×

অর্থনীতি

ব্যবসায়ীদের যোগসাজশে ঊর্ধ্বমুখী পণ্য বাজার : বাণিজ্যমন্ত্রী

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১০ মার্চ ২০১৯, ০৪:৫৯ পিএম

ব্যবসায়ীদের যোগসাজশে ঊর্ধ্বমুখী পণ্য বাজার : বাণিজ্যমন্ত্রী

রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে গতকাল বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন আয়োজিত ‘টেকসই অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের ভূমিকা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্যে রাখেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি

ব্যবসায়ীদের যোগসাজশে পণ্য বাজার ঊর্ধ্বমুখী হয় বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। ভোক্তার অধিকার রক্ষায় কোনো খাতের ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট করতে দেয়া হবে না বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। একই সঙ্গে সব ধরনের ব্যবসায় প্রতিযোগিতা বাড়ানোর তাগিদ দেন মন্ত্রী। রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে গতকাল শনিবার বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন আয়োজিত ‘টেকসই অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের ভ‚মিকা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি চালের দাম বৃদ্ধির উদাহরণ দিয়ে বলেন, দেশে মাত্র চার-পাঁচজন বড় ব্যয়সায়ী চালের বাজার নিয়ন্ত্রণ করছেন। এ জন্য হঠাৎ হঠাৎ চালের দাম বেড়ে যায়। চালসহ সব ধরনের ব্যয়সায় প্রতিযোগিতা আরো বাড়াতে হবে। কমিশনের চেয়ারপারসন মো. ইকবাল খান চৌধুরীর সভাপতিত্বে সেমিনারে আরো বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান, বাণিজ্য সচিব মো. মফিজুল ইসলাম, এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মো. শফিউল ইসলাম (মহিউদ্দীন) প্রমুখ। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা যখন নতুন সরকার গঠন করলাম তার কয়েক দিনের মধ্যেই হঠাৎ চালের বাজার বেড়ে গেল। তখন আমি খাদ্যমন্ত্রীসহ চাল ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করলাম। তারপর আমরা জানতে পারলাম দেশে মাত্র চার-পাঁচজন বড় ব্যবসায়ী চালের বাজার নিয়ন্ত্রণ করেন। ফলে তাদের মধ্য একটা যোগসাজশ তৈরি হয়। ব্যবসায়ীদের মধ্যে এ ধরনের যোগসাজশ থাকলেই সাধারণ জনগণ ক্ষতির মুখে পড়ে। তাই কোনো খাতের ব্যবসায়ীরা যেন যোগসাজশ করতে না পারে সে জন্য প্রতিযোগিতা কমিশনকে দায়িত্বশীল ভ‚মিকা পালন করতে হবে। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ব্যবসায়িক খাতে প্রতিযোগিতা সৃষ্টি না হলে সাধারণ জনগণ উপকার পাবে না। প্রতিযোগিতা না থাকলে ব্যবসায়ীরা যোগসাজশে পণ্যের মূল্য ইচ্ছামতো বাড়িয়ে দিতে পারে। আর প্রতিযোগিতা থাকলে ১০ টাকার পণ্য ৭ টাকায় পেতে পারে জনগণ। এ জন্য আইন ছাড়াও জনগণের জন্য নিবেদিতপ্রাণ হয়ে প্রতিযোগিতা কমিশনকে কাজ করার আহবান জানান তিনি। টিপু মুনশি বলেন, কোথাও কোথাও এমনভাবে টেন্ডার করা হয় যেখানে অনেকেই অংশগ্রহণই করতে পারে না, বা অংশগ্রহণ করতে দেয়া হয় না। এভাবে চলতে পারে না। দেশের টেকসই উন্নয়নে সবক্ষেত্রেই প্রতিযোগিতা সৃষ্টি করতে হবে। প্রতিযোগিতার সুফল তুলে ধরে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা যখন প্রথম মোবাইল ফোন কিনলাম তখন দেশে একটি মাত্র মোবাইল কোম্পানি ছিল। সে জন্য সিটিসেলের একটি ফোনের দাম ছিল ৯০ হাজার টাকা। এখন মোবাইল ফোনের দাম অনেক কমে গেছে। অনেকগুলো কোম্পানির মধ্যে প্রতিযোগিতার জন্য এটা সম্ভব হয়েছে। তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে গত বছরে দারিদ্র্যের হার ৪০ শতাংশ থেকে কমে ২৪ শতাংশ নেমে এসেছে। অতি দারিদ্র্যের হার ১২ শতাংশে নেমে এসেছে। দেশে মনোপলি ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করা গেলে এ সূচকগুলো আরো ভালো অবস্থায় আসবে। প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে ২০১২ সালে প্রতিযোগিতা আইন প্রণয়ন করা হয়। ব্যবসা-বাণিজ্যে সুস্থ প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক ষড়যন্ত্রমূলক যোগসাজশ নিয়ন্ত্রণ, কর্তৃত্বময় অবস্থানের অপব্যবহার রোধ, জোটবদ্ধতা যা দেশের মধ্যে প্রতিযোগিতামূলক কর্মকাণ্ডকে নিয়ন্ত্রণ বা প্রতিরোধ করে এ সব কর্মকাণ্ডকে নির্মূল করার জন্য প্রতিযোগিতা আইন তৈরি করা হয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App