×

মুক্তচিন্তা

প্রাণঘাতী এই বিপদ ঠেকাতে হবে

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৬ মার্চ ২০১৯, ০৯:১১ পিএম

রাজধানী ঢাকায় বায়ু দূষণের মাত্রা মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। শিল্পবর্জ্যের কারণেও রাজধানীসহ অন্যান্য শহরে বায়ু দূষণ বাড়ছে ক্রমাগত। শিল্পাঞ্চলের আশপাশে বসবাসকারী জনগোষ্ঠী মারাত্মক সব রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। আন্তর্জাতিক পরিবেশবাদী সংগঠন গ্রিনপিস ও এয়ার ভিজ্যুয়াল

গবেষণা করে গত সোমবার ২০১৮ সালের দূষণের সূচক প্রকাশ করেছে। জরিপ বলছে, বিশ্বের তিন হাজার ৯৫টি শহরের মধ্যে সবচেয়ে দূষিত ৩০টি শহরের ২২টি ভারতের, পাকিস্তানের দুটি, চীনের পাঁচটি ও বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা শহর রয়েছে। দূষণে শীর্ষ ৩০-এ ঢাকার অবস্থান ১৭তম। এ অবস্থায় গবেষণা সংস্থার পর্যবেক্ষণটিকে অবশ্যই আমলে নিতে হবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে। দূষণের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সরকারকে এখনই সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া উচিত।

জরিপটি আরো বলছে, চলতি বছরে বায়ু দূষণের প্রভাবে বিশ্বের প্রায় ৭০ লাখ মানুষের অকাল মৃত্যু ঘটতে পারে। সেইসঙ্গে বায়ু দূষণ অর্থনীতিতে বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে। বায়ু দূষণ আমাদের জীবিকা এবং ভবিষ্যৎ ধ্বংস করে দিচ্ছে। মানুষের জীবন হারানো ছাড়াও বায়ু দূষণের কারণে বিশ্বব্যাপী চিকিৎসা খরচ পড়ছে প্রায় ২২৫ বিলিয়ন ডলার। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বায়ুম-লীয় অবস্থার পরিবর্তন ঘটছে এবং এর পরিবর্তনের কারণে বায়ু দূষণের প্রভাব আরো খারাপ হচ্ছে।

এ ছাড়া কলকারখানাসহ বিভিন্ন জায়গার জ্বালানি থেকে বায়ু দূষণের সৃষ্টি হচ্ছে। বিশেষ করে অপরিকল্পিত নগরায়নকে বায়ু দূষণের জন্য সবচেয়ে দায়ী হিসেবে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

গত ৪০ বছরে ঢাকা শহরে সুউচ্চ ভবন ও অপরিকল্পিত নগরায়নের ফলে ৭৫ শতাংশ চাষযোগ্য জমি হারিয়ে গেছে। এ ছাড়া নন-কমপ্লায়েন্স শিল্প ও অপর্যাপ্ত বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ফলে শহরের বাতাস এবং ভূপৃষ্ঠের পানি দূষিত হচ্ছে। বাংলাদেশে পরিবেশের মারাত্মক সমস্যাগুলোর অন্যতম বায়ু দূষণ। শহরে বায়ু দূষণের প্রধান দুটি উপাদান হলো শিল্পকারখানা ও যানবাহন। বায়ু দূষণের উপাদানগুলো মূলত ধূলিকণা, সালফার ডাই অক্সাইড, নাইট্রোজেন অক্সাইড, হাইড্রোকার্বন, কার্বন মনোক্সাইড, সিসা ও অ্যামোনিয়া।

অপরিকল্পিতভাবে শিল্পকারখানা স্থাপনে ঢাকাসহ বড় শহরগুলোতে বায়ু দূষণ ক্রমাগত বাড়ছে। ক্ষতিকর উপাদানগুলোর ব্যাপক হারে নিঃসরণ ঘটছে। যাদের বেশিরভাগই দরিদ্র জনগোষ্ঠী তারা সিসা দূষণের ঝুঁকিতে রয়েছে। এ কারণে বিশেষ করে শিশুদের বুদ্ধিমত্তা বিকাশে (আইকিউ) ও স্নায়ুবিক ক্ষতি হতে পারে এবং গর্ভবতী মহিলাদের গর্ভপাত ও মৃত শিশু প্রসবের ঝুঁকি বৃদ্ধি পেতে পারে। পরিবেশ দূষণ ও পরিবেশ সংরক্ষণ বর্তমান সময়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু।

এ ব্যাপারটি সম্পর্কে আমাদের সচেতনতা আছে। কিন্তু নেই সুনির্দিষ্ট উদ্যোগ এবং অভিজ্ঞতা যা কাজে লাগিয়ে বাস্তবায়ন করা যায় বসবাসযোগ্য পরিবেশ। জাতীয়ভাবে পরিবেশ রক্ষার জন্য এবং পানি সুরক্ষার জন্য আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসা উচিত, সচেতন হওয়া উচিত।

সর্বোপরি, পরিবেশ দূষণ প্রতিরোধে পরিবেশ সংরক্ষণ আইনের যথাযথ প্রয়োগ ও বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে পরিবেশ অধিদপ্তরকে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App