×

খেলা

পক্ষপাতদুষ্ট আম্পায়ারিং

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১২ মার্চ ২০১৯, ০৪:৫৮ পিএম

পক্ষপাতদুষ্ট আম্পায়ারিং
দেশে ক্রিকেটের প্রাণকেন্দ্র হচ্ছে ঢাকা। এক সময় খুব জমজমাট ছিল ঢাকার ক্লাব ক্রিকেট। দিনবদলের সঙ্গে সঙ্গে ঢাকার ক্রিকেট লিগেও রং বদলেছে। ঢাকার ক্লাব ক্রিকেট এক সময় ছিল বাংলাদেশের ক্রিকেটের প্রাণ। কিন্তু সেই প্রাণ এখন যায় যায় অবস্থা। শক্তিসম্পন্ন দলগুলোর বিপক্ষে পায়ের যে কোনো জায়গায় বল লাগলেই, এমনকি অনেক সময় শরীরের ওপরের দিকে বল লাগলে ব্যাটসম্যানকে এলবিডবি্লউ দেয়া হচ্ছে। ব্যাটের ধারে কাছে না লাগলেও কটবিহাইন্ড। ক্রিজে পৌঁছে গিয়েও ব্যাটসম্যান হয়ে যাচ্ছে রানআউট। এসব নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে খেলোয়াড়দের মধ্যে। অনেক স্বপ্ন নিয়ে কিশোর-তরুণরা ক্রিকেটার হওয়ার আশায় ঢাকায় আসে। পক্ষপাতদুষ্ট আম্পায়ারিংয়ের কারণে তারা ফিরে যায় বুক ভাঙা বেদনা নিয়ে। মুষ্টিমেয় আম্পারের কারণে বাংলাদেশের ক্রিকেট এখন দুরবস্থা চলছে। এক সময়ে আম্পারের মান ছিল উঁচুমানের। সে সময় বের হয়ে এসেছে প্রজন্মের সেরা কিছু খেলোয়াড়। সাকিব, তামিম ও মুশফিকরা আজ বিশ্বের কাছে বড় ক্রিকেটারের নাম। কিন্তু ইদানীং বিতর্কিত আম্পায়ারিং কালো ছায়া গ্রাস করেছে ঢাকার ক্রিকেটে। লিগের অধিকাংশ ম্যাচই পাতানো হচ্ছে। কিছু বড় ক্লাবের দিকে সিদ্ধান্ত দিচ্ছে আম্পায়াররা। ক্লাবের বিভিন্ন কর্তারা মাঠের বাইরে বসেই খেলার ফল নির্ধারণ করছে টাকার বিনিময়। যে মাঠে হওয়ার কথা ছিল ক্রিকেটের লড়াই সেখানে হচ্ছে টাকার লড়াই। টাকায় কেনাবেচা হচ্ছে জয়, বিক্রি হচ্ছে আম্পায়ারদের বিবেক এবং অঙ্কুরে বিনষ্ট হচ্ছে ক্রিকেট প্রতিভা। বাংলাদেশের মানুষের গর্বের বিষয় ক্রিকেট। ভুল সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে অনেক খেলোয়াড়কে মাঠে দাঁড়িয়ে আম্পায়দের গালাগাল করতেও দেখা যায়। খেলোয়াড় উঠে আসার পথ, প্রথম বিভাগ, দ্বিতীয় বিভাগ বা তৃতীয় বিভাগ ক্রিকেট লিগে যে করুণ চিত্র ফুটে উঠেছে তার আলোকে বাংলাদেশ স্পোর্টস জার্নালিস্টস এসোসিয়েশন (বিএসজেএ) সম্প্রতি ঢাকার ক্রিকেটে পক্ষপাতদুষ্ট আম্পায়ারিং বাস্তবতা ও সমাধান শীর্ষক এক সেমিনারের আয়োজন করে। ঢাকার ক্রিকেট নিয়ে ক্লাবগুলোর অভিযোগ দীর্ঘদিনের। অনেকে আঙুল তুলেছেন আম্পায়ার্স কমিটি এবং ক্রিকেট বোর্ডের কয়েকজন পরিচালকের দিকে। ঢাকার ক্রিকেট ক্লাবগুলোতে পক্ষপাতদুষ্ট আম্পায়ারিংয়ের ব্যপারে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন, জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক, সাবেক বিসিবি পরিচালক এবং এক সময় সিসিডিএম চেয়ারম্যান গাজী আশরাফ হোসেন লিপু, এক সময় আম্পায়ার্স কমিটির সেক্রেটারি, কোচ এবং জনপ্রিয় ক্রিকেট লেখক জালাল আহমেদ চৌধুরী, কলাবাগানের ক্রিকেট সেক্রেটারি ও বিসিবির কাউন্সিলর রিয়াজ আহমেদ বাবু, ইয়াং পেগাসাস ক্লাবের যুগ্ম সম্পাদক সৈয়দ আলী আসাফ ও ক্রীড়া লেখক সাইদুজ্জামান। বিএসজেএর এই সেমিনারে আম্পায়ারদের কোনো প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন না। সেমিনারে উপস্থিত ইয়াং পেগাসাস ক্লাবের কর্মকর্তা সৈয়দ আলী আসাফ বলেছেন, ম্যাচের আগের দিন প্রতিপক্ষ নিয়ে গবেষণা করার কথা। তবে বর্তমানে ম্যাচের আগে খেলোয়াড়রা চিন্তা করে পরদিন আম্পায়ার কারা থাকবেন! বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সাবেক পরিচালক ও জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক গাজী আশরাফ হোসেন লিপু বলেছেন, আম্পায়ারদের ভুল আমাদের সময় ছিলÑ হিউম্যান এরর। তবে এখন সেটা হয়ে গেছে ইচ্ছাকৃত। আমাদের খেলার সময়ও এমন আম্পায়ারিং হয়েছে, কোন মাত্রায় হয়েছে, সেটা দেখার প্রয়োজন। আমার প্রশ্ন, কার এত বড় সাহস হয় যে আম্পায়ারকে দিকনির্দেশনা দেয়? সেই শক্তিটা কোথায়? আমাদের বোর্ড সভাপতি অনেক ভালো কাজ করেছেন। আমার বিশ্বাস তিনি এদিকেও নজর দেবেন। ঢাকার ক্রিকেট লিগের সব ধরনের ম্যাচে আকসুর উপস্থিতির প্রয়োজন। আম্পায়ারদের ওপর নজরদারি এবং ম্যাচে ক্যামেরা রাখার প্রয়োজনীয়তা আছে। সব অভিযোগ শুনে সিসিডিএম চেয়ারম্যান কাজী ইনাম আহমেদ বলেছেন, সিসিডিএম একটা জাদুঘর আর আমি সেখানে একমাত্র কিউরেটর। একজন কিউরেটরের পক্ষে বিশাল পরিবর্তন করা সম্ভব নয়। তবে আমরা চেষ্টা করছি, কোনো বিতর্ক ছাড়া প্রিমিয়ার লিগ টি-টোয়েন্টি শেষ করেছি। পাশাপাশি প্লেয়ার্স পেমেন্ট প্রদান নিশ্চিত করেছি, খেলোয়াড়দের পেমেন্টও বাড়িয়েছি। আসলে একটা নির্দিষ্ট ক্লাবের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App