×

জাতীয়

গাইবান্ধায় সাত প্রতারক গ্রেপ্তার

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১১ মার্চ ২০১৯, ০১:১৩ পিএম

গাইবান্ধায় সাত প্রতারক গ্রেপ্তার
সম্প্রতী দুদকসহ উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা হাসপাতাল ও সরকারি দপ্তরে আকস্মিক পরিদর্শনের মতো গাইবান্ধায় পরিবার পরিকল্পনা ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শক (অডিট ও ডিউটি) ইন্সপেক্টর ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার সেজে প্রতারণার অভিযোগে সাত ভূয়া কর্মকর্তা এবং এক সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল রবিবার দুপুরে সদর উপজেলার বাদিয়াখালী ইউনিয়নের চকবরুল কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছে থেকে কিছু ভূয়া নিয়োগের কাগজপত্র, পরিচয়পত্র, পরিদর্শন(অডিট) ফরম, সদর থানা পুলিশ, ডিবি পুলিশ ও সি-সার্কেলের ভুয়া কাগজপত্র জব্দ করা হয়। এ ব্যাপারে গাইবান্ধা থানায় মামলা দায়ের করা হলে রাতে সাংবাদিকদের ডেকে বিষয়টি জানায় পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন সদর উপজেলার বাদিয়াখালী ইউনিয়নের ছাট চকবরুল গ্রামের সুকুমার চন্দ্র শীলের ছেলে সঞ্জয় চন্দ্র শীল (২৬), বোয়ালী ইউনিয়নের পিয়ারাপুর গ্রামের রবিউল ইসলামের ছেলে আতিকুর রহমান (৩৫), রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের কিশামত গোপালপুর গ্রামের শফিকুল ইসলামের স্ত্রী কাকলি খাতুন (২৪), গাইবান্ধা পৌরসভার দক্ষিণ ধানঘড়া এলাকার চান মিয়ার ছেলে রায়হান সরকার (২৫), সাঘাটা উপজেলার ভরতখালী ইউনিয়নের গটিয়া গ্রামের আব্দুল মান্নান তালুকদারের ছেলে সারোয়ার হোসেন (২৫), পলাশবাড়ী উপজেলার হরিনাথপুর ইউনিয়নের তালুকজামিরা গ্রামের জহুরুল ইসলামের ছেলে রুবেল মিয়া (২১), পবনাপুর ইউনিয়নের ফকিরহাট গ্রামের লিমন মিয়ার স্ত্রী মুর্শিদা আক্তার রুমি (২৩) ও গাইবান্ধা পৌরসভার ব্রীজরোড কালিবাড়ী পাড়ার নারু গোপাল দাসের ছেলে সাংবাদিক তপন চন্দ্র দাস (৩৬)। তপন চন্দ্র দাস স্থানীয় ও জাতীয় অনলাইন নিউজ পোর্টালের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করছেন। এজাহার সুত্রে জানা যায়, কমিউনিটি ক্লিনিকটিতে সকাল থেকে কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) মমিনুল ইসলাম প্রতিদিনের মতো কাজ করছিলেন। এসময় সদর উপজেলার স্বাস্থ্য পরিদর্শক (ইনচার্জ) আব্দুল হান্নান ওই ক্লিনিকটি পরিদর্শনে যান। দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, পরিবার পরিকল্পনা অফিসার, পরিদর্শক (অডিট ও ডিউটি) ইন্সপেক্টর, পরিবার পরিকল্পনা ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় লেখা স্টিকার লাগানো একটি মাইক্রোবাসে চড়ে সঞ্জয় চন্দ্র শীল, আতিকুর রহমান, কাকলি খাতুন, রায়হান সরকার, সারোয়ার হোসেন, রুবেল মিয়া, মুর্শিদা আক্তার রুমি ও তপন চন্দ্র দাস ক্লিনিকের সামনে যান। এসময় তারা অফিসে প্রবেশ করে সাধারণ রোগী রেজিস্ট্রার, পরিদর্শন বই ও সার্ভিস বুক চেয়ে নেন। সঞ্জয় চন্দ্র শীল নিজেকে উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ও অডিট অফিসার বিভাগীয় প্রধান পরিচয় দিয়ে এগুলো দেখার পর বলেন রেজিস্ট্রার ঠিক নাই। চাকরি থাকবে না বলে হুমকি দিয়ে সবকিছু ঠিকঠাক করে দেওয়া ও ঘাটাঘাটি করবেন না মর্মে ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন মমিনুল ইসলামের কাছে। এসময় মমিনুল ইসলাম বিষয়টি আব্দুল হান্নানকে জানান। আব্দুল হান্নান এসে তাদের সাথে কথা বললে ওই আটজন ব্যক্তি এলোমেলো কথা বলেন। এসময় স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুর রউফ সুমন এসে হাজির হন। তার সাথে সঞ্জয় চন্দ্র শীল একজন ভূয়া সিভিল সার্জন পরিচয়দানকারী ব্যক্তির সাথে মোবাইলে কল দিয়ে যোগাযোগ করে দেন। ওই ভূয়া সিভিল সার্জন তাদেরকে আপ্যায়ন করার কথা বলেন। এসময় আব্দুর রউফ সুমন তাকে ওই ক্লিনিকে আসতে বললে তিনি মোবাইলের সংযোগ কেটে দেন। এসময় আব্দুল হান্নান বিষয়টি সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এবিএম আবু হানিফকে জানান। তিনি সদর থানায় যোগাযোগ করে ওই ক্লিনিকে পুলিশ পাঠান। এসময় আবু হানিফের সাথে সঞ্জয় চন্দ্র শীল কথা বলার সময় তাকেও দেখে নেবেন বলে হুমকি দেন। পরে পুলিশ গিয়ে তাদেরকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যায়। এ সময় তাদের কাছ থেকে ভূয়া কাগজপত্র ও পরিচয়পত্র জব্দ করা হয়। এর আগে সকাল সাড়ে ১১টার দিকে ওই আটজন ব্যক্তি বাদিয়াখালী উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে গিয়ে উপ সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার নজরুল ইসলামকে ভয়-ভীতি দেখান ও টাকা দাবী করেন বলেও এজাহারে উল্লেখ করেন মমিনুল ইসলাম। তারা সরকারি কর্মচারি পরিচয়ে ছদ্মবেশ ধারণ করেন ও দুই নারী এপ্রোন পরিহিত অবস্থায় মেডিকেল অফিসার(ডাক্তার) হিসেবে নিজেদের পরিচয় দেন। এ দুটি ঘটনা ছাড়াও গত সপ্তাহে সদর উপজেলার বোয়ালী ইউনিয়নের আরেকটি কমিউনিটি ক্লিনিকে গিয়েও একই ধরনের কর্মকাÐ চালিয়ে তারা ৫০ হাজার টাকা দাবি করেছেন বলে অভিযোগ আছে তাদের বিরুদ্ধে। এ ব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বি-সার্কেল) মইনুল হক বলেন, গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। প্রয়োজনে আদালতের মাধ্যমে রিমান্ডের আবেদন করা হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App