×

জাতীয়

কাদেরকে দেখে গেলেন বিএনপির ৩নেতা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৩ মার্চ ২০১৯, ১০:৫৬ পিএম

কাদেরকে দেখে গেলেন বিএনপির ৩নেতা

রোববার রাত সাড়ে ৯টার দিকে তারা বিএসএমএমইউ পৌঁছান

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় চিকিৎসাধীন আওয়ামী লীগের সাধারণ ওবায়দুল কাদেরকে দেখে গেলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ ও ড. মঈন খানও এসময় তার সঙ্গে ছিলেন।

আজ রোববার রাত সাড়ে ৯টার দিকে তারা বিএসএমএমইউ পৌঁছান। রাত পৌনে ১০টার দিকে তাদের নিয়ে যাওয়া হয় বিএসএমএমইউ হৃদরোগ বিভাগের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ)। রাত সোয়া ১০টার দিকে বিএনপি নেতারা বিএসএমএমইউ ত্যাগ করেন। এ সময় তারা গণমাধ্যমের কাছে কোনো মন্তব্য করেননি। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বলার কিছুই নেই।’

দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদও সাংবাদিকদের একই কথা বলেন।

রোববার ফজরের নামাজের পর হঠাৎ শ্বাসপ্রশ্বাসে সমস্যা হলে ওবায়দুল কাদেরকে দ্রুত বিএসএমএমইউতে ভর্তি করা হয়। প্রথমে আইসিইউতে ও পরে তাকে সিসিইউতে রাখা হয়েছে। এর আগে তাকে দেখতে যান রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা, স্পিকার শিরিন শারমীন চৌধুরী, মন্ত্রিসভার সদস্যসহ অনেক নেতাকর্মী।

এদিকে ওবায়দুল কাদেরের চিকিৎসা আপাতত দেশেই হচ্ছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম।

রোববার রাত সোয়া ৯টায় বিএসএমইউ হাসপাতালের ডি ব্লকের সামনে সাংবাদিকদের শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, ‘চিকিৎসকদের পরামর্শে ওবায়দুল কাদেরকে আজ রাতে সিঙ্গাপুর নিচ্ছি না। তার শারীরিক অবস্থা আগের চেয়ে ইমপ্রুভ (উন্নত) হয়েছে। সে চোখ মেলছে। নড়াচড়া করছে। ’ তিনি বলেন, ‘চিকিৎসকরা বলেছেন, তাকে সিঙ্গাপুর নিতে হলে চার ঘণ্টা ফ্লাই করতে হবে। এয়ার এম্বুলেন্সে আইসিইউর পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা নেই। তাই আমরা কালকে সকাল ১০টা পর্যন্ত তাকে এখানে রেখে তার শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করবো।’

শেখ সেলিম বলেন, ‘আমরা এয়ার অ্যাম্বুলেন্স সকাল ১০টা পর্যন্ত এখানে রেখে দেব। তারপর প্রয়োজন হলে তাকে সিঙ্গাপুর পাঠানো হবে।’

একই কথা জানান আওয়ামী লীগের উপ-দফতর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া।

প্রসঙ্গত, ৬৭ বছর বয়সী ওবায়দুল কাদের ২০১৬ সালের ২৩ অক্টোবরে আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। তার আগে ছয় বছর তিনি দলের সভাপতি মণ্ডলীতে দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর আড়াই বছর কারাগারে ছিলেন কাদের। সেখান থেকেই তিনি ছাত্রলীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। পর পর দুই মেয়াদে তিনি ওই দায়িত্বে ছিলেন।

মুক্তিযুদ্ধ চলাকোলে কোম্পানীগঞ্জ থানা মুজিব বাহিনীর (বিএলএফ) অধিনায়ক কাদের প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে। মোট চারবার তিনি নোয়াখালী-৫ আসনের ভোটারদের প্রতিনিধি হিসেবে সংসদে এসেছেন। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে জিতে আওয়ামী লীগ দীর্ঘদিন পর সরকার গঠন করলে ওবায়দুল কাদেরকে যুব, ক্রীড়া ও সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেন।

পরের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ হেরে গেলে ২০০২ সালের সম্মেলনে দলের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পান ওবায়দুল কাদের। ২০০৭ সালে সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ন সরকারের সময়ে জরুরি অবস্থার মধ্যে দেশের বহু রাজনীতিবিদের মত ওবায়দুল কাদেরও গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে যান। প্রায় ১৮ মাস কারাগারে কাটানোর পর ২০০৮ সালে নবম সংসদ নির্বাচনের দুই মাস আগে তিনি জামিনে মুক্তি পান।

ওই নির্বাচনে জয়ী হয়ে আবার ক্ষমতায় ফেরে আওয়ামী লীগ। প্রথমে তাকে তথ্য মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়। সরকারের মেয়াদের মাঝামাঝি সময়ে তাকে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী করেন প্রধানমন্ত্রী।

তখন থেকেই ওই মন্ত্রণালয়ের দেখভাল করছেন ওবায়দুল কাদের। বর্তমানে এ মন্ত্রণালয়ের নাম সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App