দেড় বছর ধরে খোলা জায়গায় পাঠদান
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৩ মার্চ ২০১৯, ১২:৪৩ পিএম
বিদ্যালয় ভবন নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ায় দেড় বছর ধরে খোলা আকাশের নিচে পাঠদান করতে হচ্ছে গাইবান্ধা সদর উপজেলার কামারজানী ইউনিয়নের কলমু এফএনসি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দেড়শোরও বেশি শিক্ষার্থীদের। বৃষ্টি হলেই বন্ধ হয় তাদের পাঠদান। এ ছাড়া রাস্তা দিয়ে যানবাহন চলাচলের সময় ধুলোবালি উড়ে আসে চোখেমুখে পড়াসহ বিভিন্ন কারণে পড়ায় মনোযোগী হতে পারছেনা শিক্ষার্থীরা।
বিদ্যালয় সুত্রে জানা যায়, ১৯৪৫ সালে স্থাপিত এই বিদ্যালয়টি সরকারিকরণ করা হয় ১৯৭৩ সালে। প্রধান শিক্ষক ছুটিতে থাকায় ১৫৪ জন শিক্ষার্থীকে পাঠদান করাতে হয় দুজন শিক্ষককে। কামারজানী ইউনিয়নের গোঘাট গ্রামে স্থাপিত বিদ্যালয় ভবনটি ২০১৭ সালের জুলাই মাসে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। তারপর থেকে শিক্ষা কার্যক্রম চলছে ওই গ্রামেরই কামারজানী উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের মাঠে খোলা আকাশের নিচে। বেলা বাড়ার সাথে সাথে রোদের গরম থেকে রক্ষা পেতে শিক্ষার্থীদেরও বসার স্থান পরিবর্তন করতে হয়।
শিক্ষার্থীরা জানায়, একসাথে অনেকজন ছাত্রছাত্রী পাশাপাশি বসে পাঠদান করায় উচ্চ শব্দে পড়ার মনোযোগ নষ্ট হয়। মাটিতে ত্রিপল বিছিয়ে বসে পড়তে ও লিখতে সমস্যা হচ্ছে। রোদে গরম লাগছে। ফলে পড়ায় মনোযোগী হতে পারছে না শিক্ষার্থীরা। গোঘাট গ্রামের অভিভাবক নুর আলম মিয়া বলেন, খোলা আকাশের নিচে ক্লাশ করার কারণে শিক্ষার্থীদের নানান সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। তাই ছেলে-মেয়েরা বিদ্যালয়ে যেতে চাচ্ছেনা। এতে করে তারা পিছিয়ে পড়ছে।
স্থানীয় জনগণের দাবি, বিদ্যালয়টির একটি টিনশেড ঘর তৈরির জন্য এক বছর আগে তিন লাখ ৪২ হাজার টাকা সরকারি বরাদ্দ দেওয়া হলেও এখনও অর্ধেক কাজই সম্পন্ন হয়নি। যে কাজ করা হয়েছে তা কোনক্রমেই এক লাখ টাকার বেশি হবে না। বাকী কাজ সম্পন্ন করতে অবহেলা করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়টির সভাপতি সফিউল ইসলাম বলেন, যে টাকা ও টিন বরাদ্দ পাওয়া গেছে তা দিয়ে জমিতে বালু ভরাট করে একটি টিনশেড ঘর তোলা হয়েছে। দরজা-জানালা তৈরি করতে দেওয়া হয়েছে। আশা করছি মেঝে পাকা করে দুই সপ্তাহের মধ্যেই নতুন টিনশেড ঘরে কার্যক্রম চালু করতে পারবো। কলমু বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোস্তফা কামাল বলেন, খোলা আকাশের নিচে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করাতে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। এতে করে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিও কম থাকে।
এ ব্যাপারে সদর উপজেলা শিক্ষা অফিসার আব্দুস ছালাম বলেন, বিদ্যালয়টির ভবন নির্মাণের জন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হয়েছে।