×

মুক্তচিন্তা

দুদকের সুপারিশগুলো গুরুত্ব দিন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৪ মার্চ ২০১৯, ০৯:৪৫ পিএম

দুর্নীতি আর অপচয়ের অন্ত নেই বিমান খাতে। যন্ত্রপাতি ক্রয় থেকে শুরু করে রক্ষণাবেক্ষণ, যাত্রীসেবাসহ সার্বিক কর্মকাণ্ডের প্রতিটি ধাপে অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা বিষয় বারবার খবরের শিরোনাম হলেও টনক নড়ছে না কর্তৃপক্ষের। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে আটটি এবং বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) ১১টিসহ মোট ১৯টি ক্ষেত্রে অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

দুদক গত রবিবার বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলীর কাছে এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। দুদকের একাধিক টিম অনুসন্ধান করে এসব দুর্নীতির উৎস চিহ্নিত করেছে।

প্রতিবেদনে দুর্নীতি প্রতিরোধে যথাযথ সুপারিশ করা হয়েছে। বিমানকে লাভজনক খাত হিসেবে দাঁড় করাতে দুদকের সুপারিশগুলো গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনায় নেয়া যেতে পারে। দুদকের অনুসন্ধানে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে দুর্নীতির আটটি খাতে রয়েছে- বিমান ক্রয় ও লিজ, রক্ষণাবেক্ষণ, গ্রাউন্ড সার্ভিস, কার্গো আমদানি-রপ্তানি, যাত্রী, অতিরিক্ত ব্যাগেজের চার্জ আত্মসাৎ, টিকেট বিক্রি ও ফুড ক্যাটারিং।

অনুসন্ধানে বেবিচকের কার্যক্রম পরিচালনায় ১১টি ক্ষেত্রে দুর্নীতি চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কেনাকাটা, নির্মাণ ও উন্নয়নমূলক কাজ, সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা, মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ, ফ্লাইট ফ্রিকোয়েন্সি ও শিডিউল অনুমোদন এবং অপারেশনাল কাজে দুর্নীতি। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীর দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ বেশ পুরনো হলেও এসব নির্মূলে কাক্সিক্ষত অগ্রগতি না হওয়ার বিষয়টি দুঃখজনক।

এ সংস্থার দুর্নীতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। দুর্নীতি নির্মূলে এখনই পদক্ষেপে যেতে হবে। বিমানের দুর্নীতি বন্ধে দুদক ৮ সুপারিশ করেছে। দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞের সমন্বয়ে কমিটি গঠন করে যে কোনো ব্যয়বহুল ক্রয়ের যথার্থতা ও প্রাক্কলনসহ দরপত্র যাচাই-বাছাই করা, বিমান লিজের ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ মতামতের ভিত্তিতে চুক্তির শর্ত নির্ধারণ, বিমানের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ ও সরঞ্জাম ক্রয়ের তালিকা তৈরি এবং কখন কী দামে কোন প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে কেনা হয়েছে, কত টাকা পরিশোধ করা হয়েছে সেসবের রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা করা- এসব সুপারিশগুলো খুবই প্রাসঙ্গিক।

আমরা মনে করি, এ সংস্থার বিভিন্ন পর্যায়ের দুর্নীতিবাজদের সমূলে উৎপাটনে কর্তৃপক্ষকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। বিমানের প্রতিটি বিভাগে শুদ্ধি অভিযান না চালালে সংস্থাটিকে দুর্নীতিমুক্ত রাখা যে কঠিন হবে, তা বলাই বাহুল্য। দুর্নীতির কারণেই লোকসান থেকে বেরিয়ে আসতে বছরের পর বছর ব্যর্থ হচ্ছে সংস্থাটি। স্বজনপ্রীতি ও রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ থেকে সংস্থাটিকে মুক্ত করতে হবে। অভিযুক্তদের আইনের আওতায় এনে উপযুক্ত শাস্তির মুখোমুখি করতে হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App