দুই যুগ আগে অনুপম রেকর্ডিং মিডিয়ার ব্যানারে দিতির প্রথম একক অ্যালবাম ‘তোমার ও চোখে’ বাজারে আসে। এরপর দুয়েকটি চলচ্চিত্রে প্লেব্যাক করলেও দীর্ঘদিন আর কোনো অ্যালবাম প্রকাশ করেননি তিনি। অবশেষে ২০১১ সালে লেজার ভিশনের ব্যানারে বাজারে আসে তার দ্বিতীয় একক অ্যালবাম ‘ফিরে যেন আসি’।
পরিচালনা
একটা পর্যায়ে সিনেমায় সময় কমিয়ে দিয়ে নাটকে ব্যস্ত হয়ে পড়েন দিতি। অভিনয়ের পাশাপাশি শুরু করেন নাটক পরিচালনাও। সিনেমা প্রযোজনা না করলেও করেন নাটক প্রযোজনাও। তারকাবহুল নাটক নির্মাণেই তাকে বেশি আগ্রহী মনে হয়েছে। এ ছাড়া অনুষ্ঠান উপস্থাপনাও করেছেন। আর বিজ্ঞাপনচিত্রের মডেল দিতি হয়েছেন আশির দশকেরই। নানা সময় বিভিন্ন পণ্যের বিজ্ঞাপন করেছেন তিনি।
মাতৃমূর্তি
দিতির দুটি সন্তান। ১৯৮৭ সালে জন্ম নেয় মেয়ে লামিয়া চৌধুরী আর ১৯৮৯ সালে জন্ম নেয় ছেলে দীপ্ত। দুজনেই কানাডায় পড়াশোনা শেষ করেছেন।
বিদায়
লম্বা ক্যারিয়ারে একাধিকবার সিনেমা থেকে বিদায় নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন দিতি। কখনোই অভিমান ছেড়ে থাকতে পারেননি। বারবার ফিরে এসেছেন। ২০১৬ সালের ২০ মার্চ পৃথিবী থেকেই চিরবিদায় নেন দিতি। মৃত্যুর পর দিতিকে গ্রামের বাড়ি সোনারগাঁয়ে দাফন করা হয়।