×

জাতীয়

মাল্টা চাষে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখেন কেশবপুরের সেলিম

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১০ মার্চ ২০১৯, ০২:৪০ পিএম

মাল্টা চাষে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখেন কেশবপুরের সেলিম
যশোরের কেশবপুর উপজেলার চুয়াডাঙ্গা গ্রামের কৃষক আব্দুস সেলিম মাল্টা, কমলা চাষে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। তিনি ২ বছর আগে ৬৫ শতক জমিতে বাণিজ্যিকভাবে মাল্টা ও কমলার চাষ করেছেন। বর্তমান গাছে গাছে অসংখ্য ফুল ফোটায় তার স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নিতে শুরু করেছে। এছাড়া নিজে মাল্টার চাষ করার পাশাাশি এ আবাদ উপজেলা ব্যাপী সম্প্রসারণেও তিনি ব্যাপকভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। উপজেলার চুয়াডাঙ্গার মৃত নওয়াব আলী সরদারের ছেলে আব্দুস সেলিম পেশায় একজন নার্সারী ব্যবসায়ী। তিনি ২০১১ সাল থেকে এ পেশার সাথে সম্পৃক্ত। নিজের জমিসহ অন্যের জমি বর্গা নিয়ে তার নার্সারীর ব্যবসা ছিল। তিনি নার্সারীতে বিভিন্ন ফলদ ও বনজ বৃক্ষের চারা উৎপাদন করে বিভিন্ন হাট, বাজারে বিক্রি করতেন। ২০১৬ সালে এ ব্যবসার সাথে জড়িত থাকার সুবাদে তার পরিচয় ঘটে মনিরামপুর উপজেলার মুজগুন্নি গ্রামের মাল্টা চাষী আব্দুল করিমের সাথে। তার ক্ষেতের গাছ থেকে একটি পাকা মাল্টা খেয়ে তিনি সিদ্ধান্ত নেন মাল্টার আবাদ করার। তারই অনুপ্রেরণাই ও চাষ পদ্ধতিতে ওই বছরই তার ক্ষেত থেকে প্রতিটি চারা ৭০ টাকা দরে তিনি ৭০ পিচ চারা ক্রয়সহ ক্ষেতে রোপণ করে পরিচর্যা করতে শুরু করেন। রোগ বালাই তেমন না থাকায় তিনি মাল্টা, কমলা চাষে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। কৃষক আব্দুস সেলিম জানান, পর পর তিন বছর নার্সারী ব্যবসায় লাভ না হওয়ায় তিনি ভিন্ন কিছু করার সিদ্ধান্ত নিয়ে মাল্টা চাষের পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। করিম ভাইয়ের দিকনির্দেশনায় তিনি মাল্টা চাষ করে সফল হয়েছেন। তার ক্ষেতের উৎাদিত চারার কোন রোগ বালাই নেই বললেই চলে। চারা রোপণের পর থেকে নিয়মিত পরিচর্যা করায় ২ বছরের মাথায় প্রতিটি গাছে অসংখ্য ফুল ফুটেছে। তার ক্ষেতের কমলা সুস্বাদু। গাছে যেভাবে ফুল ফুটেছে তাতে প্রতিটি গাছে ৬‘শ থেকে ৭‘শ পিচ মাল্টা ধরবে বলে তিনি আশাবাদি। প্রতি কেজী মাল্টা ১‘শ থেকে ১‘শ ৫০ টাকা কেজী দরে বিক্রি হবে বলে তিনি আশা করছেন। তার নার্সারীতে মাল্টা বারী -১, চায়না কমলা, মাল্টা, ভেরাকাটা মাল্টা, ঝুরি কমলা, নাগপুরি কমলা, ছাতকী কমলাসহ হরেক রকমের ৬ হাজারের অধিক চারা রয়েছে। তিনি আরও বলেন, তিনি শুধু মাল্টা চাষী নন, মাল্টার চাষ সম্প্রসারণেও তিনি ব্যাপভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। তার নার্সারীর উৎপদিত কমলা ও মাল্টার চারা দিয়ে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে ৮টি বাগান করেছেন। এরমধ্যে উপজেলার সন্ন্যাসগাছা গ্রামের আবু হুরাইরা, একই গ্রামের মিজানুর রহমান, আব্দুল আজিজ, ভেরচি গ্রামের আরাধন কুন্ডু ও সাতাইশকাটি গ্রমের আক্তার হোসেন মিঠুর কমলা ও মাল্টা বাগান উল্লেখযোগ্য। তার ক্ষেতের উৎাদিত চারা উপজেলা ব্যাপী কৃষকদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে তিনি কাজ করছেন। এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মহাদেব চন্দ্র সানা বলেন, এ দেশের আবহাওয়ায় বারী -১ জাতের মাল্টা খুবই উপযোগী। খেতেও খুব সুস্বাদু। এ জাতের কমলা ও মাল্টা আবাদে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। ভালো ফলন পেতে হলে প্রথমে মাদা করে তার মধ্যে কোঁচো সার, ফসফেট, এমওপি সার প্রয়োগ করার পর চারা রোপণ করতে হবে। শুধু ওই কৃষক নয় শিকারপুর, ভান্ডারখোলা গ্রামেও কৃষকদের বড় বড় বাগান রয়েছে। যদি কোন কৃষক ১ বিঘা জমিতে মাল্টার আবাদ করে তবে সমস্ত খরচ বাদ দিয়ে তার ১ লাখ টাকা লাভ হবে। দিন দিন কৃষকরা এ আবাদে ঝুকছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App