×

জাতীয়

যে কারনে নৌকার ভরাডুবি মাধবপুরে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৩ মার্চ ২০১৯, ০২:৫৯ পিএম

পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রথম ধাপের নির্বাচনে হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছে আওয়ামীলীগ প্রার্থী পরাজিত হয়েছে। মাধবপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের দূর্গ বলে পরিচিত। এ উপজেলায় রয়েছে ৫ টি চা বাগান। চা বাগানে রয়েছে প্রায় ১৫ হাজার ভোটার । বাগানের ভোটারদের আওয়ামীলীগের ভোট ব্যাংক হিসাবে ধরা হয়। মাধবপুর- চুনারুঘাট আসন থেকে আওয়ামীলীগের মনোনয়ন নিয়ে যারা সংসদ সদস্য প্রার্থী হয়েছেন সবাই সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। সংসদ নির্বাচনে এ আসন থেকে বার বার আওয়ামীলীগ প্রার্থী জয় লাভ করলেও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা পরাজিত হন। চতুর্থ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রতিক না থাকলেও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাকির হোসেন চৌধুরী অসিম কে বিশাল ভোটে পরাজিত করে জেলা বিএনপির সহ সভাপতি সৈয়দ মোঃ শাহজাহান উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে নির্বাচন করেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আন্দিউড়া ইউনিয়নের ৩ বারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান আতিক। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে নির্বাচন করেন উপজেলা চেয়ারম্যান জেলা বিএনপির সহ সভাপতি সৈয়দ মোঃ শাহজাহান (ঘোড়া) ও এহতেশামুল বার চৌধুরী লিপু( আনারস)। এবারের নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ মোঃ শাহজাহান বিশাল ভোটে নৌকার প্রার্থী কে পরাজিত করে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। দ্বিতীয় স্থানে ছিল আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী এহতেশামুল বার চৌধুরী লিপু। নির্বাচনে ফলাফল ঘোষনার পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম অনেকে নৌকার পরাজয় নিয়ে নানা রকম পোষ্ট দিচ্ছেন। অনেকে দাবি করছেন নিজেদের মধ্যে আন্তরিকতার অভাবে নৌকার পরাজয় হয়েছে। উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি আব্দুর রাজ্জাকের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান,এটি স্থানীয় সরকার নির্বাচন। এখানে ব্যাক্তি ( মানে প্রার্থীর) উপর অনেক কিছু নির্ভর করে। তাছাড়া এলাকা ভিত্তিক একটি হিসাব থাকে। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, সংসদ নির্বাচনে সরকার পরিবর্তনের হিসাব থাকে। এই নির্বাচনে সরকার পরিবর্তন হয় না। তাই চা বাগানের লোকজন হয়ত অন্য প্রতিকেও ভোট দিয়েছে । তাছাড়া আওয়ামীলীগ নেতা কমীদের ক্রটি ছিল বলে মনে করি। নেতা কর্মীরা আন্তরিক হয়ে কাজ করলে ফলাফল ভাল হত। পৌর আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক আশরাফুল আলম টিটু জানান, আওয়ামীলীগের নেতারা নৌকায় বসে নৌকা ডুবিয়েছে। অনেক আওয়ামীলীগ নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে কাজ করেছে। উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক এখলাছুর রহমান জানান, নেতা কর্মীরা আন্তরিক ছিল না। আওয়ামীলীগের অনেক নেতার নিজস্ব কেন্দ্রে নৌকার পরাজয় হয়েছে। এটি মেনে নেওয়া যায় না। তবে প্রার্থীরও নির্বাচন পরিচালনার ক্ষেত্রে ক্রটি ছিল। চৌমুহনী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শ্রমিক লীগের সভাপতি আপন মিয়া জানান, আমাদের প্রতিপক্ষ যিনি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন তিনি শিল্পপতি মানুষ। মাধবপুরে উনাদের একটি অবস্থান আছে। উনারা বিভিন্ন সময় মানুষ কে সহযোগীতা করেন। তবে আওয়ামী লীগের মধ্যে ঐক্য ছিল না। যার ফলে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পরাজয় হয়েছে। উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ ফারুক পাঠান জানান, দলীয় নেতাকর্মীরা আন্তরিক ছিল না। আওয়ামী লীগের প্রবীন নেতারা ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করে নাই। তবে তিনি যুবলীগ সক্রিয় ছিল বলে জানিয়েছেন। উপজেলা কৃষকলীগের সাধারন সম্পাদক জামাল উদ্দিন জানান, আওয়ামী লীগের অনেক নেতা কর্মী সেলফি দিতে ও চেহারা দেখাতে নৌকার সভা ও মিছিলে আসেন। কিন্তু আন্তরিক ভাবে কাজ করে নাই। উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক হৃদয় পাঠান উজ্জল জানান, দলীয় অনেক নেতাকর্মী স্বতন্ত্র প্রার্থী এহতেশামুল বার চৌধুরী লিপুর প্রচার প্রচারনায় ও নির্বাচনী সভায় দেখা গেছে। আবার অনেকে প্রকাশ্যে নৌকার জন্য কাজ করেছে কিন্তু অন্তরালে নৌকার প্রার্থীকে পরাজিত করতে ছক করেছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App