×

মুক্তচিন্তা

মান ও রক্ষণাবেক্ষণ প্রক্রিয়া খতিয়ে দেখুন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৮ মার্চ ২০১৯, ০৮:৩৩ পিএম

আবারো লিফট দুর্ঘটনার খবর আমাদের পড়তে হলো। রাজধানীর পুরান ঢাকার জেলা জজ আদালতের পুরনো ভবনের একটি লিফট ছিঁড়ে পড়ে আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীসহ ১২ জন গুরুতর আহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার পুরনো ভবনের পাঁচতলা থেকে লিফটি ছিঁড়ে নিচে পড়ে এ ঘটনা ঘটে। লিফট ছিঁড়ে হতাহতের ঘটনা এখন প্রায়ই হচ্ছে।

অভিযোগ রয়েছে, আদালত ভবনের লিফটি ৩৯ বছরের পুরনো। ইতোপূর্বে বিভিন্ন সময়ে এটি সংস্কারে তাগাদা দেয়া হলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কর্ণপাত করেনি। রাজধানীতে ঝুঁকিপূর্ণ লিফটগুলো তদারকি সংস্থাগুলোর ভূমিকা নিয়ে বারবার প্রশ্ন উঠছে। তদন্ত করে অভিযুক্তদের শাস্তি হওয়াও দরকার।

জানা গেছে, ২৩ হাজার আইনজীবীর এই আদালতে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে হাজার হাজার বিচারপ্রার্থী প্রতিদিন আসেন। অথচ এখানে এত বছরের পুরনো লিফট থাকার বিষয়টি মেনে নেয়া যায় না। লিফটের জীর্ণদশা নিয়ে কর্তৃপক্ষকে অনেকবার বলা হলেও তারা কোনো পদক্ষেপ নেয়নি বলে আইনজীবীদের অভিযোগ রয়েছে। শুধু এই লিফটিই নয়, অধিকাংশ লিফট এমন জরাজীর্ণ। দেশের ব্যস্ততম একটি আদালতের এমন করুণ অবস্থা মেনে নেয়া যায় না। এসব সমস্যা সমাধানে বারবার আশ্বাস দিলেও কার্যত কোনো কাজ হয়নি। লিফট দুর্ঘটনা বাংলাদেশে নতুন কোনো ঘটনা নয়।

গত বছর রাজধানীর চামেলীবাগে লিফটে দুই দরজার চাপে একটি শিশু মৃত্যুর ঘটনাটি ভয়াবহ ও অনভিপ্রেত। ২০১৬ সালে টেলিভিশনের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে গিয়ে সরকারের দুই মন্ত্রী লিফটে আটকা পড়েছিলেন। একই বছর রাজধানীর উত্তরায় একটি মার্কেটের লিফট ছিঁড়ে সৃষ্ট ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে সাতজনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছিল। এর পরেও আমাদের টনক নড়েনি। লিফট বর্তমানে নগর জীবনের এক অনিবার্য বস্তু। লিফট ছাড়া বহুতল ভবন কল্পনা করা যায় না। সেটা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানই হোক আর অফিস, কাচারি বা আবাসিক স্থাপনাই হোক, লিফট লাগবেই।

প্রতিদিনই বহুবার আমাদের লিফটে চড়তে হবে। প্রতিদিনের চড়া এই লিফটই একদিন হয়ে উঠতে পারে মৃত্যুফাঁদ। জেলা জজ আদালতের লিফট ছেঁড়ার কারণ অনুসন্ধানে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সঠিক তদন্তে প্রকৃত ঘটনা উদঘাটন জরুরি।

এ ঘটনা সবার জন্যই একটা সতর্কবাণী হিসেবে বিবেচনা করা দরকার। যেসব ভবনে লিফট আছে, সেসব ভবন দেখভালে যারা আছেন তারা যেন নিয়মিত তাদের ভবনের লিফটের যান্ত্রিক সচলতা পরীক্ষা করিয়ে রাখেন। কোনো রকম ত্রুটি দেখা দিলে অবহেলা না করে দ্রুত সারানোর ব্যবস্থা করেন। এ ধরনের প্রাণঘাতী ঘটনা যাতে আর না ঘটে সে জন্য বহুতল ভবন মালিক-কর্তৃপক্ষের সচেতনতা-সাবধানতা প্রত্যাশা করছি। কেবল রাজধানী নয়, বিভাগীয় ও বড় বড় জেলা শহরগুলোতেও সম্প্রসারিত হয়েছে এই প্রযুক্তি। ফলে সংখ্যাটি নিঃসন্দেহে বিশাল।

আমরা মনে করি, দেশের বিভিন্ন ভবনে স্থাপিত লিফটের মান ও রক্ষণাবেক্ষণ প্রক্রিয়া, মেয়াদ খতিয়ে দেখার সময় এসেছে এখন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App